অনলাইন ডেস্ক
তাফসিরে ইবনে কাসিরে এই আয়াতের ব্যাখায় বলা হয়, মহান আল্লাহই হাসি-কান্না সৃষ্টি করেছেন। সৃষ্টি করেছেন, হাসি-কান্নার ভিন্ন ভিন্ন কারণ।
তাফসিরে তবরির মতে, এখানে উদ্দেশ্য হলো, মহান আল্লাহ জান্নাতবাসীদের জান্নাত প্রদানের মাধ্যমে হাসাবেন এবং জাহান্নামবাসীদের জাহান্নামে নিক্ষেপের মাধ্যমে কাঁদাবেন। দুনিয়াতেও তিনি যাকে ইচ্ছা হাসাবেন, যাকে ইচ্ছা কাঁদাবেন।
হাসি হচ্ছে একপ্রকার মুখমণ্ডলীয় বহিঃপ্রকাশ, যা সচরাচরভাবে মুখের নমনীয় পেশিকে দুই পাশে প্রসারিত করার মাধ্যমে অর্জিত হয়। মুখমণ্ডল ছাড়াও চোখের মধ্যেও হাসির বহিঃপ্রকাশ ফুটে উঠতে পারে। মানুষের হাসি আনন্দ, সুখ বা মজা পাওয়ার উপলক্ষ হিসেবে হাসির চল আছে।
হাসির বিভিন্ন স্তর আছে। যেমন—মুচকি হাসি (যাতে মানুষের মুখমণ্ডলে আনন্দের ছাপ ভেসে উঠলেও দাঁত দেখা যায় না)। আরবিতে এই হাসিকে বলা ‘তাবাসসুম’। এটিকে হাসির প্রথম স্তরও বলা হয়। দ্বিতীয় স্তর হলো, এমন হাসি, যাতে মানুষের মুখমণ্ডলে আনন্দের ছাপ প্রকাশের পাশাপাশি দাঁতও দেখা যেতে পারে। তবে কোনো আওয়াজ হয় না। আরবিতে এই হাসিকে বলা হয় ‘দিহক’। তৃতীয় স্তর হলো, উচ্চ স্বরে আওয়াজ করে হাসা। আরবিতে এই হাসিকে বলা হয়, ‘কহকহা’। ইসলাম ধর্মে এভাবে হাসা নিষেধ।
নবী-রাসুলরা বেশির ভাগ সময় মুচকি হাসতেন। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘তার কথা শুনে সুলায়মান মুচকি হাসলেন এবং বললেন, হে আমার পালনকর্তা, তুমি আমাকে সামর্থ্য দাও, যাতে আমি তোমার সেই নিয়ামতের কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে পারি, যা তুমি আমাকে ও আমার পিতা-মাতাকে দান করেছ এবং যাতে আমি তোমার পছন্দনীয় সত্কর্ম করতে পারি এবং আমাকে নিজ অনুগ্রহে তোমার সত্কর্মপরায়ণ বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত করো। (সুরা নামল, আয়াত : ১৯)
ওই আয়াত দ্বারা বোঝা যায়, সোলায়মান (আ.) মুচকি হাসতেন।
আমাদের প্রাণপ্রিয় নবী মুহাম্মদ (সা.) বেশির ভাগ সময় মুচকি হাসতেন। আব্দুল্লাহ ইবনে হারেস ইবনে জাজারি (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুল (সা.) শুধু মুচকি হাসিই দিতেন। (তিরমিজি, হাদিস : ৩৬৪২) অর্থাৎ রাসুল (সা.) বেশির ভাগ সময় মুচকি হাসতেন। তিনি সাহাবায়ে কেরামের সঙ্গে হাস্যোজ্জ্বল চেহারায় কথা বলতেন।
জারির (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি যখন ইসলাম গ্রহণ করেছি তখন থেকে আল্লাহর রাসুল (সা.) আমাকে তাঁর নিকট প্রবেশ করতে বাধা দেননি এবং যখনই তিনি আমার চেহারার দিকে তাকাতেন তখন তিনি মুচকি হাসতেন। (বুখারি, হাদিস : ৩০৩৫)
মুচকি হাসা রাসুল (সা.)-এর সুন্নত। কখনো এই হাসিতে (আওয়াজ ছাড়া) দাঁত প্রকাশ পেলেও কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু অট্টহাসি কোনো মুসলমানের মুখে শোভা পায় না। কোনো ব্যক্তি নামাজ অবস্থায় অট্টহাসি দিলে তার অজুও নষ্ট হয়ে যায়।
শুধু ইসলামে নয়, চিকিৎসা বিজ্ঞানেও অট্টহাসি বর্জন করার তাগিদ দেওয়া হয়। ‘অট্টহাসি’ হচ্ছে হাসির চূড়ান্ত মাত্রা, যা মানুষের বিপদ ডেকে আনতে পারে। হুট করে অতিরিক্ত হাসির কারণে মানুষের হৃদযন্ত্র বিকল হতে পারে। মস্তিষ্কের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে ভিজিট করতে পারেন, https://www.healthline.com/health/can-you-die-from-laughing
আবার সারাক্ষণ মুখ গুমড়া করে থাকাও উচিত নয়। বিশেষ করে অপর মুসলমানের সঙ্গে দেখা-সাক্ষাতের ক্ষেত্রে। যেহেতু রাসুল (সা.) সাহাবায়ে কেরামের সঙ্গে এমনটি করেননি।
fblsk
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা