পরীক্ষার আওতায় মৈত্রী এক্সপ্রেসের যাত্রীরা
বাংলাদেশে এখনও কোন করোনা ভাইরাসে ( কোভিড-১৯) আক্রান্ত রোগী পাওয়া যায়নি। ঢাকার একটি হাসপাতালে ভর্তি হওয়া একজন সন্দেহজনক রোগীকে পরীক্ষা করে তার শরীরে কোভিড-১৯ ( বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দেয়া নতুন নাম) পাওয়া যায়নি। সিঙ্গাপুরে দু’জন বাংলাদেশের নাগরিক কোভিড -১৯ এ আক্রান্ত হয়েছেন।
বুধবার ( ১২ ফেব্রুয়ারি) রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) এর পরিচালক প্রফেসর ডাঃ মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা একথা জানিয়েছেন। আইইডিসিআর পরিচালক সাংবাদিকদেরকে নিয়মিত অবহিতকরণের অংশ হিসেবে বাংলাদেশে কোভিড-১৯ পরিস্থিতি সম্পর্কে অবহিত করার সময় একথা বলেন।
তিনি জানান, গত মঙ্গলবার থেকে মৈত্রী এক্সপ্রেসের যাত্রীদের মধ্যে করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমণের বিষয়টি সনাক্তকরণ শুরু হয়েছে।
তিনি জানান, সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে আইসোলেশন ইউনিটে রাখা ১১ জন এবং আশাকোনা কোয়ারান্টাইন কেন্দ্রে উহান ফেরত ৩০১ যাত্রীরা সুস্থ আছেন।
তিনি জানান, যারা সুস্থ আছেন তাদের মাস্ক পরা দরকার নেই। যারা সর্দি-কাশিতে ভুগছেন শুধু তারাই ঘরের বাইরে বের হলে মাস্ক পরবেন। তবে, ঘরে ফেরার আগে ব্যবহৃত মাস্কটি মুখ ঢাকা বিনে ফেলবেন, যেন কেউ কুড়িয়ে আবার তুলে নিতে না পারে।
তিনি জানান,কোভিড-১৯ এর কারণে গত ২১ জানুয়ারি থেকে দেশের বিভিন্ন প্রবেশ পথে স্ক্রিনিং করা হয়েছে ১১৬৯৯৩ জনের। এরমধ্যে ৩টি আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে বিদেশ থেকে আসা স্ক্রিনিং করা যাত্রীর সংখ্যা ৪৯১১০ জন। স্ক্রিনিং এর মাধ্যমে বিমান বন্দরে একজন রোগীকে সন্দেহজনকভাবে সনাক্ত করা হয়, পরে তার মধ্যে কোভিড-১৯ সংক্রমণ পায়নি।
এদিকে, দু’টি সমুদ্র বন্দরে (চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দর ও মংলা সমুদ্র বন্দর) স্ক্রিনিং করা যাত্রীর সংখ্যা ১৬৫০। অন্যান্য চালু স্থলবন্দরগুলোতে স্ক্রিনিং করা যাত্রীর সংখ্যা ৬২০৭৩। এ পর্যন্ত আইইডিসিআর এর হটলাইন নম্বরে আসা মোটকলের সংখ্যা ১৮২৫ টি। এরমধ্যে কোভিড-১৯ সংক্রান্ত কল এসেছে ১৩৫৮ টি। হটলাইনের মাধ্যমে কোভিড-১৯ সংক্রান্ত সেবা নিয়েছেন ৬৫ জন। টেস্ট করা হয়েছে ৫৯ জনের।
এদিকে, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের সাথে ব্যক্তি মালিকানাধীন হাসপাতালের ব্যবস্থাপকদের একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ঐ বৈঠকে ব্যক্তি মালিকানাধীন হাসপাতালগুলোকে অতি দ্রুত আইসোলেশন ইউনিট খোলার জন্য নির্দেশনা প্রদান করা হয়। ব্যবস্থাপকগণ এতে সম্মতি প্রদান করেন ও সরকারের সহযোগিতা কামনা করেন।
অন্যদিকে, বুধবার সকালে সামরিক চিকিৎসা সার্ভিস মহাপরিদপ্তরের উদ্যোগে কোভিড-১৯ বিষয়ক একটি সেমিনার ঢাকা সেনানিবাসে অনুষ্ঠিত হয়েছে। উক্ত সেমিনারে কোভিড-১৯ সংক্রান্ত বিশ্ব ও বাংলাদেশ পরিস্থিতি এবং সংক্রমণ ও লক্ষণভিত্তিক রোগ নির্ণয় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
এতে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আইইডিসিআর-এর পরিচালক প্রফেসর ডাঃ মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা এবং পরিচালক রোগ নিয়ন্ত্রণ ডাঃ শাহ্নীলা ফেরদৌসী।
আইইডিসিআর-এর হটলাইন নম্বর
০১৯২৭৭১১৭৮৪, ০১৯২৭৭১১৭৮৫, ০১৯৩৭০০০০১১, ০১৯৩৭১১০০১১
শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণ প্রতিরোধে করণীয় :
× ঘনঘন সাবান ও পানি দিয়ে হাত ধোবেন (অন্তত ২০ সেকেন্ড যাবৎ) × অপরিষ্কার হাতে চোখ, নাক ও মুখ স্পর্শ করবেন না × ইতোমধ্যে আক্রান্ত এমন ব্যক্তিদের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলুন × কাশি শিষ্টাচার মেনে চলুন (হাঁচি/কাশির সময় বাহু/ টিস্যু/ কাপড় দিয়ে নাক-মুখ ঢেকে রাখুন) × অসুস্থ পশু/পাখির সংস্পর্শ পরিহার করুন × মাছ-মাংস ভালোভাবে রান্না করে খাবেন × অসুস্থ হলে ঘরে থাকুন, বাইরে যাওয়া অত্যাবশ্যক হলে নাক-মুখ ঢাকার জন্য মাস্ক ব্যবহার করুন × জরুরী প্রয়োজন ব্যতীত চীন ভ্রমণ করা থেকে বিরত থাকুন এবং প্রয়োজন ব্যতীত এ সময়ে বাংলাদেশ ভ্রমণে নিরুৎসাহিত করুন × অত্যাবশ্যকীয় ভ্রমণে সাবধানতা অবলম্বন করুন।
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা