ম্যাচের ৮৮তম মিনিট পর্যন্ত ম্যাচে স্পষ্ট আধিপত্য ছিল বাংলাদেশের। আক্রমণ আর রক্ষণে দুর্দান্ত খেলেছেন জামাল ভূঁইয়া আর ইয়াসিন। সুযোগ ছিল ১৬ বছর পর ভারতের বিপক্ষে জয় তুলে নেওয়ার। কিন্তু শেষ মুহূর্তের ওই গোলেই ১-১ গোলের ড্র নিয়ে ফিরলো জেমি ডে’র শিষ্যরা।
মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) বিশ্বকাপ ও এশিয়ান কাপের যৌথ বাছাইপর্বে কলকাতার যুব ভারতীয় স্টেডিয়ামে ভারতের বিপক্ষে মাঠে নামে বাংলাদেশ। খেলা শুরুর মাত্র দ্বিতীয় মিনিটের মাথায় ভারতের ডি-বক্সের বাঁ দিক থেকে আক্রমণে গিয়েছিলেন বাংলাদেশের ইব্রাহীম। সেখানে তাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন ভারতের ডিফেন্ডার ভিকি। বাংলাদেশ পেনাল্টির আবেদন জানালেও রেফারি তাতে সাড়া দেননি।
অষ্টম মিনিটে ফের একবার পেনাল্টির দাবি করে বাংলাদেশ। এবারও ভারতের ডি-বক্সের ভেতরে ঢুকে পড়েছিলেন ইব্রাহীম। আর এবারও তাকে ফেলে দিয়েছিলেন সেই ভিকি। কিন্তু রেফারি এবার গোল কিকের ইশারা করেন। ৩১তম মিনিটে আদিলের ভুলে গোল খেতে বসেছিল ভারত। কিন্তু আনাসের দক্ষতায় ব্যর্থ হন বিপলু।
প্রথমার্ধের খেলার অধিকাংশ সময় বল নিয়ন্ত্রণে ছিল ভারতের। বেশ কয়েকটি সুযোগও পেয়েছিল। কিন্তু বাংলাদেশের গোলরক্ষক আশরাফুল ইসলাম রানার দারুণ কিছু সেভ স্বাগতিকদের গোল বঞ্চিত করে। আর মাথায় ব্যান্ডেজ নিয়েও অসাধারণ কিছু হেডে দলকে বিপদমুক্ত করেন ইয়াসিন। তবে মাঝ মাঠে পুরোটাই ভারতের আধিপত্য বজায় ছিল।
কিন্তু লড়াইয়ে বাংলাদেশকে এগিয়ে দেন সাদ। তবে এই গোলে তার চেয়ে বড় ভূমিকা জামালের লম্বা ও বাঁকানো ফ্রি-কিকের। তার দূরের পোষ্টে পাঠিয়ে দেওয়া বলের সুইং বুঝতে না পেরে এগিয়ে গিয়েছিলেন স্বাগতিক গোলরক্ষক গুরপ্রীত সিং। বল চলে যায় ডান পাশে থাকা সাদের দিকে। বাঁকানো ও নিচু হেডে বল জড়িয়ে দেন এই ফরোয়ার্ড।
দ্বিতীয়ার্ধে আরও দুর্দান্ত খেলা দেখিয়েছেন লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। ৫১তম মিনিটে ব্যবধান বাড়ানোর সুযোগ পেয়েছিলেন জীবন। সোহেল দারুণ ড্রিবলের পর কাট করে বল পাঠিয়েছিলেন বক্সের ভেতরে থাকা জীবনের পায়ে। কিন্তু তার শট প্রতিহত হয়। ৬০তম মিনিটে সুযোগ পেয়েছিল ভারতও। থাপার কর্নার কিকে হেড নিয়েছিলেন আনাস। কিন্তু গোল লাইন থেকে বল ক্লিয়ার করেন ইব্রাহীম।
৭৩তম মিনিটে স্বাগতিকদের বুকে কাঁপন ধরিয়ে দিয়েছিলেন জীবন। ডিফেন্সকে বোকা বানিয়ে ভারতীয় গোলরক্ষক গুরপ্রীতের মাথার ওপর দিয়ে চিপ করেছিলেন তিনি। বল গুরপ্রীতের আঙুল ছুঁয়ে ফাঁকা পোস্টে প্রবেশ করার ঠিক আগ মুহূর্তে বল ক্লিয়ার করেন আদিল খান। শেষ বাঁশি বাজার ঠিক ২ মিনিট আগে এই আদিল খানের হেডেই হতাশায় পুড়তে হয় বাংলাদেশকে। ব্র্যান্ডনের কর্নার কিকে রকেট গতির হেড করেছিলেন আদিল, ঠেকানোর কোনো সুযোগই ছিল না আশরাফুলের হাতে।
এই ড্র’র পর গ্রুপ ‘ই’র পঞ্চম স্থানে নেমে গেল বাংলাদেশ। ৩ ম্যাচে ১ ড্র ও ২ হারে জেমি ডে’র দলের পয়েন্ট মাত্র ১। অন্যদিকে সমান ম্যাচ খেলে ২ ড্র ও ১ হারে ২ পয়েন্ট নিয়ে চতুর্থ স্থানে ভারত।
কলকাতার ঐতিহ্যবাহী সল্ট লেক স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার ২০২২ কাতার বিশ্বকাপ ও ২০২৩ সালের এশিয়ান কাপের বাছাইয়ের দ্বিতীয় রাউন্ডে টানা দুই হারের পর প্রথম পয়েন্টের স্বাদ পেল ডের শিষ্যরা। দুদলের এ নিয়ে ২৫ বারের মুখোমুখি লড়াইয়ে ১১টি ম্যাচ হলো ড্র। ভারতের জয় ১১টি, বাংলাদেশের তিনটি।
ফিফা স্বীকৃত পরিসংখ্যানে ভারতের বিপক্ষে এটি বাংলাদেশের ১১তম ড্র। শক্তিশালী দলটির বিপক্ষে ১৬ বছর পর জয়ের সম্ভাবনা জাগিয়েও সুযোগ হারাল বাংলাদেশ। ভারতের বিপক্ষে সবশেষ ২০০৩ সালে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে জিতেছিল তারা।
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা