অনলাইন ডেস্ক
নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে প্রতি বছর বাংলাদেশও বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস পালন করে আসছে। তবে করোনা পরিস্থিতির কারণে এ বছর বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস উপলক্ষে তেমন কোনো কর্মসূচী গ্রহণ করা হয়নি। তবে অনলাইনে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সর্বশেষ তথ্যনুযায়ী চলতি বছরের ১ জানুযারি পর্যন্ত বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যা ছিল ১৬ কোটি ৯১ লাখ ১ হাজার। দেশের মানুষের প্রত্যাশিত আয়ুষ্কাল বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭২ দশমিক ৮ বছর।
‘ওয়ার্ল্ড পপুলেশন ক্লক’-এর তথ্যানুযায়ী, এবারের বিশ্ব জনসংখ্যা দিবসের প্রথম প্রহর পর্যন্ত বিশ্বে মোট জনসংখ্যা ৭৭৭ কোটি ৪৯ লাখ ৮৫ হাজার। বর্তমান বিশ্বে সবচেয়ে বেশি জনসংখ্যা চীনে। এরপর ভারতে এবং তারপর যুক্তরাষ্ট্রে। চীনের বর্তমান জনসংখ্যা ১৩৯ কোটি ৭৮ লাখ ৯৭ হাজার ৭২০, ভারতের ১৩৩ কোটি ৯৩ লাখ ৩০ হাজার ৫১৪ এবং যুক্তরাষ্ট্রের ৩৩ কোটি ২৪ লাখ ৭৫ হাজার ৭২৩। এ তিনটি দেশের পরই রয়েছে যথাক্রমে- ইন্দোনেশিয়া, পাকিস্তান, নাইজেরিয়া, ব্রাজিল, বাংলাদেশ, রাশিয়া ও মেক্সিকো।
রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ মানসম্মত প্রজনন স্বাস্থ্যসেবা প্রদান নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট সকলকে নিরলস প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, দারিদ্র্যের সাথে জনসংখ্যা বৃদ্ধির সম্পর্ক রয়েছে। রাষ্ট্রপতি বলেন, প্রজনন স্বাস্থ্য প্রত্যেক নর-নারীর অধিকার। নিরাপদ মাতৃত্ব ও প্রসূতি সেবা, মা ও শিশুস্বাস্থ্য পরিচর্যা, নারীদের সন্তান গ্রহণের সিদ্ধান্তসহ নারীর যথাযথ মর্যাদা ও সম্মানের সাথে বেঁচে থাকার নিশ্চয়তা প্রদান করে প্রজনন স্বাস্থ্যসেবা। পরিকল্পিত পরিবার একটি দেশের উন্নয়নের অন্যতম পূর্বশর্ত। পরিবারের আকার ছোট হলে তা পরিবারের সদস্যদের শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসহ অন্যান্য মৌলিক অধিকার পূরণের পাশাপাশি সুখী ও সমৃদ্ধশালী দেশ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তিনি বলেন, বিশ্বব্যাপী করোনা মহামারীর কারণে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে জনসংখ্যা বিস্ফোরণের আশঙ্কা রয়েছে। তাই এ সময় দেশে প্রজনন স্বাস্থ্য সংশ্লিষ্ট কর্মসূচী আরো জোরদার করতে হবে এবং চলমান কর্মসূচীগুলোতে উদ্ভাবনীমূলক কর্মকাণ্ডের সন্নিবেশ ঘটাতে হবে।
এ লক্ষ্যে সরকারের পাশাপাশি তিনি বিভিন্ন বেসরকারী সংস্থা, ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে আরো সক্রিয় ও আন্তরিকতার সঙ্গে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বাণীতে উল্লেখ করেন, একটি দেশের উন্নয়নের অন্যতম পূর্বশর্ত হচ্ছে পরিকল্পিত জনসংখ্যা। মৌলিক অধিকার পূরণের পাশাপাশি সুখী-সমৃদ্ধ দেশ গঠনে পরিকল্পিত জনসংখ্যা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তিনি বলেন, ‘একটি দেশের জনসংখ্যা ও উন্নয়ন অবিচ্ছেদ্যভাবে সম্পর্কিত।দেশের আয়তনের তুলনায় জনসংখ্যা বেশি হলে প্রতিটি সেক্টরে এর প্রভাব পড়বে। তাই একটি দেশের উন্নয়নের অন্যতম পূর্বশর্ত হচ্ছে পরিকল্পিত জনসংখ্যা। খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসহ অন্যান্য মৌলিক অধিকার পূরণের পাশাপাশি সুখী-সমৃদ্ধ দেশ গঠনে পরিকল্পিত জনসংখ্যা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।’
তিনি বলেন, বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস ২০২১ পালন করা হচ্ছে জেনে তিনি আনন্দিত এবং দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য ‘অধিকার ও পছন্দই মূল কথা : প্রজননস্বাস্থ্য ও অধিকার প্রাধান্য পেলে কাক্সিক্ষত জন্মহারে সমাধান মেলে’ অত্যন্ত সময়োপযোগী হয়েছে বলে মনে করেন।
জাতিসংঘ বলছে, বিশ্বের জনসংখ্যা ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পেয়ে ২০৩০ সালে ৮৫০ কোটি, ২০৫০ সালে ৯৭০ কোটি এবং এবং ২১০০ সালে গিয়ে ১ হাজার ৯০ কোটিতে পৌঁছাতে পারে। ২০৫০ সালের মধ্যে জনসংখ্যার যে বৃদ্ধি হবে, তার অর্ধেকের বেশি হবে নয়টি দেশে। দেশগুলো হচ্ছে- ভারত, নাইজেরিয়া, পাকিস্তান, কঙ্গো গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র, ইথিওপিয়া, তানজানিয়া, ইন্দোনেশিয়া, মিশর ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। ২০২৭ সাল নাগাদ চীনকে ছাড়িয়ে ভারত বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল রাষ্ট্রে পরিণত হবে বলে অনুমান করেছে জাতিসংঘ।
fblsk
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা