অনলাইন ডেস্ক
বিশ্বজুড়ে আতঙ্ক সৃষ্টিকারী নোভেল করোনাভাইরাসের হানায় দিশেহারা হয়ে পড়েছে মানুষ। আর আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা করতে গিয়ে এখন চিকিৎসকরাই আক্রান্ত হচ্ছেন প্রাণঘাতী এই মারণ ভাইরাসে।বাদ নেই জনপরিষেবায় নিয়োজিত চিকিৎসকের পাশাপাশি সেবিকা, পুলিশ ও সংবাদকর্মীরাও।
জনহিতকর কাজে নেমে তাঁরা ব্যাপকহারে বৈশ্বিক করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছেন। এমন অবস্থায় সেবাদান অব্যাহত রাখা নিয়ে সংশ্লিষ্টমহলকে ভাবিয়ে তুলেছে।দেশে এ পর্যন্ত ৮৮১ স্বাস্থ্যকর্মী করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।
এর মধ্যে চিকিৎসক ৩৯২ জন, নার্স ১৯১ জন এবং টেকনোলজিস্টসহ অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মী ২৯৮ জন। এর মধ্যে একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের মৃত্যু হয়েছে। চিকিৎসক-স্বাস্থ্যকর্মী করোনায় আক্রান্তের দেশে মোট করোনায় আক্রান্তের প্রায় ১২ শতাংশ। বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন এ তথ্য জানিয়েছে।
সংগঠনটি মনে করে পাঁচ কারণে স্বাস্থ্যকর্মীরা করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন। এর মধ্যে অন্যতম কারণ হচ্ছে মান সম্পন্ন ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী না দেয়া, রোগীরা ডাক্তারদের কাছে তথ্য গোপন করছেন, এক সঙ্গে ডাক্তার/ নার্সদের ডিউটি দেয় উচিত হয়নি, ফ্লু কর্ণার থাকা দরকার ছিল এবং বেসরকারি হাসপাতালগুলোকে অন্তর্ভূত না করা।
৫৩৭ পুলিশ সদস্য আক্রান্ত: পুলিশ বিভাগে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা পাঁচশ’ ছাড়িয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সারাদেশে
৫৩৭ পুলিশ সদস্য আক্রান্ত হয়েছেন।এরমধ্যে তিন পুলিশ সদস্য প্রাণ হারিয়েছেন।
পুলিশের মোট আক্রান্তদের ৫২১ জন পুরুষ ও ১৬ জন নারী।পুলিশ সদর দপ্তর ও ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ- ডিএমপি জানিয়েছে, চিকিৎসাধীন ও কোয়ারেন্টাইন থাকা অবস্থায় তারা মারা গেছেন। করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সদস্য ২৭২ জন।
একক জেলা হিসেবে নারায়ণগঞ্জে পুলিশের সদস্য আক্রান্তের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। সেখানে আক্রান্ত হয়েছেন ৪৩ জন। ডিএমপিতেই তিনশ’র কাছাকাছি পুলিশ সদস্য করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। আক্রান্তদের চিকিৎসা চলছে।
নিজে নিরাপদ থেকে দায়িত্ব পালনের কথা পুলিশ সদস্যদের বলা হয়েছে।ডিএমপির আক্রান্ত ২৭২ জনের মধ্যে ২৬১ জন পুরুষ ও নারী ১১ জন।
৩৯ সাংবাদিক আক্রান্ত: করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন আরেকজন সাংবাদিক। নতুন করে আক্রান্ত এ সাংবাদিক দৈনিক প্রতিদিনের সংবাদ পত্রিকার রিপোর্টার।
এই সাংবাদিকসহ এখন পর্যন্ত ৩৯ জন গণমাধ্যমকর্মী করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে দৈনিক সময়ের আলোর নগর সম্পাদক ও সিনিয়র সাংবাদিক হুমায়ুন কবীর খোকন মঙ্গলবার রাতে মারা গেছেন।
করোনায় আক্রান্তদের মধ্যে ৮ জন সাংবাদিক ইতিমধ্যে সেরে উঠেছেন। সাতক্ষীরা জেলার তালায় জ্বর, কাশি, শ্বাসকষ্ট ও লিভারজনিত সমস্যা নিয়ে স্থানীয় এক সাংবাদিকের মৃত্যু হয়েছে।মৃত আব্দুস সালাম (৩৬) উপজেলার বারুইহাটি গ্রামের সীরাত আলী মোড়লের ছেলে।
র্যা বের ৩৯ জন: এদিকে এলিটফোর্স র্যা ব-এর নারায়ণগঞ্জে কর্মরত ৩৯ সদস্য করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। নারায়ণগঞ্জ র্যা বের ৩৯ জনের মধ্যে ১৭ জন হাসপাতালে। বাকিরা আইসোলেশনে রয়েছেন। বাইরে কাজ করতে গিয়েই তারা আক্রান্ত হন।