দলের বিদ্রোহী আইনপ্রণেতাদের সতর্ক করে দিয়ে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেছেন, পার্লামেন্ট যদি চুক্তিবিহীন বিচ্ছেদের সম্ভাবনা নাকচ করে দেয়, তবে সাধারণ নির্বাচন অনিবার্য হয়ে পড়বে। বরিস বলেন, তিনি নিজে এই নির্বাচন চান না। দেশের জনগণও এই নির্বাচন চায় না।
মন্ত্রিসভার জরুরি বৈঠক শেষে গতকাল সোমবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সামনে দেওয়া ভাষণে বরিস এমন কথা বলেন। ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সঙ্গে বিচ্ছেদ কার্যকর করা নিয়ে প্রায় তিন বছর ধরে যে নাটকীয়তা চলছে, বরিসের ঘোষণাকে সেই নাটকীয়তার ‘শেষ খেলা’ হিসেবে মনে করা হচ্ছে।
চুক্তি হোক বা না-হোক, আগামী ৩১ অক্টোবর ইইউর সঙ্গে বিচ্ছেদ কার্যকর করতে চান প্রধানমন্ত্রী বরিস। তবে বিরোধী দলগুলোর পাশাপাশি ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ দলীয় আইনপ্রণেতাদের একটি অংশ চুক্তিবিহীন বিচ্ছেদ ঠেকাতে মাঠে নেমেছে। বিরোধীদের ঠেকাতে বরিস ১০ সেপ্টেম্বর থেকে আগামী ১৪ অক্টোবর পর্যন্ত পার্লামেন্ট স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সেই সঙ্গে দলের বিদ্রোহী আইনপ্রণেতাদের সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, সরকারের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করলে তাঁরা দল থেকে বহিষ্কার হবেন এবং আগামী নির্বাচনে কনজারভেটিভ দলের প্রার্থী হতে পারবেন না।
তবে পার্লামেন্টে আইন প্রণয়নের মাধ্যমে চুক্তিবিহীন বিচ্ছেদ ঠেকাতে বিরোধীদের সঙ্গে মিলে তৎপরতা অব্যাহত রাখেন সরকারি দলের বিদ্রোহী আইনপ্রণেতারা। গ্রীষ্মের ছুটি শেষে আজ মঙ্গলবার পার্লামেন্টের অধিবেশন শুরু হলেই প্রস্তাব উত্থাপনের ঘোষণা দেন তাঁরা। প্রস্তাবিত বিল অনুযায়ী, ১৯ অক্টোবরের মধ্যে সরকার কোনো চুক্তি করতে ব্যর্থ হলে আগামী ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত বিচ্ছেদ পিছিয়ে দেওয়ার আবেদন করতে হবে। ইইউ ওই তারিখ পর্যন্ত বিচ্ছেদ পেছাতে রাজি না হলে পার্লামেন্টের অনুমোদন সাপেক্ষে নতুন তারিখ নির্ধারিত হবে। বিরোধী আইনপ্রণেতাদের এই প্রস্তাব সরকারের হাত-পা বেঁধে ফেলার শামিল।
সোমবার ভাষণে এমন প্রস্তাবের বিপক্ষে অবস্থান নিতে আইনপ্রণেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বরিস বলেন, ‘ইইউর সঙ্গে সমঝোতায় যুক্তরাজ্যকে খোঁড়া করে দেবেন না। চুক্তিবিহীন বিচ্ছেদের সম্ভাবনা নাকচ করলে ইইউর কাছ থেকে কিছুই আদায় করা যাবে না।’ প্রয়োজনে সাধারণ নির্বাচন ডাকার ইঙ্গিত দিয়ে বরিস বলেন, কোনো পরিস্থিতিতেই তিনি বিচ্ছেদের দিনক্ষণ পেছানোর আবেদন করবেন না।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের বরাত দিয়ে স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, পার্লামেন্ট চুক্তিবিহীন বিচ্ছেদের বিরুদ্ধে আইন করতে সক্ষম হলে, সঙ্গে সঙ্গেই সাধারণ নির্বাচনের ডাক দেবেন বরিস। সে ক্ষেত্রে আগামী ১৪ অক্টোবর সেই নির্বাচন হতে পারে।
বিরোধীদলীয় নেতা জেরেমি করবিন সাধারণ নির্বাচনের সম্ভাবনাকে স্বাগত জানিয়েছেন। যেকোনো সময় নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত বলে জানান তিনি। তবে দলটির নর্দান আয়ারল্যান্ড-বিষয়ক ছায়া মন্ত্রী টোনি লয়েড বিবিসিকে বলেন, ৩১ অক্টোবর বিচ্ছেদ বিষয়ে কোনো সুরাহা হওয়ার আগে সাধারণ নির্বাচনের বিরোধিতা করবে লেবার।
যুক্তরাজ্যের ফিক্সড টার্ম পার্লামেন্ট অ্যাক্ট অনুযায়ী, আগাম নির্বাচনের জন্য দুই-তৃতীয়াংশ আইনপ্রণেতার সমর্থনের প্রয়োজন হবে।
NB:This post is copied from www.prothomalo.com
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা