দুর্নীতিতে রুপপুর, ফরিদপুর ও খাগড়াছড়িকে হারালো চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়।
চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য বিভিন্ন চিকিৎসা সরঞ্জাম ও যন্ত্রপাতির দামে অস্বাভাবিক প্রস্তাব দিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।সেখানে একটি বালিশের দাম ধরা হয়েছে ২৭ হাজার ৭২০ যার বাজার মূল্য ৭৫০-২০০০ টাকা এবং বালিশের কভার ২৮ হাজার টাকা যার বাজার মূল্য ৫০০-১৫০০ টাকা।
১২ ধরনের সরঞ্জামের বাজার দরের সঙ্গে একটি তুলনামূলক ছক তৈরি করে সম্প্রতি পরিকল্পনা কমিশনের কাছে পাঠালে সেটি ফেরত পাঠায় তারা।
এক্ষেত্রে একটি সার্জিক্যাল ক্যাপ ও মাস্কের দাম প্রস্তাব করা হয়েছে ৮৪ হাজার টাকা। যার সম্ভাব্য বাজার মূল্য ১০০ থেকে ২০০ টাকা।সার্জিক্যাল ক্যাপ ও মাস্ক ছাড়া স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় অন্য যেসব সরঞ্জাম ও যন্ত্রপাতি কেনার প্রস্তাব করেছে, সেগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল- নির্ধারিত সাইজের একটি রেক্সিনের দাম প্রস্তাব করা হয়েছে ৮৪ হাজার টাকা। ( সম্ভাব্য বাজার মূল্য ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা)। স্টেরাইল হ্যান্ড গ্লোভস ৩৫ হাজার টাকা (বাজার মূল্য ২০-৫০ টাকা), কটন তাওয়েল ৫ হাজার ৮৮০ টাকা (২৫০-১০০০ টাকা)। ৫ এমএল সাইজের টেস্টটিউব-গ্লাস মেডের মূল্য ৫৬ হাজার টাকা (বাজার মূল্য ১৫-৫০ টাকা), থ্রিপিন ফ্লাট ও রাউন্ড প্লাগযুক্ত মাল্টিপ্লাগ উইথ এক্সটেনশন কড ৬,৩০০ টাকা (বাজার মূল্য ২৫০-৫০০টাকা)। রাবার ক্লথ ১০ হাজার টাকা (৫০০-৭০০ টাকা), হোয়াইট গাউন ৪৯ হাজার টাকা (বাজার মূল্য ১-২ হাজার টাকা), ডিসপোজাল সু কভার সাড়ে ১৭ হাজার টাকা (বাজার মূল্য ২০-৫০ টাকা), বালিশের দাম ২৭ হাজার ৭২০ (বাজার মূল্য ৭৫০-২০০০ টাকা) এবং বালিশের কভার ২৮ হাজার টাকা (বাজার মূল্য ৫০০-১৫০০ টাকা)।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন প্রকল্পটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ২ হাজার ৮শ কোটি টাকা। সম্পূর্ণ সরকারি তহবিলের স্বাস্থ্য অধিদফতর সেটি অর্থে এটি বাস্তবায়ন করার কথা রয়েছে। প্রক্রিয়াকরণ শেষে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় অনুমোদন পেলে চলতি বছর থেকে ২০২২ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের লক্ষ্য ধরা হয়েছে।
প্রস্তাবিত প্রকল্পটি নিয়ে ২ সেপ্টেম্বর পরিকল্পনা কমিশনে অনুষ্ঠিত হয় প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা। সেখানেই বিভিন্ন সরঞ্জামের দামে অস্বাভাবিক প্রস্তাবের বিষয়টি চিহ্নিত হয়।
এ ব্যাপারে পরিকল্পনা কমিশন লিখিতভাবে মন্ত্রণালয়কে বলেছে, একটি বিভাগের ১২টি আইটেমের প্রস্তাবিত মূল্যের সঙ্গে আনুমানিক বাজার মূল্যের পার্থক্য ব্যাপক রয়েছে। এ প্রকল্পের আওতায় কেনার জন্য প্রস্তাবিত সব যন্ত্রপাতি বা চিকিৎসা সরঞ্জাম পর্যালোচনা করলে দামের অসামঞ্জস্য আরও অনেক বেশি হবে। এ ধরনের ব্যয় প্রাক্কলন কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। যারা এ প্রকল্পের প্রস্তাব তৈরির সঙ্গে যুক্ত তাদের অনুসন্ধান করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।
এ বিষয়ে স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব শেখ ইউসুফ হারুন গণমাধ্যমকে বলেন, ইতোমধ্যেই তারা প্রস্তাবটি ফেরত পেয়েছেন। মন্ত্রণালয়ের যারা এগুলো নিয়ে কাজ করেছেন, তারা সঠিকভাবে তা করেননি।
গত মে মাসে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পে এক হাজার ৩২০টি বালিশ কেনা হয়। এদের প্রতিটির মূল্য দেখানো হয় ৫ হাজার ৯৫৭ টাকা করে। ফরিদপুর মেডিকেল কলেজের জন্য কেনা একেকটি পর্দার দাম ৩৭ লাখ টাকা দেখানো হয়। গত সেপ্টেম্বর মাসে বিষয়টি আলোচনায় আসে। অতিসম্প্রতি খাগড়াছড়ির আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ানের ঘর মেরামতের জন্য কেনা একেকটি টিন দেখানো হয়েছে এক লাখ টাকা করে। পুরো বিষয়গুলো নিয়ে সারাদেশে ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়।
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা