অনলাইন ডেস্ক
দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ পৃথক বাণী দিয়েছেন।
রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ তাঁর বাণীতে বলেন, জাতির পিতার পথ ধরেই গ্রামীণ ও কৃষি উন্নয়নের মাধ্যমে উন্নত, সুখী ও সমৃদ্ধিশালী সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন বাস্তবায়নে সরকার নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
রাষ্ট্রপতি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন কৃষি অন্তপ্রাণ। সদ্যস্বাধীন দেশ পুনর্গঠনে জাতির পিতা কৃষি বিপ্লবের ডাক দিয়েছিলেন। তিনি কৃষির উন্নয়নে কৃষকদের মাঝে খাস জমি বিতরণ, ভর্তুকি মূল্যে সার, কীটনাশক, উন্নত বীজ, সেচ ও অন্যান্য কৃষি উপকরণ সরবরাহ নিশ্চিত করেন। জাতির পিতা গ্রামীণ ও কৃষি উন্নয়নের মাধ্যমে যে উন্নত, সুখী ও সমৃদ্ধিশালী সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন, সে স্বপ্ন বাস্তবায়নে সরকার নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, সরকারের যুগোপযোগী নীতি ও পদক্ষেপে দেশ দানাদার খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে। ফল, সবজির উৎপাদন অনেক গুণ বেড়েছে। দেশের অভ্যন্তরীণ জলাশয়ে উৎপাদিত মাছ এবং মাংস উৎপাদনে দেশের চাহিদা পূরণে সক্ষমতা অর্জিত হয়েছে। বাংলাদেশের কৃষিপণ্যে রফতানি দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষিকে লাভজনক করতে কৃষি যান্ত্রিকীকরণে উন্নয়ন সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, সরকারের এ সব উদ্যোগ দেশের কৃষি উৎপাদনকে আরো বেগবান করার পাশাপাশি নতুন কর্মসংস্থান ও উদ্যোক্তা সৃষ্টিতে সহায়ক হবে।
তিনি বিশ্ব খাদ্য দিবসের সকল কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর বাণীতে বলেন, সরকার মানুষের পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কাজ করে যাচ্ছে। তিনি বলেন, আমাদের সরকার গৃহীত কৃষিবান্ধব নীতি ও কার্যক্রমে দানাদার খাদ্য, মাছ, মাংস ও ডিম উৎপাদনে বাংলাদেশ আজ স্বয়ংসম্পূর্ণ এবং দুধ উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতার দ্বারপ্রান্তে।
বাণীতে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ বর্তমান বিশ্বে পাট ও কাঁঠাল উৎপাদনে দ্বিতীয়, ধান ও সবজি উৎপাদনে তৃতীয়, আম ও আলু উৎপাদনে সপ্তম, পেয়ারা উৎপাদনে অষ্টম, অভ্যন্তরীণ উন্মুক্ত জলাশয়ে মৎস্য উৎপাদনে তৃতীয় এবং বদ্ধ জলাশয়ে মৎস্য উৎপাদনে পঞ্চম অবস্থানে রয়েছে। বর্তমানে আমাদের মোট খাদ্যশস্য উৎপাদন বেড়ে ৪ কোটি ৫৩ লাখ ৪৩ হাজার মেট্রিক টন হয়েছে।
তিনি বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পরিকল্পনা ও কার্যক্রমের ধারাবাহিকতায় বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার গত সাড়ে ১২ বছরে কৃষি উন্নয়নে কৃষিবান্ধব ও বাস্তবমুখী বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে।
শেখ হাসিনা বলেন, ২০০৯ সালে সরকার গঠনের পর আমরা কৃষির উন্নয়ন ও কৃষকের কল্যাণকে সর্বোচ্চ বিবেচনায় নিয়ে রূপকল্প-২০৪১ এর আলোকে জাতীয় কৃষিনীতি-২০১৮, নিরাপদ খাদ্য আইন, টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট, ডেল্টা প্ল্যান-২১০০ সহ উল্লেখযোগ্য কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি। কৃষির উন্নয়নে আমরা কৃষকদের জন্য সার, ডিজেল, বিদ্যুৎ ও কৃষিযান্ত্রিকীকরণে আর্থিক সহায়তা প্রদান এবং কৃষি প্রণোদনা/কৃষি পুনর্বাসন, কৃষিঋণ, কৃষি উপকরণ সহায়তা কার্ড বিতরণ, ১০ টাকায় ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলা, ই-কৃষির প্রবর্তন, জলবায়ু ও ঝুঁকি সহনশীল ফসলের জাত/প্রযুক্তি উদ্ভাবন ইত্যাদির ব্যবস্থা করেছি। কৃষি শিক্ষা-গবেষণা খাতে আরো বরাদ্দ বৃদ্ধি করেছি। যার ধারাবাহিকতায় খোরপোশের কৃষি আজ বাণিজ্যিক কৃষিতে রূপান্তরিত হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশব্যাপী ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলা হচ্ছে এতে কৃষিনির্ভর শিল্পের কাঁচামাল সরবরাহে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনসহ ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।
তিনি বলেন, আমরা জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ বিনির্মাণে কাজ করে যাচ্ছি। ইনশাআল্লাহ সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় বাংলাদেশকে উন্নত, সমৃদ্ধ ও আধুনিক দেশ হিসেবে বিশ্বে প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হবো।
প্রধানমন্ত্রী ‘বিশ্ব খাদ্য দিবস-২০২১’ উপলক্ষ্যে গৃহীত সকল কর্মসূচির সাফল্য কামনা করেন।
এদিকে বিশ্ব খাদ্য দিবস ২০২১ উদযাপন উপলক্ষে শুক্রবার ঢাকার ফার্মগেটে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের (বিএআরসি) মিলনায়তনে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক খাদ্য দিবসের বিস্তারিত তুলে ধরেন।
কৃষি মন্ত্রণালয় এবং জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার যৌথ আয়োজনে অনুষ্ঠিত ব্রিফিংয়ে সভাপতিত্ব করেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মেসবাহুল ইসলাম ও গেস্ট অব অনার হিসেবে বক্তব্য রাখেন এফএও’র বাংলাদেশ প্রতিনিধি রবার্ট ডি. সিম্পসন। এ সময় কৃষি মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ ও সংস্থা প্রধানগণ উপস্থিত ছিলেন।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, করোনাকালে খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুযায়ী কৃষি মন্ত্রণালয় সময়োপযোগী পদক্ষেপ গ্রহণ ও তা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। ফলে করোনাকালেও দেশে খাদ্য উৎপাদনের ধারা অব্যাহত রয়েছে ও তা আরো বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০২০-২১ অর্থবছরে রেকর্ড পরিমান বোরো উৎপাদন হয়েছে ২ কোটি টনেরও বেশি, যা দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। গত বছরের তুলনায় এ বছর সকল ফসলের উৎপাদনই বেশি হয়েছে।
ব্রিফিংয়ে জানান হয়, দিবসটির গুরুত্ব তুলে ধরতে কৃষি মন্ত্রণালয় বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। দিবসের প্রথম ভাগে সকালে ঢাকার হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে প্রতিপাদ্যের উপর একটি আন্তর্জাতিক সেমিনারের আয়োজন করা হয়েছে। এ সেমিনারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ স্মরণীয় করে রাখার জন্য কৃষি মন্ত্রণালয় বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রম গ্রহণ করেছে। তার অংশ হিসেবে এ সেমিনারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল (বিএআরসি) প্রকাশিত বইয়ের মোড়ক উন্মোচন এবং বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি) উদ্ভাবিত ‘বঙ্গবন্ধু ধান ১০০ অবমুক্ত করবেন। এছাড়া, প্রধানমন্ত্রী ‘বঙ্গবন্ধু ধান ১০০ দিয়ে নির্মিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি উন্মোচন করবেন।
অন্যান্য কর্মসূচির মধ্যে আন্তর্জাতিক সেমিনারের পর বিকালে খাদ্য নিরাপত্তার চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় করণীয় নিয়ে একটি কারিগরি সেশন অনুষ্ঠিত হবে। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে কৃষিমন্ত্রী উপস্থিত থাকবেন। সেখানে দেশে বিদেশের কৃষি ও খাদ্য বিষয়ে প্রথিতযশা বিশেষজ্ঞগণ অংশগ্রহণ করবেন।
fblsk
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা