বিদ্যমান আইনে সরকার টু সরকার প্রকল্প গ্রহণ এবং তা বাস্তবায়নের বিধান রেখে ‘বাংলাদেশ সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্ব (সংশোধান) আইন-২০১৯’র খসড়ার চূড়ান্ত নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সোমবার অপরাহ্নে বাংলাদেশ সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে এ অনুমোদন দেয়া হয়। বৈঠকের পরে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
তিনি বলেন, ‘জনগণের জীবন-মান উন্নয়ন, আর্থসামাজিক অগ্রগতি ত্বরান্বিত করা এবং অবকাঠামো গড়ে তোলার লক্ষ্যে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার মধ্যদিয়ে বেসরকারি খাতের সঙ্গে অংশীদারিত্ব সৃষ্টির লক্ষ্যে ‘বাংলাদেশ সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্ব আইন-২০১৫’ তথা ‘পিপিপি আইন’ প্রণয়ন করা হয়।’
সচিব বলেন, ‘পিপিপি আইন,২০১৫ তে জি টু জি প্রকল্পের কোন বিধান ছিল না। কিন্তু পিপিপি আইন,২০১৫ প্রবর্তিত হওয়ার পর সরকার বিভিন্ন দেশের সঙ্গে সমঝোতার ভিত্তিতে পিপিপি প্রকল্প (জি টু জি পিপিপি) বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করে।’
তিনি বলেন, ‘ইতোমধ্যে ‘পলিসি ফর ইমপ্লিমেন্টিং পিপিপি প্রজক্টস থ্রু গভার্নমেন্ট টু গভার্নমেন্ট (জি টু জি) পার্টনারশীপ-২০১৭’র আওতায় জাপান, সিঙ্গাপুর, দক্ষিণ কোরিয়া এবং দুবাই’র সঙ্গে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে। অন্যান্য দেশও এই প্রক্রিয়ায় প্রকল্প গ্রহণে আগ্রহ প্রকাশ করেছে।’
‘এর পরিপ্রেক্ষিতে কতৃর্পক্ষ কতৃর্ক জি টু জি প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়নের বিষয় অন্তর্ভুক্তকরণের লক্ষ্যে প্রস্তাবিত আইনের ৮ ধারায় – ২ (৬ক),১৩ (৩) এবং ১৩ (৪) উপধারা সংযোজন করা হয়েছে,’বলেন তিনি।
নতুন আইনের অন্যান্য সংশোধনীগুলো তুলে ধরে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘আগের আইনে বোর্ড অব গভরনর্সের বছরে অন্তত ছয়টি সভা অনুষ্ঠিত হবে বলে উল্লেখ আছে। বছরে ছয়টি সভা আয়োজন সময় সাপেক্ষ এবং সভাপতিসহ সদস্যদের সার্বক্ষণিক ব্যস্ততার নিরিখে তা সম্ভবপর হয়ে ওঠে না। এজন্য সংশোধিত আইনের ৩ ধারায় বোর্ড অব গভরনর্সের সভার সংখ্যা বছরে ছয়টির স্থলে একটি করা হয়েছে।’
পিপিপি আইনের ৯ ধারায় কর্তৃপক্ষের ক্ষমতা ও কার্যাবলীতে পিপিপি সম্পর্কিত নীতিমালা/ প্রবিধি/ নির্দেশনা/ গাইডলাইন প্রণয়ন, অনুমোদন, গেজেটে প্রকাশ ও জারিকরণের বিষয় উল্লেখ আছে। নতুন আইনে নীতিমালা/ প্রবিধি/ নির্দেশনা ও গাইডলাইনের সঙ্গে ‘কার্যপ্রণালী’ শব্দটি সংযুক্ত করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম।
পিপিপি কর্তৃপক্ষের সাংগঠনিক কাঠামোতে কর্তৃপক্ষের বিভিন্ন পদে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের বিধান রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বিদ্যমান আইনের ১১ ধারায় পিপিপি কর্তৃপক্ষে সরাসরি নিয়োগ করা কর্মচারীদের চাকরির শর্তাবলী প্রবিধানের মাধ্যমে নির্ধারিত হবে বলে উল্লেখ আছে। কর্তৃপক্ষে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ করা ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে আলাদা বিধানাবলী সংযোজনের ধারা সংশোধন করে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের ক্ষেত্রে বোর্ড অব গভরনর্স অনুমোদিত গাইডলাইন বা বিধান যুক্ত করা হয়েছে।’
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘পিপিপি আইনে চুক্তিকারী কর্তৃপক্ষ যে সব ক্ষেত্রে পিপিপি কর্তৃপক্ষের সহায়তা ও মতামত গ্রহণ করবে তা উল্লেখ আছে। পিপিপি প্রকল্প গ্রহণ থেকে শুরু করে চুক্তি স্বাক্ষর পর্যন্ত বিভিন্ন ধাপ ও চুক্তি সংশোধনের ক্ষেত্রে সহায়তার বিষয় উল্লেখ আছে। তবে, অভিজ্ঞতার আলোকে দেখা যায় যে, চুক্তি স্বাক্ষরের পর তা বাস্তবায়ন ও সেবা প্রদান কার্যক্রম পরিবীক্ষণ পর্যায়েও পিপিপি কর্তৃপক্ষের সহায়তা প্রয়োজন হয়, যার উল্লেখ বিদ্যমান আইনে নেই। এ কারণে বিদ্যমান আইনে অংশীদারিত্ব চুক্তি সম্পাদনের পর চুক্তির আওতাধীন কার্যক্রমের পরিবীক্ষণ-সংশ্লিষ্ট বিষয়ে পিপিপি কর্তৃপক্ষের মতামত ও সহায়তা গ্রহণের বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।’
পিপিপি চুক্তি স্বাক্ষরের পর প্রকল্প বাস্তবায়ন ও সেবা দেয়ার ক্ষেত্রে সরকারি সংস্থার সার্বিক সহযোগিতার প্রয়োজন হয় উল্লেখ করে খন্দকার আনোয়ার বলেন, ‘এ কারণে পিপিপি চুক্তি সম্পাদনের পর সংশ্লিষ্ট সরকারি প্রতিষ্ঠানকে প্রকল্প বাস্তবায়নে বেসরকারি অংশীদারকে সহায়তা দেয়ার বিধান যুক্ত করা হচ্ছে প্রস্তাবিত আইনে।’
এছাড়া সভায়, জুলাই মাসে রাশিয়ায় অনুষ্ঠিত ‘প্রথম আন্তির্জাতি মেরিটাইম ডিফেন্স শো-২০১৯’ তে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের অংশগ্রহণ, নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রীর নেতৃত্বে সিঙ্গাপুর, কানাডা এবং দক্ষিণ কোরিয়ার বিভিন্ন বন্দর পরিদর্শন এবং ২৭ থেকে ৩০ আগস্ট পর্যন্ত নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলের দক্ষিণ কোরিয়া সফর সম্পর্কে মন্ত্রিসভাকে এদিনের বৈঠকে অবহিতকরণ করা হয়, বলেন মন্ত্রি পরিষদ সচিব।
সভায় বীরমুক্তিযোদ্ধা, বর্ষীয়ান রাজনীতিক, চট্টগ্রাম-৮ আসনের সংসদ সদস্য মঈনউদ্দিন খান বাদলের মৃত্যুতে একটি শোক প্রস্তাব গৃহীত হয়।
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা