‘প্রবৃদ্ধির জন্য অংশীদার’ স্লোগানে রাজধানী ঢাকার বসুন্ধরা-বারিধারায় ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটিতে (আইসিসিবি) চলছে তিনদিনের ভারতীয় প্রকৌশল প্রদর্শনী (ইন্ডি-২০২০ বাংলাদেশ)।
বুধবার (২২ জানুয়ারি) আইসিসিবির গুলনকশা হলে প্রর্দশনীর উদ্ধোধন করেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন।
বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার রীভা গাঙ্গুলি দাশ অনুষ্ঠানে বলেন, বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ও ভারত যৌথভাবে বৈশ্বিক সাপ্লাই চেন গঠন ও ইন্টিগেশনে কাজ করবে। দেশের শীর্ষ রপ্তানি পণ্য তৈরি পোশাকখাতে মেশিনারিজ সরবরাহের সুযোগ রয়েছে ভারতের।
তিনি বলেন, চলতি বছরের ১৭ই মার্চ শুরু হচ্ছে মুজিববর্ষ উদযাপনের অনুষ্ঠানমালা। বাংলাদেশের ধর্মনিরপেক্ষ বন্ধু হিসেবে ভারত সবসময় পাশে রয়েছে।
এছাড়া বাংলাদেশে লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্পের অপার সম্ভাবনার কথা রয়েছে উল্লেখ করে রীভা গাঙ্গুলি বলেন, সম্ভাবনাময় এই শিল্পের এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে ও উভয় দেশের প্রকৌশল যন্ত্রপাতি এবং মেশিনারিজ প্রস্তুত ও সরবরাহকারীদের মধ্যে যোগাযোগ স্থাপনের প্ল্যাটফর্ম হিসেবে ভূমিকা রাখবে। ভারতের হাইকমিশনার বলেন, বাংলাদেশ থেকে দুইশ কোটি টাকা ব্যয়ে ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপ ইয়ার্ড নির্মিত দুটি জাহাজ কিনেছে ভারতের জেন্দাস ইন্ডিয়া।
দুই দেশের সীমান্তের বিভিন্ন জায়গায় স্থাপিত সীমান্ত হাটও ব্যাপক জনপ্রিয়। এসব উদ্যোগ দুই দেশের মানুষের মধ্যে সম্পর্ক আরও দৃঢ় করবে। দুই দেশের মধ্যে ছয় হাজার কিলোমিটারের বেশি সীমান্ত রয়েছে। এরআগে দুদেশের বাণিজ্য সচিব পর্যায়ের বৈঠকে আরও তিনটি হাট চালুর বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়।
আগামী মার্চে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঢাকা সফরের কথা রয়েছে। মোদির ঢাকা সফরের সময় ভিডিও কনফারেন্সের তিনটি বর্ডার হাটের উদ্বোধন করবেন। নতুন এই হাটগুলো চালু হবে দুই দেশের সীমান্তবর্তী মেঘালয় অঞ্চলে ।
এছাড়া আরও নয়টি বর্ডার হাট চালুর জন্য অবকাঠামো নির্মাণের কাজ চলছে। ঢাকার ভারতীয় দূতাবাসের বাণিজ্যিক প্রতিনিধি প্রময়েশ বাসাল গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, এই তিনটি হাটের অবকাঠামো উন্নয়নের কাজ শেষ হয়েছে।
এখন শুধু উদ্বোধনের অপেক্ষায়। দেশ দুটির সীমান্তবর্তী মানুষদের জন্য আরও নয়টি বর্ডার হাট চালুর জন্য অবকাঠামো উন্নয়নের কাজ চলছে। এ সময় শিল্পমন্ত্রী বলেন, ভারতীয় বিনিয়োগ বাংলাদেশ থেকে ভারতে বহমুখী পণ্য রপ্তানিতে সহায়তা করবে। এতে দুইদেশের বাণিজ্য ঘাটতিও কমে যাবে।
ভবিষ্যতে উভয় দেশের সম্পর্ক আরও শক্তিশালী হবে। বিনিয়োগের সবগুলো নির্দেশক ইতিবাচক হওয়ায় বিশ্বের কাছে বাংলাদেশ এখন আকর্ষণীয় নাম।তিনি বলেন, শেখ হাসিনা সরকার দেশে জ্ঞানভিত্তিক সবুজ হাইটেক শিল্পস্থাপনে সবধরনের সহায়তা দিচ্ছে।
শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেন, আমার বিশ্বাস ইন্ডি-২০২০ বাংলাদেশ দুইদেশের বাণিজ্য সর্ম্পক উন্নয়নের পাশাপাশি লাইট ইঞ্জিনিয়ারিংখাতের প্রযুক্তি বিনিময়ে যৌথ প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ২০১৯ সালে বাংলাদেশ-ভারতের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ছিল ১০ বিলিয়ন ডলারের বেশি। বাংলাদেশ থেকে ভারতে রপ্তানি হয়েছে এক বিলিয়ন মার্কিন ডলার। অনুষ্ঠানে ভারতের বাণিজ্য ও বিনিয়োগ উন্নয়ন সংস্থার (ইইপিসি) চেয়ারম্যান রহী সেহগাল, ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই-এর সহ-সভাপতি মুনতাকিম আশরাফ, ইইপিসি ইন্ডিয়ার ভাইস-চেয়ারম্যান মহেশ কে দাশ ও নির্বাহী পরিচালক সুরঞ্জন গুপ্তা প্রমুখ বক্তব্য দেন।
ভারতের বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় দেশটির বাণিজ্য ও বিনিয়োগ উন্নয়ন সংস্থা (ইইপিসি) এই প্রর্দশনীর আয়োজন করেছে। এতে ভারতের ১২০টির বেশি প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে।
এতে সহায়তা করছে বাংলাদেশের এফবিসিসিআই, আইবিসিসিআই, বিআইওএ এবং বিইএমএমএ। ২২ থেকে ২৪ জানুয়ারি আইসিসিবি-এর গুলনকশা ও পুস্পগুচ্ছ হলে প্রতিদিন বেলা ১১টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত সবার জন্য উন্মুক্ত থাকছে এই প্রদর্শনী।
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা