লালমনিরহাটের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নেছারিয়া কামিল মাদ্রাসার অন্তত দশ লাখ টাকা ‘নয়-ছয়’ করার অভিযোগ উঠেছে এর অধ্যক্ষ মোসলেম উদ্দিনের বিরুদ্ধে। তদন্ত কমিটির নিরীক্ষা প্রতিবেদনে অভিযোগের সত্যতা মিললেও অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা না নিয়ে তাকে মাত্র ছয় লাখ টাকা জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন কমিটির সভাপতি। তার এ সিদ্ধান্তে কমিটির কয়েকজন সদস্য নারাজি দিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির সব টাকা ফেরত চেয়ে ‘দুর্নীতিবাজ’ অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। এ বিষয়ে লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক ও দুদকের রংপুর সমন্বিত কার্যালয়ে অভিযোগপত্রও জমা দেওয়া হয়েছে। মাদ্রাসা সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
জানা গেছে, ষাটের দশকে আসগার আলী নামে পূর্ব সাপটানার এক বিদ্যানুরাগী ধনাঢ্য ব্যক্তি মাদ্রাসা স্থাপনের জন্য তার বাড়ির পাশে জমি দান করেন। ১৯৬৫ সালে দাখিল পর্যায়ের পাঠদানের মাধ্যমে এই নেছারিয়া মাদ্রাসার যাত্রা শুরু হয়। দীর্ঘদিন সুনামের সঙ্গে পরিচালিত এই মাদ্রাসার সবশেষ ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ছিলেন এবিএম মাহফুজুর রহমান। তিনি অবসরে গেলে ২০১৫ সালের ৩১ মার্চ অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ পান মোসলেম উদ্দিন। ২০০৬ সালের ২৮ ডিসেম্বর মাদ্রাসাটির নামে লালমনিরহাট সোনালী ব্যাংক শাখায় একটি হিসাব (অ্যাকাউন্ট) খোলা হয়। টানা ১০ বছর অ্যাকাউন্টটি মাদ্রাসার অন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা পরিচালনার পর এই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ হয়ে পদাধিকার বলে কমিটির সদস্য সচিব হিসেবে তা পরিচালনার দায়িত্ব পান মোসলেম উদ্দিন। আর এই অ্যাকাউন্টের দেখভালের দায়িত্বে আছেন মাদ্রাসাটির সভাপতি সংরক্ষিত নারী আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট সফুরা বেগম রুমী।
কিন্তু সম্প্রতি মাদ্রাসাটির অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের অনিয়ম, দুর্নীতি ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ ওঠে। তিনি মাদ্রাসা ফান্ডের সব টাকা ব্যাংকে জমা না দিয়ে ইচ্ছেমতো খরচ করছেন এমন গুরুতর অভিযোগ পাওয়া গেলে বিষয়টি তদন্তের জন্য ছয় সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটি। পরিচালনা পর্ষদের ওই ছয় সদস্য মাদ্রাসার আয়-ব্যয়ের একটি নিরীক্ষা প্রতিবেদন করে। অভিযোগ অনুযায়ী ২০১৬ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২০১৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়কালের আয়-ব্যয় নিরীক্ষা করে গত ২৩ মে পরিচালনা পর্ষদের কাছে প্রতিবেদন আকারে তা দাখিল করে ওই তদন্ত কমিটি। এতে আর্থিক অনিয়মের ৪৪টি আপত্তি তুলে ধরা হয়।
মাদ্রাসার পরিচালনা কমিটি সূত্রে জানা গেছে,৫০ পৃষ্ঠার ওই নিরীক্ষা প্রতিবেদনের নথিতে স্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হয় মাদ্রাসার আয়ের ৫৮ লাখ ৮২ হাজার ১৩ টাকার মধ্যে ব্যাংক হিসাবে লেনদেন হয়েছে মাত্র ১১ লাখ ৪১ হাজার ৩২ টাকা। আবার উত্তোলন করা হয়েছে ১১ লাখ ৯৬ হাজার ৮৯৯ টাকা।
তদন্ত কমিটি সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এ অ্যাকাউন্টে ব্যালান্স ছিল ৬০ হাজার ৯৪০ টাকা। অধ্যক্ষ মোসলেম উদ্দিন এরপর থেকেই অ্যাকাউন্টটিতে লেনদেন করেন, অনিয়মের সূত্রপাতও সেখান থেকেই। ফলে ওই তিন বছরে তার স্বাক্ষরে যে পরিমাণ অর্থ উঠিয়ে নেওয়া হয়েছে, তাতে আগের বছরের কিছু টাকাও চলে গেছে। অ্যাকাউন্ট পরিচালনার নিয়মনীতি অনুযায়ী যৌথ স্বাক্ষর ছাড়া এসব টাকা উত্তোলন না করতে পারার কথা থাকলেও মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ও কমিটির সদস্য সচিব বেশিরভাগ টাকা তুলে নিয়েছেন একক স্বাক্ষরে। ফলে এটা গুরুতর অপরাধের শামিল। এরপরও এসব টাকার সিংহভাগ লেনদেন ও খরচের প্রমাণ দাখিল করার কারণে তদন্ত কমিটি এসব অভিযোগকে যত না আমলে নিয়েছে তারচেয়েও বড় অভিযোগ ব্যাংকে জমা না দেওয়া ৪৭ লাখ ৪০ হাজার ৯৮১ টাকাকে ঘিরে। ব্যাংকে জমা না করে এসব অর্থ সরাসরি খরচ করা হয়েছে বলে প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।
এতে দেখা যায়, মাদ্রাসার মোট আয় ওই ৩৬ মাসে ৫৮ লাখ ৮২ হাজার ১৩ টাকা। আর কাগজে-কলমে খরচ দেখানো হয়েছে ৫৩ লাখ ৬২৩ টাকা। বাকি ৫ লাখ ৮১ হাজার ৩৯০ টাকা ‘হস্ত মজুতের’ (হাতে থাকা) কথা বলা হয়। তবে ব্যাংক থেকে তোলা ১১ লাখ ৯৬ হাজার ৮৯৯ টাকার কিছু অংশের খরচসহ ব্যাংকে জমা না হওয়া মোট ৪৭ লাখ ৪০ হাজার ৯৮১ টাকার হিসাব নিয়ে তদন্ত কমিটির রয়েছে গুরুতর আপত্তি। ওই টাকার বড় অংশ মাদ্রাসার ভবন নির্মাণের কাজে খরচ হওয়ার বিল ও ভাউচার তদন্ত কমিটির সামনে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ উপস্থাপন করতে পারলেও ৪ লাখ ৮৭ হাজার ৩৯৮ টাকার কোনও হিসাব তিনি দিতে পারেননি, এমন দাবি মাদ্রাসা কমিটিতে থাকা একাধিক সদস্যের।
মাদ্রাসা কমিটির এক সদস্যের অভিযোগ,এমন গুরুতর অনিয়ম হলেও এই ৪ লাখ ৮৭ হাজার ৩৯৮ টাকার হিসাব আমলে না নিয়ে অধ্যক্ষের হাতে থাকা ৫ লাখ ৮১ হাজার ৩৯০ টাকাকে ৬ লাখে মিলিয়ে দিয়ে ব্যাংকে জমা করার নির্দেশ দিয়েছেন কমিটির সভাপতি সফুরা বেগম। এ ব্যাপারে তীব্র আপত্তি জানিয়েছেন কমিটির বেশিরভাগ সদস্য। ফলে হাতে থাকা ও হিসাব না মেলা এই ১০ লাখ ৬৮ হাজার ৭৮৮ টাকার পুরেটাই মাদ্রাসা ফান্ডে কেন জমা করা হবে না এবং এসব টাকা ‘নয়-ছয়’ করার অভিযোগে মাদ্রাসা অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে কেন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে না সে প্রশ্ন এখন মাদ্রাসা কমিটি পেরিয়ে এলাকাবাসীরও।
এ কারণে পুরো বিষয়টিতে ক্ষুব্ধ হয়ে মাদ্রাসার অনিয়মের বিষয়ে লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক ও দুদকের রংপুর সমন্বিত কার্যালয়ে লিখিত অভিযোগপত্র জমা দিয়েছেন মাদ্রাসাটির প্রতিষ্ঠাতা আছগার আলীর ছেলে শফিকুল ইসলাম। জানতে চাইলে অভিযোগকারী শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘নেছারিয়া কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মোসলেম উদ্দিনের অনিয়ম-দুর্নীতির বিচার চেয়ে তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক ও দুদকের রংপুর সমন্বিত কার্যালয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি। সুশাসন, শিক্ষার্থী ও প্রতিষ্ঠানটির কল্যাণের জন্যই অভিযোগ করেছি। এখানে কোনও স্বার্থ জড়িত নেই। এজন্য বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি।’
লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক আবু জাফর এই সংক্রান্ত একটি লিখিত অভিযোগ পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
মাদ্রাসার অর্থ কীভাবে খরচ করা যাবে সে বিষয়ে বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড, গভর্নিং বডি ও ম্যানেজিং কমিটি প্রবিধিমালা-২০০৯ তে সুনির্দিষ্ট ব্যাখ্যা রয়েছে।
ওই প্রবিধিমালার ৪৫ অনুচ্ছেদের (ব্যাংক হিসাব ও পরিচালনা) ৪ নম্বর কলামে বলা আছে, কোনোক্রমেই নগদ আদায়কৃত অর্থ ব্যাংকে জমা না করে নগদ ‘ক্যাশ টু ক্যাশ’ ব্যয় করা যাবে না। একই অনুচ্ছেদের ৩ নম্বর কলামে বলা হয়েছে, সংশ্লিষ্ট মাদ্রাসার তহবিলের সকল আয় ওই হিসাবে জমা করতে হবে এবং উপ-প্রবিধান (৫) এর বিধান সাপেক্ষে, এক হাজার টাকার অধিক দায় ক্রসড চেকের মাধ্যমে পরিশোধ করা যাবে। এছাড়াও উল্লেখ আছে, সংশ্লিষ্ট মাদ্রাসার দৈনন্দিন ব্যয় নির্বাহের জন্য কর্তৃপক্ষের অনুমোদনক্রমে অনধিক ৫ হাজার টাকা নগদ উত্তোলন করে হাতে রাখা যাবে।
ফলে লালমনিরহাটের নেছারিয়া কামিল মাদ্রাসার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে একক স্বাক্ষরে টাকা ওঠানোর প্রক্রিয়া এবং হাতে টাকা জমা রেখে খরচ করার দুটি ঘটনাই ওই প্রবিধিমালার সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এই প্রসঙ্গে জানতে চাইলে অধ্যক্ষ মোসলেম উদ্দিন বলেন, ‘মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীন আমাদের মাদ্রাসাটি পরিচালিত হয় না। এটি ঢাকার মোহাম্মদপুর ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন পরিচালিত। এ কারণে ওই নীতিমালা আমাদের জন্য প্রযোজ্য নয়।
তবে তিনি অভিযোগ স্বীকার করে বলেন,‘‘আয়-ব্যয়ের টাকা ‘ক্যাশ টু ক্যাশ’ খরচ করাটা ভুল হয়েছে। নিরীক্ষা প্রতিবেদনটি আমাকে সামনে সঠিক পথের চলার পথ দেখিয়েছে। এখন থেকে সেভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে।’’
তিনি বলেন, ‘মানুষ মাত্রই ভুল করে। আমার হয়তো কিছু কিছু ক্ষেত্রে অভিজ্ঞতার অভাবের কারণে ভুল হয়েছে। তবে একটি টাকাও আমি ভোগ করিনি। মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির অনুমোদন নিয়েই সব টাকা খরচ করা হয়েছে।’
এদিকে, মাদ্রাসা ফান্ডের টাকা ব্যয় কমিটির অনুমোদন নিয়ে খরচ হয়েছে কিনা তা নিয়েও মাদ্রাসা কমিটির দু’পক্ষের মধ্যে রয়েছে ভিন্ন বক্তব্য। কেউ কেউ দাবি করছেন খরচের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে কিনা তা তারা জানেন না। আবার অন্য সদস্যরা বলছেন, বড় খরচের বিল ভাউচারগুলো কমিটিতে অনুমোদন করে নেওয়া হলেও ছোট ছোট খাতে যেসব খরচ করেছেন মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সেগুলোতে তিনি কোনও অনুমোদনই নেননি। পরিচালনা কমিটির সদস্যদের মধ্যে শিক্ষক প্রতিনিধি তাজুল ইসলাম বলেন, অনুমোদন নেওয়া হয়েছে কি না আমি জানি না। অপর শিক্ষক প্রতিনিধি আব্দুর রশিদ বলেন, ছোট ছোট কিছু বিল অনুমোদন করাননি। কিন্তু বড় বড় খরচের ভাউচার অনুমোদন করে নিয়েছেন।
মাদ্রাসা কমিটির সদস্য এবং নিরীক্ষা কমিটির আহ্বায়ক মো. তারেক কমিটির কাছে মাদ্রাসার আয়ের নিরীক্ষা প্রতিবেদন দাখিল করার সত্যতা স্বীকার করে বলেন,‘‘অধ্যক্ষ মোসলেম উদ্দিন কোনও নিয়ম-নীতি অনুসরণ না করে পরিচালনা কমিটির অনুমোদন ছাড়াই আয়ের টাকা ‘ক্যাশ টু ক্যাশ’ খরচ করেছেন। এজন্য কোনও উপ কমিটিও করা হয়নি। আইনত এটা তিনি করতেই পারেন না। এছাড়াও মোট খরচের মধ্যে তিনি ৪ লাখ ৮৭ হাজার ৩৯৮ টাকা অযাচিত ও বিধিবহির্ভূত ভাবে খরচ করেছেন। আপত্তির টাকাসহ তার ‘হস্তমজুতে’ থাকা ৫ লাখ ৮১ হাজার ৩৯০ ব্যাংকে জমা দিতে প্রতিবেদনে অনুরোধ করা হয়েছে।’’
তিনি আরও জানান, এই নিরীক্ষা প্রতিবেদনের ভিত্তিতে গত ২৫ জুন মাদ্রাসার পরিচালনা কমিটির বৈঠকে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অবশিষ্ট টাকার বিষয়ে কৈফিয়ত চাওয়া হলে তিনি হস্ত মজুতের টাকা ফেরত দেওয়ার কথা বলেন। বাকি টাকার বিষয়ে তাকে চাপ দেওয়া হলে সভাপতি এসময় নিজস্ব সিদ্ধান্ত দিয়ে তাকে হাতে টাকার সঙ্গে আর কিছু টাকা মিলিয়ে ৬ লাখ ১০০ টাকা ব্যাংকে জমা করতে বলেন। তবে আমরা পুরো টাকাই ফেরত দেওয়ার দাবি জানাই। কারণ, এটা মাদ্রাসার অর্থ এবং তা কোনও ব্যক্তির একক বা ব্যক্তিগতভাবে খরচ করার এখতিয়ার নেই। এছাড়াও সভাপতির দেওয়া সিদ্ধান্তকে সভার রেজ্যুলেশনে অন্তর্ভুক্ত করার ব্যাপারে আমরা দাবি জানাই। কিন্তু, তিনি (সভাপতি) এতে রাজি হননি।
জানা গেছে, মাদ্রাসা কমিটির সভাপতি ২৮ আগস্টের মধ্যে ওই ৬ লাখ টাকা ব্যাংকে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়ায় গত ২৫ আগস্ট তা ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা দেন অধ্যক্ষ মোসলেম উদ্দিন।
এ বিষয়ে লালমনিরহাট নেছারিয়া কামিল (এমএ) মাদরাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি এবং সংরক্ষিত নারী আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট সফুরা বেগম রুমী বলেন, ‘মোবাইলে কোনও বক্তব্য দিতে পারবো না। আপনাদের (সাংবাদিকদের) কোনও প্রশ্ন থাকলে নির্বাহী কমিটির সভা ডাকবো। ওই সভায় আপনারা প্রশ্ন করলে উত্তর পাবেন।’
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিষয়টি সমাধানের জন্য মাদ্রাসার সভাপতি সম্প্রতি একটি বৈঠক আহ্বান করেছিলেন। কিন্তু, কোরাম পূর্ণ না হওয়ায় বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়নি। এ বিষয়ে জানতে মাদ্রাসা কমিটির বেশ কয়েকজন সদস্যের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা জানান, ওই সময় তারা ব্যক্তিগত কাজে শহরের বাইরে ছিলেন এবং মাদ্রাসা কমিটির বৈঠক আহ্বানের বিষয়ে অবহিত ছিলেন না। লালমনিরহাট জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘মাদ্রাসা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর কোনও আর্থিক অনিয়ম সংক্রান্ত বিষয়ে আমার দেখার এখতিয়ার নেই। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ যদি লালমনিরহাট নেছারিয়া কামিল মাদ্রাসার বিষয়ে কোনও নির্দেশনা দেয় তাহলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কিন্তু এখন আমার পক্ষে করার কিছু নেই।’
উল্লেখ্য, ১৯৬৫ সালে দাখিল বিষয়ে পড়াশোনার মাধ্যমে লালমনিরহাটের নেছারিয়া কামিল মাদ্রাসার কার্যক্রম শুরু হয়। পরবর্তীতে ১৯৭৭ সালে আলিম, ১৯৭৯ সালে ফাজিল ও ২০০২ সালে কামিল মাদ্রাসায় উন্নীত হয় জেলার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এই বিদ্যাপীঠটি। খবর বাংলা ট্রিবিউন।
এর আগে, মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মোঃ মোসলেম উদ্দিনের বিরুদ্ধে এক শিক্ষার্থীর মায়ের শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠেছিল।
অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, লালমনিরহাট সদর উপজেলার আর্দশপাড়া গ্রামের এক ষোড়শী কন্যা নেছারিয়া কামিল মাদরাসায় দশম শ্রেনীতে অধ্যয়নরত। উক্ত ছাত্রীর বাবা প্রবাসী হওয়ার সুবাদে ছাত্রীর পড়াশুনার দেখভাল করার জন্য মাদরাসার অধ্যক্ষ মোসলেম উদ্দিন প্রায়শই তার বাড়িতে যাতায়াত করত। এরই ধারাবাহিকতায় ছাত্রীকে এসএসসি পরীক্ষার সাজেশন দেয়ার অজুহাতে এবং পরীক্ষার ফলাফল কিভাবে ভালো করা সম্ভব, সে ব্যাপারে ছাত্রীর মায়ের সাথে একান্ত আলাপচারিতায় লিপ্ত হন তিনি। পরে সুযোগ বুঝে ছাত্রীর মাকে জড়িয়ে ধরে আপত্তিকর স্থানে চাপ দিয়ে বিবস্ত্র করে বিছানায় শোয়ানোর চেষ্টা করেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
উল্লেখ্য, অধ্যক্ষ মোসলেম উদ্দিন পূর্বের কর্মস্থল কুড়িগ্রামের উলিপুরে এমন অনেক নারী ঘটিত ঘটনার জন্ম দিয়েছেন বলে বিভিন্ন সুত্র নিশ্চিত করেছে।
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা