সম্ভাব্য অভিবাসী, প্রবাসী কর্মী এবং তাদের পরিবারের সদস্যসহ সবাইকে অভিবাসন সংক্রান্ত যে কোনো ধরনের তথ্যসেবা দিতে একটি হটলাইন চালু করেছে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) এবং ব্র্যাক। সহজ এই নম্বরটি হলো, ০৮০০০১০২০৩০। যে কেউ বিনা খরচে এই নম্বরে ফোন করে অভিবাসন সংক্রান্ত তথ্য পাবেন।
পাশাপাশি বিদেশ থেকেও অভিবাসন সংক্রান্ত যেকোন তথ্য সেবা পাওয়া যাবে +৯৬১০১০২০৩০ নম্বরে ফোন করে। বাংলাদেশ সময় সকাল ৭টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত ফোন করে সরাসরি তথ্যসেবা পাওয়া যাবে। এ সময়ের বাইরে ফোন করলে সে ফোনকলটির রেকর্ড থেকে পরবর্তীতে কলদাতার সঙ্গে যোগাযোগ করা হবে।
সম্প্রতি ঢাকার ব্র্যাক সেন্টারে আয়োজিত ‘নিরাপদ প্রত্যাবর্তন এবং টেকসই পুনরেকত্রীকরণ’ শীর্ষক একটি অনুষ্ঠানে হটলাইন-এর উদ্বোধন করেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ড. আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন। এসময় আই্ওএম বাংলাদেশ-এর মনিটরিং, এভালুয়েশন, একউন্টেবিলিটি ও লার্নিং বিভাগের প্রধান ফিনিয়াস জেসি এবং ব্র্যাক অভিবাসন কর্মসূচির প্রধান শরিফুল ইসলাম হাসান এ সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের অর্থায়নে প্রত্যাশা প্রকল্পের আওতায় এ হটলাইনটি চালু করা হয়। প্রকল্পটি বাংলাদেশ সরকারের নেতৃত্বে ইউরোপীয় ইউনিয়নের অর্থায়নে ব্র্যাক-এর সাথে অংশীদারিত্বে আইওএম বাংলাদেশ বাস্তবায়ন করছে।
হটলাইন উদ্বোধনের আগে আলোচনা অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন বলেন, তথ্য হচ্ছে সূর্যের আলোর মতো। তথ্য জানলে মানুষের কাছে সবকিছু দিবালোকের মতো স্পষ্ট হয়ে যায়। তখন জেনে-বুঝে সিদ্ধান্ত নিতে সহজ হয়। কিন্তু যারা বিদেশে গেছেন বা যেতে চাচ্ছেন তাদের বেশিরভাগই তথ্য জেনে সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন না। ৯৫ ভাগ মানুষই জানেন না, তারা কোন এজেন্সীর মাধ্যমে যাচ্ছেন।
প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ এই কর্মকর্তা আরো বলেন, মাঝেমধ্যেই বিভিন্ন দেশ থেকে বিশেষ করে নারী কর্মীদের ওপর নির্যাতনের খবর আসে। বিষয়গুলো সমাধানে আমাদের আন্তরিকতার ঘাটতি নেই। এ ব্যাপারে সরকারের জিরো টলারেন্স রয়েছে। কিছু সমস্যা আছে। তবে একথাও মনে রাখতে হবে সরকারের একার পক্ষে সবকিছুর সমাধান করা সম্ভব নয়। আমরা সমস্যা যেখানে আছে সেটা স্বীকার করি। সমাধানও করতে চাই।
বিদেশফেরত কর্মীদের পুনরেকত্রীকরণের ওপর জোর দিয়ে ড. আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন বলেন, বিদেশফেরত কর্মীদের পুনরেকত্রীকরণও অভিবাসন প্রক্রিয়ার একটি অংশ। এ ব্যাপারে সরকারি, বেসরকারি সংস্থাসহ সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। প্রত্যাশা প্রকল্পটি বিদেশ ফেরতদের জন্য একটি সমন্বিত পদক্ষেপ। সরকারও এই ধরনের কাজের সাথে আছে। ভবিষ্যতে আরো ব্যাপক আকারে পুনরেকত্রীকরণ নিয়ে কাজ করার প্রস্তুতি নিচ্ছি আমরা।
উল্লেখ্য বিদেশ-ফেরত কর্মীদের মানসিক, সামাজিক এবং অর্থনৈতিক পুনরেকত্রীকরণের জন্য প্রত্যাশা প্রকল্প কাজ করছে। তথ্য পাওয়া সহজ করতে এই প্রকল্পের আওতায় এ বছরের এপ্রিলে হটলাইনটি চালু করা হয়। মঙ্গলবার আনুষ্ঠানিকভাবে এর উদ্বোধন করা হয়।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আই্ওএম বাংলাদেশ-েএর মনিটরিং, এভালুয়েশন, একউন্টেবিলিটি ও লানিং বিভাগের প্রধান ফিনিয়াস জেসি বলেন, পুনরেকত্রীকরণ অভিবাসন প্রক্রিয়ারই একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। বাংলাদেশের প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ মানুষ দেশের বা্ইরে থাকেন। এদের মধ্যে বিদেশে গিয়ে যারা ভাল করতে পারেন না কিংবা সমস্যায় পরে ফিরে আসেন তারা মানসিক, সামাজিক এবং অর্থনৈতিক সমস্যার সম্মুখীন হন। এসব মানুষের জন্য টেকসই পুনরেকত্রীকরণ জরুরি। বিশেষ করে যারা অনিয়মিতভাবে বিদেশ গিয়ে ফেরত আসছেন তাদের গল্পগুলো অনেক করুণ। এইসব মানুষের জন্য আমাদের অনেক কিছু করার আছে।
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ব্র্যাক অভিবাসন কর্মসূচির প্রধান শরিফুল ইসলাম হাসান। তিনি বলেন, প্রতিদিন কতো মানুষ বিদেশ যাচ্ছে সে তথ্য সরকারের কাছে থাকলেও কতো মানুষ ফিরে আসছে তার কোনো তথ্য নেই। ফলে বিদেশ-ফেরত কর্মীদের চিহ্নিত করে তাদের সেবা দেওয়া কঠিন হয়ে পড়ে। তিনি বলেন, বিদেশ থেকে ফেরত আসা অভিবাসনেরই অংশ। কাজেই তাদের কথাও ভাবতে হবে। তবে নিরাপদ অভিবাসন এবং টেকসই পুনরেকত্রীকরণের কাজটি কারও একার নয়। এ জন্য সরকারি বেসকরকারি প্রতিষ্ঠানসহ সবার একযোগে কাজ করতে হবে।
অভিবাসন খাতের নানা সমস্যা সমাধানে অনুষ্ঠানে বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থার পাশাপাশি গণমাধ্যমের সাংবাদিকরা তাদের মতামত তুলে ধরেন।
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা