শিশুদের পারস্পারিক প্রতিযোগিতাকে নয়, পারস্পরিক সহযোগিতাকে প্রাধান্য দিয়ে শিক্ষা ব্যবস্থা প্রণয়ন করতে হবে। সোমবার (২৭ জানুয়ারী) ডাব্লিউবিবি ট্রাস্টের রায়েরবাজারের কৈবর্ত সভা কক্ষে ইনস্টিটিউট অব ওয়েলবীইং, কারফ্রি সিটিস এলায়েন্স বাংলাদেশ, বাংলাদেশ ইয়ুথ ক্লাইমেট নেটওয়ার্ক এবং ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্টের যৌথ উদ্যোগে “বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থা: প্রজন্মের ভবিষ্যৎ” আলোচনা সভায় বক্তরা এই অভিমত ব্যক্ত করেন।
ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্টের পরিচালক গাউস পিয়ারীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রবন্ধ উপস্থাপনা করেন ইনস্টিটিউট অব ওয়েলবীইংয়ের নির্বাহী পরিচালক দেবরা ইফরমসন এবং আনন্দযাত্রা ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী রুবাইয়া খান। আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন প্রসেফর কাজী আবদুর রহমান অক্সফোর্ড ইন্টারন্যাশনাল স্কুল, এম এ মান্নান মনির প্রধান শিক্ষক ঢাকা আইডিয়াল ক্যাডেট স্কুল। সঞ্চালানা করেন মো: মিঠুন সহকারী নেটওর্য়াক অফিসার ইনস্টিটিউট অব ওয়েলবীইং।
গাউস পিয়ারী বলেন, শিক্ষা মানুষকে আলোকিত করে। শিক্ষা মানুষের মধ্যে সুপ্ত সুকুমার প্রবৃত্তি জাগিয়ে তুলবে ও সৃষ্টিশীল কাজে চালিত করবে। বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থায় শিশুরা নানা জটিলতার বিষয় সম্মুখীন হচ্ছে। সামাজিকীকরণের সুযোগের অভাবে শিশুদের মধ্যে নেতিবাচক মনোভাব, একাকীত্ব ইত্যাদি পরিলিক্ষিত হচ্ছে। আমরা শিশুর শৈশব কেড়ে নিচ্ছি, অসুস্থ প্রতিযোগিতায় লিপ্ত করছি। যা শিশুর পূর্ণ বিকাশের অন্তরায়। আমরা যন্ত্রমানব নয়, মানবিক আবেগ সম্পন্ন ভবিষ্যৎ প্রজন্ম চাই। শিশুদের শৈশব ফিরিয়ে দিতে আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় পরিবর্তন আনতে হবে।
দেবরা ইফরমসন তার প্রবন্ধে বলেন, শিক্ষা ব্যবস্থায় নিছক মুখস্থকরণকে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। অত্যাধিক প্রতিযোগিতা এবং ঘন ঘন পরীক্ষাকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। কিভাবে চিন্তা-ভাবনার মাধ্যমে নতুন কিছু উদ্ভাবন করতে হয় তা শিক্ষার্থীদেরকে শিখানো হচ্ছে না। তাদের অবসর যাপনের সময় ও সুযোগও কম। বিধায় তারা অন্যান্য জ্ঞানার্জন ও বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা থেকেও বঞ্চিত হচ্ছে। ফিনল্যান্ডের শিক্ষা পদ্ধতি বিশে^র এক নাম্বার তালিকার শীর্ষে রয়েছে। সেখানে কোন পরীক্ষা নেই, কোন প্রাইভেট স্কুল নেই, কোন গৃহশিক্ষকও রাখা হয় না আর এ কারণেই শিক্ষার্থীদের মাঝে কোন হতাশা দেখা যায় না। প্রতিযোগিতাকে নয়, এখানে পারস্পরিক সহযোগিতাকে প্রাধান্য দেওয়া হয়।
রুবাইয়া খান বলেন, খেলাধূলা, সক্রিয় স্বতঃস্ফুর্তা এবং সামাজিকীকরণ জীবনের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সক্রিয় খেলাধুলা শিশুদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য, বুদ্ধিগত কর্মক্ষমতা, সৃজনশীলতা ও দক্ষতা বৃদ্ধির পাশাপাশি ব্যক্তিত্ব ও নেতৃত্বের বিকাশ, দলগত কাজ এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণের বিষয়টি শিখতে সহায়তা করে। শিক্ষক শিক্ষার্থীদের মধ্যে কেমন সর্ম্পক হবে বিষয়টিও গুরুত্বপূর্ণ।
এম এ মান্নান মনির বলেন, শিশুদের আমরা মানসম্পন্ন শিক্ষার নামে বোঝা চাপিয়ে দিচ্ছি। শিক্ষা এখন শিশুর সুষ্ঠু বিকাশের অন্তরায়। বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থায় শিশুরা পর্যাপ্ত খেলাধূলার সুযোগ পাচ্ছে না। শিশুদের স্বার্থে পাঠপুস্তক নির্ভর শিক্ষা ব্যবস্থা থেকে বের হয়ে আসতে হবে।
উক্ত আলোচনা সভায় ছায়াতলে বাংলাদেশ, আমরা সবাই ফাউন্ডেশন স্কুল, অগ্রপথিক প্রতিবন্ধী উন্নয়ন সংস্থা, এ ফ্রি স্কুল, মজার স্কুল, এইচডিডিএফ, মুক্তির সংগ্রাম প্রতিবন্ধী স্কুল, জাগো ফাউন্ডেশন, শেরে বাংলা আইডিয়াল স্কুল, ধানমন্ডি কচি কন্ঠ হাই স্কুল, স্ট্যান্ড বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন, ঢাকা আর্ট কলেজ, স্টপ ইমিশনস নাও বাংলাদেশের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহন করেন।
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা