অনলাইন ডেস্ক
রোববার (১৯ নভেম্বর) আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামে ভারতের দেয়া ২৪১ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই ধুঁকতে থাকে অস্ট্রেলিয়া। ইনিংসের প্রথম বলেই উইকেট পেতে পারতো ভারত। জসপ্রিত বুমরাহর অফ স্টাম্পের বাইরের বেরিয়ে যাওয়া ডেলিভারিতে ব্যাট চালিয়েছিলেন ডেভিড ওয়ার্নার। ক্যাচ উঠার পর বল স্লিপে গেলেও ধরার চেষ্টা করেননি ভিরাট কোহলি ও শুভমান গিলের কেউ। তাতে প্রথম বলেই চার রানের দেখা পায় অস্ট্রেলিয়া। প্রথম ওভার থেকে আসে মোট ১৫ রান। প্রথম বলে জীবন পেলেও ওয়ার্নারকে ইনিংস বড় করতে দেননি মোহাম্মদ শামি।
নিজের প্রথম ও ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই ওয়ার্নারকে সাজঘরে ফেরান শামি। ডানহাতি এই পেসারের অফ স্টাম্পের অনেকটা বাইরের বল খেলতে গিয়ে স্লিপে থাকা কোহলির হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ৭ রান করা ওয়ার্নার। চার-ছক্কা মেরে ভালো শুরুর আভাস দিলেও ইনিংস বড় করতে পারেননি মিচেল মার্শও। বুমরাহর অফ স্টাম্পের বাইরের বলে খোঁচা দিয়ে উইকেটের পেছনে থাকা লোকেশ রাহুলের গ্লাভসে ক্যাচ দেন তিনে নামা এই ব্যাটার। মার্শের ব্যাট থেকে এসেছে ১৫ রান। চারে নেমে থিতু হতে পারেননি স্টিভ স্মিথও।
বুমরাহর অফ স্টাম্পের বাইরে পড়ে ভেতরে ঢোকা ডেলিভারিতে রক্ষণাত্মক ভঙ্গিতে খেলেছিলেন অভিজ্ঞ এই ব্যাটার। বলের লাইন মিস হওয়ায় তা সরাসরি আঘাত হানে স্মিথের প্যাডে। আবেদন করতেই স্মিথকে আউট দেন আম্পায়ার। রিভিউ নেয়ার কথা ভাবলেও শেষ পর্যন্ত ফিরে গেছেন আউট মেনেই। তবে রিভিউ নিলে বেঁচে যেতেন চারে নামা এই ব্যাটার। টিভি রিপ্লেতে দেখা যায় বলের ইম্প্যাক্ট ছিল অফ স্টাম্পের বাইরের।
পঞ্চাশের আগে ৩ উইকেট হারিয়ে বিপাকেই পড়েছিল অস্ট্রেলিয়া। লাবুশেন ও হেডের জুটি খানিকটা স্বস্তি দেয় সফরকারীদের। লাবুশেন ধীরগতিতে রান করলেও হেড ছিলেন নিচের চেনা ছন্দেই। চাপের মুখে দাঁড়িয়ে শেষ পর্যন্ত হাফ সেঞ্চুরিও তুলে নেন হেড। কুলদীপ যাদবের বলে সিঙ্গেল নিয়ে ৫৮ বলে পঞ্চাশ ছুঁয়েছেন বাঁহাতি এই ওপেনার। হাফ সেঞ্চুরির পর ভারতের বোলারদের উপর চড়াও হতে থাকেন হেড। দারুণ ব্যাটিংয়ে সেঞ্চুরিও তুলে নিয়েছেন তিনি। ৯৫ বলে তিন অঙ্কের ম্যাজিক ফিগার স্পর্শ করেন হেড। দলকে ৩ রান দূরে রেখে সিরাজের বলে আউট হওয়ার আগে ১২০ বলে ১৫ চার ৬ ছক্কায় ১৩৭ রান করেন এই অজি বাঁহাতি ব্যাটার।
ভারতের হয়ে সর্বোচ্চ ২টি উইকেট শিকার করেন জাসপ্রিত বুমরাহ। ১টি করে উইকেট নেন শামি ও সিরাজ।
এর আগে, টসে হেরে ব্যাটিং করতে নেমে শুরুটা ভালোই করেছিলেন রোহিত শর্মা। তবে ভারতের অধিনায়ককে সঙ্গ দিতে পারেননি শুভমান গিল। মিচেল স্টার্কের শর্ট অব লেন্থ ডেলিভারিতে সামনের পায়ের উপর ভর করে পুল করতে গিয়ে অ্যাডাম জাম্পার হাতে ক্যাচ দেন তিনি। গিলের ব্যাট থেকে এসেছে ৪ রান। দলীয় ৩০ রানে প্রথম উইকেট হারায় ভারত।
গিল ফিরে গেলেও রোহিত শার্মার ঝড়ো ব্যাটিংয়ের সঙ্গে কোহলির হ্যাটট্রিক বাউন্ডারিতে সপ্তম ওভারেই পঞ্চাশ পূর্ণ করে ভারত। ইনিংসের অষ্টম ওভারে এসে প্রথমবার আক্রমণে স্পিনার হিসেবে ম্যাক্সওয়েলকে নিয়ে আসেন প্যাট কামিন্স।
প্রথম ওভারে সাফল্য না পেলেও নিজের দ্বিতীয় ওভারে উইকেট এনে দেন ম্যাক্সওয়েল। ডানহাতি এই অফ স্পিনারের পরের ওভারে টানা দুই বলে ছক্কা এবং চার মারেন রোহিত। পরের বলে ডাউন দ্য উইকেটে এসে আবারও উড়িয়ে মারতে গিয়েছিলেন ভারতের অধিনায়ক। তবে ব্যাটে-বলে ঠিকঠাক না হওয়ায় ফিরে যেতে হয় হেডের দুর্দান্ত ক্যাচে। দারুণ ব্যাটিং করা রোহিতের ব্যাট থেকে এসেছে ৩১ বলে ৪৭ রান।
চার নম্বরে নেমে দ্রুতই ফিরে গেছেন ফর্মের তুঙ্গে থাকা শ্রেয়াস আইয়ার। কামিন্সের অফ স্টাম্পের বাইরের বলে খোঁচা দিয়ে উইকেটের পেছনে জশ ইংলিসের ক্যাচ দিয়ে ফিরে গেছেন ৪ রান করে। মাত্র ৫ বলের ব্যবধানে ২ উইকেট হারানোর পর থেমে যায় ভারতের রান তোলার গতি।
এরপর সাবধানী ব্যাটিংয়ে ভারতকে এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকেন রাহুল এবং কোহলি। বাউন্ডারি না পেলেও নিয়মিত সিঙ্গেল নিতে থাকেন তারা দু’জন। স্রোতের বিপরীতে ৫৬ বলে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন ‘কিং’ কোহলি। এদিকে ৯৭ বল পর বাউন্ডারির দেখা পেয়েছে ভারত। হাফ সেঞ্চুরির পর বেশিক্ষণ টিকতে পারেন কোহলি। ৬৩ বলে ৫৪ রান করা কোহলিকে থামান কামিন্স। তাকে বোল্ড করেন অজি অধিনায়ক প্যাট কামিন্স। এরপর রাহুলকে সঙ্গ দিতে আসেন রবীন্দ্র জাদেজা। তবে এই জুটিকে থিতু হতে দেননি জশ হ্যাজেলউড। ৯ রান করা জাদেজাকে তিনি উইকেটের পেছনে জশ ইংলিসের ক্যাচ বানিয়েছেন।
রাহুল হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেয়ার পর ৬৬ রান করে ফেরেন। তাকে আউট করেন স্টার্ক। এই অজি পেসারের গুড লেন্থের বলে রিভার্স শট খেলতে গিয়ে আউট সাইড এজ হয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন। এরপর মোহাম্মদ শামিকেও আউট করেন স্টার্ক। খানিক বাদে অ্যাডাম জাম্পার শিকার হয়ে জসপ্রিত বুমরাহ এলবিডব্লিউ হলে ভারতের ইনিংস আর বেশিদূর এগোতে পারেনি। ভারতের শেষ ভরসা সুরিয়া কুমার যাদব আউট হন মাত্র ১৮ রান করে। ফলে আড়াইশ রানের কোটা পার হতে পারেনি ভারত।
অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ৩টি উইকেট শিকার করেন মিচেল স্টার্ক। দু’টি করে উইকেট নেন জশ হ্যাজলউড ও প্যাট কামিন্স। একটি করে উইকেট শিকার করেন অ্যাডাম জাম্পা ও গ্লেন ম্যাক্সওয়েল।
fblsk
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা