তাসকিনা ইয়াসমিন
ভোটের ব্যাপারে মানুষের মধ্যে আগ্রহ খুব কম। আমাদের পাড়া থেকে খুব কম মানুষ ভোট দিতে গেছে। সরকারি দলের লোকেরা বলছে, বিএনপি সন্ত্রাস ছড়িয়েছে তাই মানুষ ভয়ে ভোটকেন্দ্রে যায়নি। কিন্তু একইভাবে যারা ভোট দিতে গেছে তাদের মধ্যে অনেকে বলছে যে তাদের বুথের মধ্যে তাদের সঙ্গে অন্য লোকেরা ঢুকেছে। তাদের সাথে দলের লােক ঢুকেছে। এটা তাদের জন্য দুশ্চিন্তার। আর একটা কথা শুনলাম যে, ইভিএমে বাড়তি অনেকক্ষণ চাপ দিলে থাকে। তখন বাইরে থেকে লোক ঢুকে দেখে যে কোনটায় ভোট দিল। এইটা নিশ্চয় সব যায়গায় হচ্ছেনা। তবে, কিছু কিছু যায়গায় এটা হচ্ছে। আমার স্টুডেন্টরাও ২/১ জন আমাকে এটা বলল।
মানুষ কিন্তু নির্বাচনের প্রতি আগ্রহটা হারিয়েছে। এটার কারণে যে বিষয়টা দাঁড়ায়, যে পদ্ধতিতে সরকার পরিবর্তন হয় এতে কিন্তু একটা বড় বিষয় নির্বাচন করতে হবে। কিন্তু সেই নির্বাচনে যদি আগ্রহ কমে যায়, তাহলে জনগণ থেকে সরকার, মানুষ থেকে রাষ্ট্র এদের মধ্যে ব্যবধান বেড়ে যাবে। এটার দায়িত্বটা কিন্তু ইসির। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত আমাদের দেশের দুর্নীতি দমন কমিশন এবং নির্বাচন কমিশনের উপর মানুষের আস্থা কমে গেছে অনেক। এখন নির্বাচন কমিশনারের আঙ্গুলের ছাপ মিলছে না। তখণ তো মানুষ প্রশ্ন তুলছেই। যখন ইভিএম নিয়ে পরীক্ষামূলক আয়োজন করল তখন তো কেউ যায়নি। আমি তো, কাউকে আসলে এই নির্বাচনের ব্যাপারে আগ্রহী দেখছিনা।
যে ব্যবস্থায় রাজনৈতিক সরকার পরিচালনা হয়, সেখানে এটা কি ইঙ্গিত করে। আমাদের অংশগ্রহণমূলক রাজনীতি দূর্বল হয়ে গেছে। ভোটের বদলে তাহলে কি করা দরকার। সেটা বোঝা দরকার। সুশাসন কি কেবলমাত্র রাজনৈতিক থাকবে কিনা এই নিয়ে প্রশ্ন আসছে। মানুষ সিদ্ধান্ত নিতে চাইবে যে এই ভোটই কি একমাত্র পথ কিনা! তাহলে মানুষ অন্য পদ্ধতিতে যাবার চেষ্টা করবে। হয়ত পাড়াভিত্তিক সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে। মানুষ আসলে আশা করেনা যে নির্বাচন হলে খুব একটা পরিবর্তন হবে। কারণ মশা সিটি কর্পোরেশনে গত ১০ বছরে কমেছে এটা কেউ বলতে পারবেনা। নোংরা কমেছে, না কমেনি। ট্রাফিক জ্যাম কমেনি। রাস্তাঘাটের অবস্থা ভাল হয়নি। তাহলে মানুষ কেন এই নির্বাচনের জন্য আগ্রহ দেখাবে?
আমি গত ৯ বছর ধরে একটা ড্রেন দেখলাম, ঠিক হয়না। কারণ, নিকেতনে যারা হেটে যায়, তাদের এই ড্রেনের উপর দিয়ে যেতে হয়। আমি নিজে কর্পােরেশনের ওয়েবসাইটে পর্যন্ত দিয়েছি কিন্তু সমাধান হয়নি। আমার মনে হয়না, যে সিটি কর্পোরেশনের কাছ থেকে মানুষের আশা খুব একটা বেশি। যেহেতু সিটি কর্পােরেশন থেকে মানুষের প্রত্যাশা কম তাহলে ভোটের ব্যাপারে আগ্রহ কেন কম থাকবে?
আমার মনে হয়, ভোটদাতার সংখ্যা কমতেই থাকবে। আর দলের কর্মীর সংখ্যা বাড়বে। গত পরশু দিনও আমাদের এখানে ভোট নিয়ে দুই দলের কর্মিদের মধ্যে মারপিট হয়েছে। এতে বোঝা যায়, দলের কর্মীদের নির্বাচন নিয়ে আগ্রহ অনেক কিন্তু ভোটারের আগ্রহ খুবই কম। মানুষ এখন আর সিটি কর্পােরশন নির্বাচনকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করেনা। তাহলে, একটা প্রশ্ন থেকেই যায়, তারা নাগরিক সুবিধা অসুবিধা সমাধানের জন্য কার কাছে যাবে?
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা