অনলাইন ডেস্ক
সরস্বতী বৈদিক দেবী হলেও সরস্বতী পূজার বর্তমান রূপটি আধুনিককালে প্রচলিত হয়েছে। তবে প্রাচীণকালে তান্ত্রিক সাধকেরা সরস্বতী-সদৃশ দেবী বাগেশ্বরীর পূজা করতেন বলে জানা যায়।
উত্তর ভারত, পশ্চিমবঙ্গ, উড়িশ্যা, নেপাল ও বাংলাদেশে সরস্বতী পূজা উপলক্ষে বিশেষ আয়োজন দেখা যায়। এদিন খুব ভোরে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বাড়ি ও সার্বজনীন পূজামণ্ডপে দেবী সরস্বতীর পূজা করা হয়। ধর্মপ্রাণ হিন্দু পরিবারে এই দিন শিশুদের হাতেখড়ি, ব্রাহ্মণভোজন ও পিতৃতর্পণের আয়োজন করা হয়। সন্ধ্যায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সার্বজনীন পূজামণ্ডপগুলিতে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও হয়ে থাকে।
সরস্বতীর পূজা সাধারণ পূজার নিয়মেই হয়। তবে এই পূজায় কয়েকটি বিশেষ সামগ্রীর প্রয়োজন হয়। আবীর, আমের মুকুল, দোয়াত-কলম ও যবের শিষ। পূজার জন্য বাসন্তী রঙের গাঁদা ফুলও প্রয়োজন। লোকাঁচার অনুসারে, ছাত্রছাত্রীরা পূজার পূর্বে কুল খায়না। পূজার দিন কিছু লেখাও নিষিদ্ধ। পূজার পর কলম, পুস্তক ও বাদ্যযন্ত্রেরও পূজা করার প্রথা প্রচলিত আছে। এই দিন ছোটোদের হাতেখড়ি দিয়ে পাঠ্যজীবন শুরু হয়।
পূজা উপলক্ষে সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বলেছেন, জ্ঞানার্জনে শ্রী শ্রী সরস্বতী দেবীর কৃপা অর্জনের লক্ষ্যেই ভক্তরা সরস্বতী পূজা করে থাকেন। এ উৎসবে ধর্ম, বর্ণ ও সম্প্রদায় নির্বিশেষে সবার অংশগ্রহণ দেশের অসাম্প্রদায়িক চেতনা ও ঐতিহ্যেরই বহিঃপ্রকাশ। জ্ঞানচর্চার ক্ষেত্রে বাণী অর্চনার এই আবহ ছড়িয়ে পড়ে বাংলার ঘরে ঘরে। জ্ঞানালোকে উদ্ভাসিত হয়ে দেশের প্রতিটি মানুষ সাম্প্রদায়িকতা, অজ্ঞানতা, কূপমন্ডূকতা থেকে মুক্ত হয়ে একটি কল্যাণকর ও উন্নত সমাজ গঠনে এগিয়ে আসবে- এটাই সবার প্রত্যাশা।
তিনি আরও বলেছেন, বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। আবহমান কাল থেকে এ দেশের মানুষ পারস্পরিক সম্প্রীতি ও সহাবস্থানের মধ্য দিয়ে নিজ নিজ ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান পালন করে আসছে। বিরাজমান সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এই সুমহান ঐতিহ্যকে সুসংহত রাখতে সবাইকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে অবদান রাখতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘ধর্ম যার যার, উৎসব সবার’ এ মন্ত্রে উজ্জীবিত হয়ে আমরা সব ধর্মের উৎসব আনন্দমুখর পরিবেশে একসঙ্গে উদযাপন করি। আমরা সবাই মিলে যুদ্ধ করে বাংলাদেশ স্বাধীন করেছি, তাই এই দেশ আমাদের সবার। আমি আশা করি, আগামী দিনে সব ধর্মের পারস্পারিক সম্প্রীতি আরও সুদৃঢ় হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ সাম্পদ্রায়িক সম্প্রীতির দেশ। হাজার বছর ধরে এ ভূখণ্ডে জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সব ধর্মের মানুষ মিলেমিশে একত্রে বসবাস করে আসছে। দেবী সরস্বতী সত্য, ন্যায় ও জ্ঞানালোকের প্রতীক। বিদ্যা, বাণী ও সুরের অধিষ্ঠাত্রী। আমি দেবী সরস্বতীর পূজা অর্চনা উপলক্ষে হিন্দু সম্প্রদায়ের সবাইকে জ্ঞানার্জনে ব্রতী হয়ে দেশের অগ্রযাত্রায় আত্মনিয়োগের আহ্বান জানাচ্ছি।’
সরস্বতী পূজা উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে করা হয়েছে বিশেষ আয়োজন। এছাড়া পূজার আয়োজন রয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে। ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির মেলাঙ্গণে মহানগর সর্বজনীন পূজা কমিটি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব বিদ্যারদেবী শ্রীশ্রী সরস্বতী পূজার আয়োজন করেছে।
fblsk
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা