ছবি তোলার জন্য যাবার পর দুর্বৃত্তের হামলায় আহত ফটোগ্রাফারের ভয় কাটছে না। তিনি এখনও আতঙ্কিত সময় কাটাচ্ছেন। এঘটনায় তিনি চট্টগ্রামের অাকবর শাহ্ থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন, যার নম্বর ০৭। বর্তমানে পুলিশ মামলাটির তদন্ত করছে।
জিসান লাল সবুজের কথা ডটকম কে বলেন, গত ১২ নভেম্বর সকাল ৫টায় আমি একটা উইন্টার ফটোশুটের জন্য ঘর থেকে বের হই ,যার ফটোশুটের জন্য আমি এত ভোরে বের হই সে আমাকে বলল তার ফ্যামেলিতে জানলে প্রব্লেম হবে তাই সে সকালের মধ্যেই বের হবে এবং সকাল ৮ টার মধ্যেই বাসায় চলে আসবে,সেই অনুযায়ী আমি উইন্টার ফটোশুটের জন্য কিছু কাপড় এবং আমি আমার 5D MARK (III) camera, 70-200 (L) f2.8 Lens , 35MM f1.2 Lens আর কিছু ক্যামেরা গিয়ার নিয়ে যার ফটোশুট করব তার পছন্দ অনুযায়ী কাট্টলী (কর্নেল হাট) এর পশ্চিম দিক দিয়ে রেল লাইন পার হয়ে টোল রোডের নীচে দিয়ে টোল রোডের পরে আরো হাফ কিলোঃ হেটে ব্রিক ফিল্ডের কাছাকাছি জায়গায় সকাল ৭টা পর্যন্ত ফটোশুট করি।
তিনি জানান, জায়গাটি একটু নীরব এবংসামান্য কদমাক্ত হওয়াতে আমি এই ছেলেকে জিজ্ঞেস করি এত ভিতরে আর এই কদমাক্ত জায়গায় কেন এল? সে বলল এইখানে কুয়াসা র জন্য উইন্টার ইনভায়রনমেন্ট ভাল বুঝা যাবে,যাক আমি ও সেটাই ভাবলাম।
অবশেষে ফটোশুট সকাল ৭ টার মধ্যে শেষ করে চলে আসব বলে সব কিছু ঘুছিয়ে নিচ্ছিলাম এমন সময় ওই ছেলে বল্ল সে একটু প্রশ্রাব করবে বলে একটু আড়ালে যায়,আমিও আমার সব কিছু গুছাচ্ছিলাম ,এমন সময় ৩/৪ জন ছেলে আমাদের দিকে আসতে দেক্লাম ,তাদের মধ্যে একজন জুতা খুলে একটু তাড়াতাড়ি আমাদের দিকে অগ্রসর হয়ে আমাদের দিকে আসছিল কাছাকাছি আসলে দেখি তাদের মুখমন্ডল ১০ টাকা দামের মাস্ক লাগানো, আমাদের জিজ্ঞেস করছে আমরা কি করছি? আমি বল্লাম আমি ফটোগ্রাফার উইন্টার ফটোশুটের কাজ করছি , এর মধ্যেই তারা ৩/৪ জন আমার ক্যামেরা নিয়ে টানাটানি করতে থাকে, আমি তখন নিজের ক্যামেরা রক্ষা করার জন্য ওদের বলি আমি সাংবাদিক ,আমার কোন কিছুতে যেন তারা হাত না দেয়,এবং ৯৯৯ এ কল করে পুলিশ কল করব বলে হুমকি দেই , এবং ওই ছেলেকে ও ৯৯৯ এ কল করতে বলি, এই সময় ওরা ২জন আমাকে সামনে পিছন থেকে জোড় করে পা টেনে মাটিতে ফেলে দেয় আমি ক্যামেরা টি রক্ষা করার চেষ্টা করি এই ফাকে ওরা আমার কাছে রাখা দামি ক্যামেরা নিয়ে নেয়। এমন কি আমাকে পেটে ছুরিকাগাত করতে চেষ্টা করে, আমি আমার ডান হাত দিয়ে রক্ষা করতে গিয়ে আমার ডান হাতের বৃদ্ধাঙ্গুল এবং তর্জনীর মাঝখানে তালু পর্যন্ত কেটে যায়। এর পরও তারা একজন আমাকে পা চেপে ধরে টেপ দিয়ে আমার দুই পা পেচিয়ে ফেলে। আরেক জন আমার দুই হাত এবং মুখ পেচাতে থাকে। এ সময়ে একজন আমার পেটে উপর্যপরি লাথি মারতে থাকে , এক পর্যায়ে আমার হাত থেকে রক্ত যাওয়ায় এবং পেটের ব্যথায় দূর্বল হয়ে পড়ে থাকি, এবং আমি জ্ঞান হারিয়ে ফেলি ,আমি আমাকে আলামিনে হাসপাতালের বেডে প্রচন্ড বেথায় আমি কাতরাচ্ছিলাম, এমতাবস্থায় আমার কোন মোবাইল না থাকার কারনে আমি কাউকে কল ও দিতে পারছিলামনা, পরে হাসপাতালের দাড়োয়ান এর মোবাইল থেকে আমি আমার স্ত্রী কে কল দেই, আমার স্ত্রী আমাকে এই অবস্থায় দেখে আল-আমিন হাসপাতালে ভর্তি করায় এবং কত্যব্যরত ডিউটি ডাক্তার আমার হাত সেলাই করে ,আমার আল্ট্রাসনো করে আমার চিকিতসা অত্র মেডিকেল করতে পারবেনা বলে অপরাগত প্রকাশ করে, এমতাবস্থায় আমার স্ত্রী কোন উপায় না দেখে আমার কিছু বন্ধুকে কল দেয়,এবং আল-আমিন হাসপাতালের বিল পরিশোধ করে আমাকে আমার বন্ধুর গাড়ির মাধ্যমে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন হাসপাতালে ভত্তি করায়, ইমারজেন্সিতে আমার অবস্থা অবনতি দেখে আমাকে আই সি ইউ তে নিয়ে যায় এবং পুনরায় বিশেষজ্ঞ ডাক্তারগণ আমার আল্ট্রাসনো করে নিশ্চিত হয় আমার পেটে উপর্যুপরি লাথি মারার কারনে আমার খাদ্যনালি ছিদ্র হয়ে যায় এবং ঠিক সময়মত অপারেশন না করলে আমার মৃত্যু হয়ে যেতে পারে, আর অপারেশন হলেও ৩০ ভাগ বাচার সম্ভাবনা ছিল, এমতাবস্থায় আমার স্ত্রী র অনুমতি নিয়ে ১২ তারিখ রাত আনুমানিক ৯ টায় চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ ডাক্তার প্রফেসর ড. জেইউ অাহমেদ ও তার দলের চিকিৎসকেরা আমার অপারেশন করেন, অপারেশন এআল্লাহর অশেষ রহমতে অামার অস্ত্রোপচার হয়েছে। অামি এখন অনেকটা সুস্থ।
কিন্ত ডাক্তার আমাকে ৩ মাস কমপ্লিট বেড রেস্টে থাকতে বলেছে।
জিসান বলেন আমি আর কিছু চাই না। অপরাধী যেই হোক তার যেন সর্বোচ্চ শাস্তি হয় অামি সেটা চাই।
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা