অনলাইন ডেস্ক
তবে কেন্দ্রীয় ঔষধাগার বলছে, জেএমআইয়ের বিষয়ে নিয়ম অনুযায়ীই ব্যবস্থা নেবে তারা।
করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার পর গত মার্চে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের ব্যবহারের জন্য এসব মাস্ক কেন্দ্রীয় ঔষধাগারকে (সিএমএসডি) সরবরাহ করেছিল জেএমআই।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পিপিই নীতিমালা অনুযায়ী, রোগীর নমুনা পরীক্ষা ও চিকিৎসার জন্য এন-৯৫ মাস্ক পরা জরুরি। কিন্তু মার্চের শেষ ভাগে কেন্দ্রীয় ঔষধাগার থেকে বিভিন্ন হাসপাতালে যেসব মাস্ক পাঠানো হয়, তার প্যাকেটে ‘এন-৯৫’ লেখা থাকলেও ভেতরে ছিল সাধারণ সার্জিক্যাল মাস্ক।
ফলে সেগুলো আসল মাস্ক কি না তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন চিকিৎসকরা; বিষয়টি সে সময় সংবাদ মাধ্যমেও আসে।
জেএমআই নামে একটি প্রতিষ্ঠানের মুগদা জেনারেল হাসপাতালে সরবরাহ করা মাস্কের প্যাকেটে সাধারণ সার্জিক্যাল মাস্ক থাকায় হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি সংসদ সদস্য সাবের হোসেন চৌধুরী ওই মাস্কের মান সম্পর্কে জানতে চেয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও কেন্দ্রীয় ঔষধাগারের পরিচালককে চিঠি দেন।
বিষয়টি খতিয়ে দেখার পর কেন্দ্রীয় ঔষধাগারের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শহিদ উল্লাহ ২ এপ্রিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ব্রিফিংয়ে স্বীকার করেন, ওই মাস্ক সাধারণ সার্জিক্যাল মাস্ক ছিল। প্যাকেটের গায়ে জন্য এন-৯৫ লেখা হয়েছিল ‘ভুল করে’।
এর মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নজরেও বিষয়টি আসার পর বাক্সের গায়ে এক এবং ভেতরে আরেক ধরনের মাস্ক থাকা নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে বিষয়টি খতিয়ে দেখতে বলেন।
এরপর ঘটনা তদন্তে সোমবার একটি কমিটি গঠন করেছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়।
মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা জানা যায়, দুটি চালানের মাধ্যমে জেএমআই সিএমএসডিতে ২০ হাজার ৬০০ টি মাস্ক সরবরাহ করেছিল। চালানে মাস্কগুলোকে এন-৯৫ ফেস মাস্ক (অ্যাডাল্ট) হিসেবে উল্লেখ করা ছিল। কিন্তু সেগুলোর মান নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় জেএমআই হসপিটাল রিকুইজিট ম্যানুফ্যাকচারিং লিমিটেডকে ২ এপ্রিল একটি চিঠি দেয় সিএমএসডি।
সিএমএসডির পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শহীদুল্লাহ স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে এ বিষয়ে জেএমআইকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে জবাব দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। ৩ এপ্রিল জেএমআই সে চিঠির জবাব দেয়। প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আবদুর রাজ্জাক স্বাক্ষরিত চিঠিটি সিএমএসডি গ্রহণ করে গত ৪ এপ্রিল।
করোনাভাইরাস সঙ্কটে বিশ্বজুড়ে মাস্কের সঙ্কটের চিত্র তুলে ধরে ওই চিঠিতে বলা হয়, এই পরিস্থিতিতে তারাও মাস্ক তৈরি করছে, যা ‘ডেভেলপমেন্ট’ পর্যায়ে রয়েছে।
“যে সময় মাস্কগুলো সরবরাহ করা হয়, তখনও দেশে এন-৯৫ এর স্পেসিফিকেশন সংক্রান্ত কোনো সুনির্দিষ্ট গাইডলাইন ছিল না। পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য জেএমআই হসপিটাল রিকুইজিট ম্যানুফ্যাকচারিং লিমিটেড কেন্দ্রীয় ঔষধাগারে বেশকিছু পণ্য সরবরাহ করে। সরবরাহকৃত পণ্যের সঙ্গে ভুলক্রমে প্রডাক্ট ডেভেলপমেন্ট পর্যায়ে তৈরিকৃত ২০ হাজার ৬০০ পিস এন-৯৫ মাস্ক অন্তর্ভুক্ত করা হয়, যা এন-৯৫ এর স্পেসিফিকেশনের সঙ্গে ‘কমপ্লাই’ করে না।”
ওই পণ্যটি এখনও বিপণন শুরু হয়নি উল্লেখ করে চিঠিতে বলা হয়, “এ অবস্থায় ‘দেশের বর্তমান পরিস্থিতি ও উপরোক্ত ব্যাখ্যা সদয় বিবেচনাপূর্বক সরবরাহকৃত মাস্ক ফেরত দিয়ে আমাদের অনিচ্ছাকৃত সম্পাদিত ভুলের দায় হতে মুক্তি দানে বাধিত করবেন।”
জেএমআইকে দায়মুক্তি দেওয়া হবে কি না- জানতে চাইলে কেন্দ্রীয় ঔষধাগারের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শহীদুল্লাহ বলেন, “তারা ক্ষমা চাইতেই পারে। তবে এটার বিষয়ে আমাদের অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ প্রসিডিউর আছে।
“কোনো সাপ্লায়ার যদি কোনো জিনিস ঠিকমতো সাপ্লাই না করে, সে ব্যাপারে আমাদের তো একটা আইনগত ব্যবস্থা আছেই। সাপ্লায়ার কোনো কারণে যদি ভুল করে, যে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার, আমরা সেই ব্যবস্থাই নেব। সেটা শুধু ওই প্রতিষ্ঠান নয়, সবার জন্যই প্রযোজ্য।”
করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার পর শুরু থেকেই মানসম্মত ব্যক্তিগত সুরক্ষা উপকরণ, পিপিই সরবরাহের দাবি জানিয়ে আসছিলেন চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা।
বাংলাদেশ ডক্টরস ফাউন্ডেশন (বিডিএফ) নামক ডাক্তারদের একটি সংগঠনের হিসাব বলছে, মঙ্গলবার পর্যন্ত সারাদেশের সরকারি-বেসরকারি ২০৩ জন চিকিৎসক করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন।
মানসম্মত সুরক্ষা উপকরণের অভাব তাদের আক্রান্ত হওয়ার অন্যতম প্রধান কারণ বলে চিকিৎসকদের দাবি।
fblsk
করোনা পরিসংখ্যান এর লাইভ আপডেট দেখুন
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা