অনলাইন ডেস্ক
তিনি আরও বলেছেন, ‘তাদের দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান প্রথমে ক্ষমতায় আরোহণ করে পরে রাজনীতিতে অবতরণ করেছেন। রাজনীতিবিদদের গালি দিয়ে পরে নিজেই উর্দি খুলে রাজনীতিবিদ হয়ে যান। এভাবেই বিএনপি প্রতিষ্ঠা করে গেছেন জিয়াউর রহমান। যিনি সংবিধান লঙ্ঘন করে, সামরিক আইন ভঙ্গ করে সেনাপ্রধান থেকে ক্ষমতা দখল করে রাষ্ট্রপতি হয়েছিলেন।’
মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে রোববার (২৭ মার্চ) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আলোচনা সভায় যুক্ত হন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিএনপির নেতারা বলছে, দেশে গণতন্ত্র নাকি নাই। গণতন্ত্র নাকি ধ্বংস করে ফেলেছি। কাদের মুখে গণতন্ত্রের ছবক শুনতে হয়! যাদের জন্মই হয়েছে অগণতান্ত্রিকভাবে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলের মধ্যে দিয়ে। এই অবৈধ সরকার, এটা আমার মুখের কথা না। উচ্চ আদালত থেকে নির্দেশ দিয়েছে, জিয়াউর রহমান ও এরশাদের ক্ষমতা গ্রহণ অবৈধ। কারণ, তারা সংবিধান লঙ্ঘন করে, এমনকি সামরিক আইন ভঙ্গ করে নিজেদের রাষ্ট্রপতি ঘোষণা দিয়ে, তারপর আবার সেই হ্যাঁ-না ভোট, তারপর আবার রাষ্ট্রপতি নির্বাচন, তারপর দল গঠন করে পুরো রাজনীতিতে অবতরণ করে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের জাতীয় চার নেতাকে হত্যাসহ হাজার হাজার সামরিক বাহিনীর অফিসার-সৈনিক, বিমান বাহিনীর অফিসার–সৈনিককে হত্যা করেছিলো। ক্ষমতাকে নিষ্কণ্টক করার জন্য একদিকে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের গুম-খুন করেছে, অপরদিকে সেনা সদস্যদের… কত পরিবার তাদের আপনজনের লাশটাও পায়নি, সেই হত্যাযজ্ঞ সে চালিয়েছে।’
‘প্রায় ১৯ থেকে ২০টি ক্যু হয়েছে। জাতির পিতাকে হত্যার পর একে একে সেসব ক্যুতে হাজার হাজার সৈনিককে যারা হত্যা করেছে, তাদের কাছ থেকে আজকে আমাদের গণতন্ত্রের ছবক শুনতে হবে! এটা হচ্ছে, জাতির দুর্ভাগ্য। তাদের গণতন্ত্রের সংজ্ঞা কী?’
ইতিহাস বিকৃতি করা হচ্ছে বলে বিএনপির অভিযোগ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ইতিহাস বিকৃত করল কে? জিয়া সেক্টরর কমান্ডার থাকতে পারে, কিন্তু জিয়া যুদ্ধে ছিল না। জিয়া কখনো যুদ্ধ করেনি। পাকিস্তানিদের ওপর জিয়া গুলি চালিয়েছে, এমন কেউ বলতে পারবে না।’
‘জাতির পিতা যখন স্বাধীনতার ঘোষণা দেন ভোর রাতে, সেই বার্তাটি সকলের কাছে পৌঁছে গেল। আড়াইটার সময়ে এই কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হান্নান সাহেব স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করেন। এভাবে পর্যায়ক্রমে সেখানে যারা ছিলেন একে একে তারা পাঠ করে। আরও কয়েকজন পাঠ করেন। জহুর উদ্দিন আহমেদ সাহেব তখন বললেন, একটা আর্মির লোক কোথাও থেকে নিয়ে আসো। আর্মির লোক দিয়ে ঘোষণাটি পাঠ করালে এটা যুদ্ধ যুদ্ধ মনে হবে। মেজর রফিকের বইতে সেটা খুব চমৎকারভাবে উল্লেখ করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘জিয়াউর রহমান তখন সোয়াত জাহাজ থেকে পাকিস্তানিদের মাল নামাতে গিয়েছিল। ২৫ মার্চ থেকে জিয়াউর রহমান তো সেখানে কোনো বাঙালি সৈনিক বা কাউকে বাঁচানোর চেষ্টা করেনি। যারা সেখানে বাঙালি অফিসার ছিল, তারা সেখান থেকে চলে গিয়েছিল মুক্তিযুদ্ধে। জিয়া কেন ২৫ মার্চ পর্যন্ত থাকে? যারা ব্যারিকেড দিয়েছে, সে উল্টো তাদের গুলি করেছে। তাদেরকে মেরেছে।’
‘সোয়াত জাহাজ থেকে যখন অস্ত্র নামাতে যায়, তখন তাকে ধরা হয়। তারপর তাকে ধরে নিয়ে কালুরঘাট বেতার কেন্দ্রে নিয়ে আসা হয়। কেউ এতটুকু করলে আওয়ামী লীগ কখনো তা অস্বীকার করে না। তাকে সেই মর্যাদা দিয়েছিল। কিন্তু সে সেই মর্যদা রাখতে পারেনি। কারণ, ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে হত্যায় জিয়ার হাত আছে। মোশতাক-জিয়া একসাথে মিলেই এ হত্যাকাণ্ড চালিয়েছে। যে কারণে খুনিদের ইনডেমিনিটি দিয়ে বিভিন্ন দেশের দূতাবাসে চাকরি দিয়ে পুরস্কৃত করেছে। খালেদা জিয়া তাদের জনগণের ভোট চুরি করে পার্লামেন্টে বসিয়েছে।’
আলোচনা সভায় বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ প্রান্তে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
fblsk
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা