ভারতের নাগরিকত্ব সংশোধন আইন ২০১৯ ও নাগরিকপুঞ্জি ভারতের একান্ত নিজস্ব আভ্যন্তরীণ বিষয় হলেও ভারতের নাগরিকত্ব সংশোধন আইন ২০১৯-এ অযাচিত ও অযৌক্তিকভাবে পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের কাতারে রেখে বাংলাদেশকে মুসলিম রাষ্ট্র হিসাবে উল্লেখ করা ও ধর্মীয় কারণে নির্যাতিত হয়ে বাংলাদেশ থেকে অমুসলিম নাগরিকদের ভারতে যাওয়ার বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে। সেইসঙ্গে আসামে নাগরিকপুঞ্জিতে আসামের অধিবাসী ভারতীয় কয়েক লক্ষ নাগরিককে বাংলাদেশের নাগরিক হিসাবে চিন্থিত করায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ।
দলটির সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারন সম্পাদক শিরীন আখতার বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) বিকালে এক বিবৃতিতে বলেছেন, ১৯৭১ সালের পর রাষ্ট্রীয় নিপীড়নের কারণে বাংলাদেশ থেকে কোনো নাগরিক ভারতে অভিবাসন করেননি। বর্তমানে কোনো কারণেই বাংলাদেশের কোনো নাগরিক ভারতে অবৈধভাবে বসবাসও করছেন না।
তারা বলেছেন, জাসদ নেতৃদ্বয় বলেছেন, ভারত সরকার তাদের নাগরিকত্ব সংশোধন আইন ২০১৯ ও নাগরিকপুঞ্জি নিয়ে বাংলাদেশের উদ্ধিগ্ন হবার কিছুই নাই বলে বাংলাদেশকে আশ্বস্ত করেছেন। তাই বাংলাদেশ আশা করে, ভারত সরকার ও কর্তৃপক্ষ ভারতের কোনো নাগরিক বা ভারতের কোনো অধিবাসীকে বাংলাদেশের নাগরিক হিসাবে চিন্থিত করে তাদের বাংলাদেশের সীমান্তের দিকে ঠেলে দেয়া বা পুশ-ইন করার পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন না। এ ধরণের পদক্ষেপ বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বিদ্যমান বন্ধুত্বপূর্ণ ও সৌহার্দপূর্ণ সম্পর্কের মধ্যে অস্বস্তি-অবিশ্বাসের বীজ বোপন করতে পারে।
জাসদ নেতৃদ্বয় বলেছেন, ভারত-পাকিস্তান-বাংলাদেশ-শ্রীলংকা-নেপাল-ভুটান-মালদ্বীপ অর্থাৎ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলিতে সুদূর অতীত থেকে বহু জাতি, বহু সংস্কৃতি, বহু ভাষা, বহু ধর্মের মানুষ বসবাস করে আসছে। দক্ষিণ এশিয়ার এই দেশগুলির এক দেশে জাতিগত, সাংস্কৃতিক, ভাষাগত, ধর্মীয় পরিচয়ে যারা সংখ্যাগুরু আরেক দেশে তারাই সংখ্যালঘু। তাই দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলিতে জাতিগত, সাংস্কৃতিক, ভাষাগত ও ধর্মীয় কারণে বৈষম্য সৃষ্টি হলে, কোন বিরোধ-উত্তেজনা-সংঘাত-নির্যাতনের ঘটনা ঘটলে তা খুব সহজেই সেই দেশের সীমান্ত অতিক্রম প্রতিবেশী দেশে সীমাপার অভিঘাত সৃষ্টি করতে পারে।
জাসদ নেতৃদ্বয় বলেছেন, দক্ষিন এশিয়ার দেশগুলোতে জাতিগত, সাংস্কৃতিক, ভাষাগত, ধর্মীয় বিষয় একটি উচ্চমাত্রার সংবেদনশীল বিষয়। তাই দক্ষিন এশিয়ার দেশগুলির সরকার, কর্তৃপক্ষ, রাজনৈতিক দলসমূহের জাতিগত, সাংস্কৃতিক, ভাষাগত ও ধর্মীয় বিষয়ে এমন কোনো রাজনৈতিক অবস্থান ও পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিৎ না যাতে নিজ দেশেও জাতিগত, সাংষ্কৃতিক, ভাষাগত ও ধর্মীয় প্রশ্নে বৈষম্য-বিরোধ-সংঘাত-নির্যাতন-উত্তেজনা তৈরি হতে পারে এবং এর ফলে প্রতিবেশী দেশগুলোতে সীমাপার অভিঘাতও তৈরি হতে পারে। জাসদ নেতৃদ্বয় দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলির সরকার, কর্তৃপক্ষ, রাজনৈতিক দলসমুহ ও জনগণের সকল অংশকে শান্তিপূর্ণভাবে নিজ দেশের সমস্যার সমাধান করে নিজ দেশে শান্তি প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি আঞ্চলিক সহযোগিতা ও উন্নয়নে সম্মিলিতভাবে এগিয়ে আসার আহবান জানান।
আরও পড়ুন : রাজাকার যখন নিজেকে মুক্তিযোদ্ধা দাবি করে তখন খুব খারাপ লাগে : আব্দুস সামাদ তালুকদার
লালসবুজের কথা’র ফেসবুক পেজ :
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা