সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার : দেশের বেশ কয়েকটি হাসপাতালে এমন পরিস্থিতি হয়েছে যেখানে কিছু অসুস্থ রোগী গেছে কিন্তু ভর্তি নেয়া হয়নি। তাই, মঙ্গলবার (৩ মার্চ) বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে বৈঠক শেষে তাদেরকে করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) আক্রান্ত সন্দেহ হয়েছে এমন ব্যক্তিদের চিকিৎসার জন্য আইসোলেশন ওয়ার্ড চালু করার নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।
রোগতত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) এর পরিচালক প্রফেসর ডাঃ মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা এতথ্য জানান।
তিনি জানান, বেসরকারী হাসপাতালের কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া হবে বলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মহোদয়কে আশ্বস্ত করেন। কিন্তু আমরা লক্ষ্য করছি যে, কোন কোন ক্ষেত্রে এমন ধরণের বেশ কয়েকজন দেশী-বিদেশী নাগরিককে হাসপাতালে ভর্তি ও চিকিৎসা করতে অস্বীকার করা হয়েছে। এ ধরণের ঘটনা একেবারেই অনাকাঙ্খিত। বিশ্ব জনস্বাস্থ্যের জন্য এহেন জরুরী পরিস্থিতিতে বেসরকারী হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাদের দায়িত্ব পালন করবেন আমরা এ আশা করি। সরকার তাদের যে কোন সমস্যা মোকাবেলায় সহযোগিতা করবে।
হোটেল কর্তৃপক্ষের সাথে কোভিড-১৯ বিষয়ে ওরিয়েন্টশন কর্মশালা
দেশের বিভিন্ন তারকা চিহ্নিতহোটেলসমূহের কর্তৃপক্ষের সাথে কোভিড-১৯ সংক্রমণ বিষয়ে সরকারের বিভিন্ন কার্যক্রম ও পদক্ষেপ সম্পর্কে অবহিত করণের লক্ষ্যে একটি ওরিয়েন্টশন কর্মশালার আয়োজন করা হয়। উক্ত কর্মশালায় বিদেশ থেকে আগত যাত্রীদের ব্যবস্থাপনা ও করণীয় নিয়ে আলোচনা করা হয় এবং সংক্রমণ প্রতিরোধ ও প্রতিকারে করণীয় নির্দেশনা তুলে ধরা হয়।
আইইডিসিআর এর পরিচালক প্রফেসর ডাঃ মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা সিঙ্গাপুর পরিস্থিতি প্রসঙ্গে জানান, সর্বশেষ প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী সিঙ্গাপুরে এ যাবৎ ১০৮ জন কোভিড-১৯ রোগী সনাক্ত হয়েছেন, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ২৪ জনের পরিস্থিতি স্থিতিশীল, আশঙ্কাজনক রয়েছে ৬ জন এবং হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন ৭৮ জন। সিঙ্গাপুরে মোট ২ জন বাংলাদেশের নাগরিক কোভিড-১৯ সংক্রমিত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। তাদের মধ্যে ১ জন আইসিইউ-তে আছেন এবং তাঁর অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়েছে। ৩ জন বাংলাদেশের নাগরিক সুস্থ হয়ে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন। বাংলাদেশে সিঙ্গাপুরের দূতাবাস থেকেও আমাদেরকে সিঙ্গাপুর পরিস্থিতি সম্পর্কে নিয়মিত অবহিত করা হচ্ছে।
অন্যান্য দেশে প্রবাসী বাংলাদেশীদের স্বাস্থ্য পরিস্থিতি প্রসঙ্গে তিনি জানান, সিঙ্গাপুর, আরব আমিরাত ছাড়া অন্যান্য কোন দেশে এখনো পর্যন্ত কোনো প্রবাসী বাংলাদেশী কোভিড-১৯ আক্রান্ত হননি। দিল্লীতে উহান থেকে আগত ২৩ জন বাংলাদেশী নাগরিক দিল্লী শহর থেকে ৪০ মাইল দূরে একটি কোয়ারেন্টিনে আছেন।
দেশে এখন পর্যন্ত কোন করোনা ভাইরাসের রোগী পায়নি উল্লেখ করে তিনি বলেন, আইইডিসিআর-এর ভাইরোলজি ল্যাবরেটরিতে সন্দেহজনক কোভিড-১৯ আক্রান্তদের নমুনা পরীক্ষা করে এ যাবৎ কারো নমুনাতে কোভিড-১৯ পাওয়া যায় নি। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালনায় আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরসমূহ, সমুদ্র বন্দরমূহ, স্থল বন্দরসমূহে বিদেশ থেকে আগত সকল যাত্রীর তাপমাত্রা পরীক্ষা করা হচ্ছে। আজ কোনো কোভিড-১৯ লক্ষণযুক্ত যাত্রী পাওয়া যায় নি। এ পর্যন্ত স্ক্রিনিং হয়েছে ৪,২৮,৩৭৬ জনের। এ পর্যন্ত ল্যাবরেটরীতে ১০২ জনের কোভিড-১৯ পরীক্ষা করা হয়েছে। কিন্তু কারো মধ্যে এই ভাইরাস পায়নি।
কোভিড-১৯ সম্পর্কে কোন জিজ্ঞাস্য থাকলে আইইডিসিআর-এর হটলাইন নম্বরে যোগাযোগ করার নম্বর : ০১৯২৭৭১১৭৮৪, ০১৯২৭৭১১৭৮৫, ০১৯৩৭০০০০১১, ০১৯৩৭১১০০১১
করোনা ভাইরাসের কারণে শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণ প্রতিরোধে করণীয় :
× নিয়মিত সাবান ও পানি দিয়ে দুই হাত ধোবেন (অন্তত ২০ সেকেন্ড যাবৎ) × অপরিষ্কার হাতে চোখ, নাক ও মুখ স্পর্শ করবেন না × ইতোমধ্যে আক্রান্ত এমন ব্যক্তিদের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলুন × কাশি শিষ্টাচার মেনে চলুন (হাঁচি/কাশির সময় বাহু/ টিস্যু/ কাপড় দিয়ে নাক-মুখ ঢেকে রাখুন) × অসুস্থ পশু/পাখির সংস্পর্শ পরিহার করুন × মাছ-মাংস-ডিম ভালোভাবে রান্না করে খাবেন × অসুস্থ হলে ঘরে থাকুন, বাইরে যাওয়া অত্যাবশ্যক হলে নাক-মুখ ঢাকার জন্য মাস্ক ব্যবহার করুন × কারো সাথে হাত মেলানো (হ্যান্ড শেক), কোলাকুলি থেকে বিরত থাকুন × জরুরী প্রয়োজন ব্যতীত বিদেশ ভ্রমণ করা থেকে বিরত থাকুন এবং এ সময়ে অন্য দেশ থেকে প্রয়োজন ব্যতীত বাংলাদেশ ভ্রমণে নিরুৎসাহিত করুন × অত্যাবশ্যকীয় ভ্রমণে সাবধানতা অবলম্বন করুন।
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা