অনলাইন ডেস্ক
সাইফুজ্জামান চৌধুরী, যিনি ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনা সরকারের ভূমিমন্ত্রী ছিলেন। সরকারি হিসেবে তার বেতন ছিলো বছরে ১৫ লাখ টাকা। অথচ সাবেক এই মন্ত্রীর বিদেশে সম্পদের পরিমাণ কয়েক হাজার কোটি টাকা।
সম্প্রতি ‘দ্য মিনিস্টার্স মিলিয়নস’ শিরোনামে একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রচার করে কাতারভিত্তিক আল-জাজিরা টেলিভিশন। প্রতিবেদনটির জন্য অনুসন্ধান শুরু করা হয়েছিলো শেখ হাসিনা সরকারের পতনের আগে থেকে। অনুসন্ধানে নেমে চমকে ওঠার মতো সম্পদের সন্ধান পায় আল-জাজিরার সাংবাদিকরা।
আল-জাজিরার প্রতিবেদনে জানা যায়, শুধুমাত্র যুক্তরাজ্যেই ৩৬০টি বাড়ির মালিক সাইফুজ্জামান চৌধুরী। বাড়িগুলোর বেশির ভাগই বার্কলি গ্রুপের মতো শীর্ষস্থানীয় নির্মাতা প্রতিষ্ঠান থেকে কেনা। এর বাইরে যুক্তরাষ্ট্রে নয়টি বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্ট রয়েছে তার। এছাড়া দুবাই, সিংগাপুর ও মালয়েশিয়ায় তার বিপুল পরিমাণ সম্পদের তথ্য পাওয়া গেছে। সবমিলিয়ে তিনি বিদেশে পাঁচশরও বেশি বাড়ি কিনেছেন। যেগুলোর মূল্য প্রায় ৭০ কোটি ডলার। বাংলাদেশি টাকায় এই অর্থের পরিমাণ দাঁড়ায় ৮ হাজার কোটি টাকার বেশি। অথচ নির্বাচনী হলফনামা ও ট্যাক্স ফাইলে এসব সম্পদের কোন তথ্য দেননি সাইফুজ্জামান চৌধুরী।
লন্ডনে সাইফুজ্জামান চৌধুরীর হয়ে সব সম্পদ দেখাশোনা করেন চট্টগ্রামের রিপন মাহমুদ। তিনি জানান, সাইফুজ্জামান প্রতি বছর ১০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করেন। সিঙ্গাপুরের ব্যাংক ডিবিএস থেকেও ঋণ নিয়েছেন তিনি। ওই ব্যাংকের কর্মী রাহুল মার্টের বর্ণনায়ও সাইফুজ্জামানের সম্পদের তথ্য উঠে এসেছে। কীভাবে তিনি বিদেশে এত সম্পদ গড়েছেন, সেই ধারণাও পাওয়া গেছে। অর্থপাচার এবং বিদেশে বিনিয়োগের জন্য সেসব দেশের ব্যাংক কর্মকর্তা, ফাইন্যান্সার, আইনজীবী, রিয়েল স্টেট কোম্পানি, ও এজেন্টদের নিয়ে একটি নেটওয়ার্ক গড়ে তুলেছিলেন সাইফুজ্জামান।
এ ছাড়া সাইফুজ্জামান চৌধুরীর বর্ণনায়ও তার সম্পদ ও ব্যক্তিগত জীবন সম্পর্কে ধারণা পাওয়া গেছে। আল-জাজিরা টিমের গোপন ক্যামেরায় তিনি স্বীকার করেন- দেশের বাইরে তার ব্যবসার কথা শেখ হাসিনা জানতেন। তাদের কাছে নিজের বিলাসী জীবনের গল্পও করেন সাইফুজ্জামান। জানান, উটপাখি ও কুমিরের বুকের চামড়া দিয়ে তৈরি জুতা ব্যবহার করেন তিনি। রয়েছে নামিদামি ব্রাণ্ডের অসংখ্য গাড়ি।
ছাত্র-জনতার অভ্যূত্থানে শেখ হাসিনা ক্ষমতা ছেড়ে ভারতে চলে যাওয়ার পর কোন এক সময় সাইফুজ্জামানও দেশ ছেড়ে চলে যান। বর্তমান অন্তবর্তী সরকার সাইফুজ্জামানের বিরুদ্ধে অর্থপাচারের অভিযোগের তদন্ত শুরু করেছে। ইতোমধ্যে তার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করেছে।
fblsk
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা