ভারত কিংবা অন্য কোনো দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে মন্তব্য করা সমীচীন নয়। সিপিবি সাধারণভাবে তা করে না।
ভারতের ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকারের প্রস্তাবিত বিতর্কিত ও আপত্তিকর ‘নাগরিকত্ব বিল’ ভারতের লোকসভায় পাশ হওয়ায় বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
সোমবার ( ১০ ডিসেম্বর) সিপিবির সভাপতি কমরেড মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম ও সাধারণ সম্পাদক কমরেড মোহাম্মদ শাহ আলম এক বিবৃতিতে এ উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
নেতৃবৃন্দ বলেছেন, ভারতের পার্লামেন্টে কী আইন পাশ হবে সেটি ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়। ভারত কিংবা অন্য কোনো দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে মন্তব্য করা সমীচীন নয়। সিপিবি সাধারণভাবে তা করে না। কিন্তু ভারতের লোকসভায় সম্প্রতি পাশ হওয়া এই বিতর্কিত নাগরিকত্ব বিলের মারাত্মক প্রভাব বাংলাদেশসহ প্রতিবেশী দেশগুলোতে ব্যাপকভাবে পড়বে। তাই সিপিবি এই প্রসঙ্গে নীরব থাকতে পারে না।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, কেবল ধর্মীয় পরিচয়ের ওপর ভিত্তি করে ভারতের নাগরিকত্ব প্রদান এবং মুসলিম ধর্মাবলম্বী জনগোষ্ঠীকে এই বিধানের আওতার বাইরে রাখায় এই আইনটি যে সাম্প্রদায়িকতার দোষে দুষ্ট তা স্পষ্ট। এর দ্বারা যে ভারতে রাষ্ট্রীয়ভাবে সাম্প্রদায়িক বিভাজনকে পৃষ্ঠপোষকতা করার পথ করে দেবে। এর ফলে ভারতের সংখ্যালঘু মুসলিম সম্প্রদায়ের ওপর হামলা-নির্যাতন-বৈষম্যের ঘটনা আরও বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা সৃষ্টি হবে।
সিপিবি নেতৃবৃন্দ বিবৃতিতে বলেন, ভারতের এই আপত্তিকর নাগরিকত্ব আইন ব্রিটিশ উপনিবেশের গর্ভে জন্ম নেয়া পরিত্যক্ত মুসলিম লীগের ‘দ্বি-জাতিতত্ত্বের’ই এক হিন্দুত্ববাদী নবতর সংস্করণ। এই বিলের ফলে ভারত ক্রমান্বয়ে হিন্দু রাষ্ট্রে পরিণত হবে। একইসঙ্গে এটি ভারতের সংবিধানে বর্ণিত ধর্মনিরপেক্ষতা এবং জাতিগত বৈচিত্র্য সমুন্নত রাখার নীতিরও পরিপন্থী। সে কারণে ভারতের কমিউনিস্ট, বামপন্থী, গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক দল শক্তি, ব্যক্ত ও জনগণ এ আইনের বিরুদ্ধে এবং সেটি বাতিলের দাবিতে তীব্র গণআন্দোলন পরিচালনা করছে।
সিপিবি নেতৃবৃন্দ বলেন, ভারতে এই আইন কার্যকর হলে তা বাংলাদেশ, ভারতসহ এ অঞ্চলের বিভিন্ন দেশে সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ ও হানাহানি বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা সৃষ্টি করবে। এর সুযোগ নেবে বিভিন্ন ধর্মীয় উগ্রবাদী শক্তি এবং তাদের প্রভু সাম্রাজ্যবাদ। ফলে পরিস্থিতি আরও বিপজ্জনক হয়ে উঠবে। সিপিবি ভারত সরকারকে এই আপত্তিকর ‘নাগরিকত্ব বিল’ থেকে সরে আসার পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য আহ্বান জানাচ্ছে। একইসঙ্গে এই আইন সম্পর্কে বাংলাদেশের জনগণের উদ্বেগ ও নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া ভারত সরকারকে আনুষ্ঠানিকভাবে জানানোর জন্য সিপিবি বাংলাদেশ সরকারের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছে।
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা