আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ (২৫ নভেম্বর -১০ ডিসেম্বর) পালন উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির উদ্যোগে মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ১ ঘন্টার অবস্থান কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এবছর আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষের প্রতিপাদ্য প্রজন্ম সমতা: ধর্ষণের বিরুদ্ধে রুখে দাড়ান- এর আলোকে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ “ধর্ষণ ও যৌন নিপীড়ন মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ-আসুন এ অপরাধের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াই” এই শ্লোগানকে সামনে রেখে একই সাথে গণস্বাক্ষর সংগ্রহ কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
বর্তমান সময়ে নারীর অবস্থানের ইতিবাচক পরিবর্তনের পাশাপাশি সমাজের ভেতরে মূল্যবোধের অবক্ষয়ের কারণে নারীর প্রতি সহিংসতা বিশেষ করে শিশু ও তরুণী নারীদের যৌন হয়রানি, ধর্ষণ, গণধর্ষণ, ধর্ষণের পর হত্যার মতো ঘটনা প্রতিনিয়ত ঘটছে।
মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোসহ বিভিন্ন দেশে অভিবাসী নারী শ্রমিক যৌন নির্যাতনের শিকার হয়ে দেশে ফিরে আসছে। এসব ঘটনায় প্রতিবাদ, প্রতিরোধের বিষয়ে অনেকক্ষেত্রে সকলস্তরের মানুষের উদাসীনতা লক্ষ্যণীয়।
এসব বিষয় সমাজের মধ্যে নানা ধরণের উদ্বেগ ও নিরাপত্তাহীনতার পরিস্থিতি তৈরি করছে, নারীর মানবাধিকার লংঘনের জ্বলন্ত উদাহরণ হিসেবে দাঁড়াচ্ছে যা নারী আন্দোলনকে উদ্বিগ্ন করে তুলছে।
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ এই পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে কেন্দ্রীয় কমিটিসহ সকল জেলা শাখা ও তৃণমূল শাখায় ‘ধর্ষণ ও যৌন নিপীড়ন মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ-আসুন এ অপরাধের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াই’- এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ (২৫ নভেম্বর – ১০ ডিসেম্বর) ও বিশ্ব মানবাধিকার দিবস, ২০১৯ পালন করছে।
অবস্থান কর্মসূচিতে সংগঠনের সহ-সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. মাসুদা রেহানা বেগম বলেন বাংলাদেশে নারীর প্রতি সহিংসতার মূলে রয়েছে মনস্তত্ত্ব, পিতৃতন্ত্র ও বৈষম্যমূলক আইন। নারী ও কন্যা শিশুর প্রতি চলমান সহিংসতা প্রতিরোধে নারী-পুরুষ সকলকে নিজ নিজ জায়গা থেকে এগিয়ে আসার আহবান জানিয়ে আজকের কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। যার উদ্দেশ্য সহিংসতা প্রতিরোধে সকলকে সচেতন করে তোলা। সংগঠনের সদস্য অঞ্জনা রায় বলেন নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে দাড়াতে হবে।
আন্তর্জাতিক সম্পাদক রেখা সাহা বলেন বর্তমান সমাজে নারী ও কন্যা শিশুর প্রতি নির্যাতন ভয়াবহ ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। দূর্নীতি ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। সামাজিক অবক্ষয়ের সাথে সাথে নারী ও কন্যা শিশুর প্রতি সহিংসতাও উদ্বেগজনকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এধরণের সহিংসতার ঘটনায় জনসচেতনতা তৈরি করতে নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ পালন করা হচ্ছে আন্তর্জাতিকভাবে।
এই পক্ষ পালনের উদ্দেশ্য হলো দল-মত-শ্রেণী-গোষ্ঠী-জাতি-ধর্ম এবং বর্ণ নির্বিশেষে নারী-পুরুষ সকলের মাঝে বিদ্যমান বৈষম্য দূর করে নারী ও কন্যা শিশুর জন্য একটি নিরাপদ পরিবার, নিরাপদ সমাজ গঠনে ঐক্যবদ্ধ ভাবে কাজ করা।
নারী ও কন্যা শিশুর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে জনগণকে সচেতন করতে এবং ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে অবস্থান কর্মসূচির পাশাপাশি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা, জজ কোর্ট ও গণপরিবহনগুলোতে লিফলেট বিতরণ করা হয়।
অবস্থান কর্মসূচিতে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতৃবৃন্দ, লিগ্যাল অ্যাডভোকেসি ও লবি পরিচালক অ্যাড. মাকছুদা আখতার, সদস্য অঞ্জনা রায়, সিনিয়র আইনজীবী অ্যাড. দীপ্তি সিকদার সহ বিভিন্ন পর্যায়ের সংগঠক ও কর্মীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
ফেসবুক পেজ :
আরও পড়ুন : নারী গৃহকর্মী হোসনা আক্তারকে বাংলাদেশে প্রেরণের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন : পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা