অনলাইন ডেস্ক
মেগা ফাইনাল ম্যাচে ফরচুন বরিশালের শুরুটা ছিল চরম হতাশার। সুনিল নারাইনের ব্যাটিং তাণ্ডবে রীতিমতো ধোঁয়া দেখেছিল বরিশাল। সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে জয়ের সম্ভাবনা জাগিয়ে তোলে সাকিব আল হাসানের দল। কিন্তু শেষ দিকে তীরে এসে তরি ডুবল বরিশালের। বিপিএলে এর আগেও দুবার ফাইনালে উঠেছিল বরিশাল। দুবারই শূন্য হাতে ফিরতে হয়েছিল। এবার সাকিব আল হাসানের নেতৃত্বেও পারল না তারা। নিজেদের তৃতীয় ফাইনাল থেকেও শূন্য হাতে ফিরতে হলো কীর্তনখোলা নদীর পাড়ের দলটিকে। অন্যদিকে আগের দুবার ফাইনালে ওঠে বাজিমাত করা কুমিল্লা এবার ঘরে তুলল নিজেদের তৃতীয় শিরোপা।
আজ শুক্রবার ফাইনাল ম্যাচে কুমিল্লার দেওয়া ১৫২ রানের লক্ষ্যে নেমে শুরুতেই ধাক্কা খায় বরিশাল। দলীয় ৫ রানে হারায় ছন্দে থাকা মুনিম শাহরিয়ারকে। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে শহিদুলের বল উড়িয়ে মারতে গিয়ে মিড অনে ক্যাচ তুলে দেন তিনি। সাত বল খেলে রানের খাতাও খুলতে পারেননি মুনিম। শুরুর ধাক্কা কাটিয়ে দ্বিতীয় উইকেটে বরিশালকে পথ দেখান সৈকত আলী। উইকেটে এসে ঝড় তুলে মাত্র ২৬ বলে তুলে নেন হাফসেঞ্চুরি। মোট ৩৪ বলে ৫৮ রানের ইনিংস খেলে বরিশালের পথ সহজ করে দেন সৈকত। তিনি ফেরার পর ৩১ বলে ৩৩ করে বিদায় নেন গেইল।
উইকেটে এসে টিকতে পারেননি সাকিবও। অধিনায়ক ফিরলে ব্যাটিংয়ে ধস নামে বরিশালের। ফাইনালের চাপ সামলে জয়ের কাছে গিয়েও হার নিয়ে মাঠ ছাড়তে হলো বরিশালকে। এর আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেটে স্কোরবোর্ডে ১৫১ রান তুলেছে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস।
মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে কোয়ালিফায়ারের মতো এই ম্যাচেও নারাইনকে ওপেন করতে পাঠায় কুমিল্লা। দলের প্রত্যাশা ভালোভাবেই পূরণ করতে পেরেছেন তিনি। ব্যাটিং নেমে প্রথম ওভারেই মুজিবের বল দুইবার বাউন্ডারির বাইরে পাঠান নারাইন। এই ছন্দ ধরে রেখে মাত্র ২১ বলে তুলে নেন হাফসেঞ্চুরি। এর আগের ম্যাচেও মাত্র ১৩ বলে ফিফটি করেন এই তারকা অলরাউন্ডার। তবে নারাইনের সঙ্গে ওপেন করতে নামা লিটন দাস অবশ্য টিকতে পারেননি। তাঁকে নিজের প্রথম ওভারে বোলিংয়ে এসে ফিরিয়ে দেন সাকিব আল হাসান। ছয় বল খেলে লিটন করেন ৪ রান।
লিটন ফিরলেও পাওয়ার প্লেতে দলকে ভালো পুঁজি এনে দিতে ভূমিকা রাখেন নারাইন। ষষ্ঠ ওভারে অবশেষে তাঁর ঝড় থামান মেহেদী হাসান রানা। বরিশালের বোলারের স্লোয়ার বলে বাউন্ডারি হাঁকাতে গিয়ে টাইমিং গড়বড় করেন নারাইন। মেহেদীর বল তুলে মারতে গিয়ে লং অনে ক্যাচ তুলে দেন তিনি। সেখানে থাকা নাজমুল শান্ত বল মুঠোয় নিয়ে বেইলি ডান্সে মাতেন শান্ত। ২৩ বলে ৫৭ রানের ইনিংস উপহার দিয়ে ফেরেন নারাইন।
নারাইনকে হারানোর পর পাল্টে যায় কুমিল্লার ব্যাটিংয়ের চিত্র। বাকি সময় উইকেটে খুব হতাশাই দেখেছে কুমিল্লা। দাপুটে বোলিংয়ে ঘুরে দাঁড়িয়ে কুমিল্লারকে নাড়িয়ে দিয়েছেন সাকিব-মুজিবরা। নারাইন ফেরার পরের ওভারেই রান আউটের খেসারতে মাহমুদুলকে হারায় কুমিল্লা। ফাইনাল ম্যাচে দায়িত্ব নিতে পারেননি ফাফ ডু প্লেসিও। মুজিবের বলেই বোল্ড হয়ে ফেরেন ডু প্লেসি। ৭ বলে ৪ রান করেন প্রোটিয়া তারকা।
মাঝপথে দ্রুত উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে যায় কুমিল্লা। কমতে থাকে রানের গতি। পাওয়ার প্লেতে ৭৩ রান তোলা কুমিল্লা পরের ওভারগুলোতে বেশি রান তুলতে পারেনি। মঈন আলী উইকেটে থেকে চেষ্টা করেছেন রানের গতি বাড়াতে। তবে বাকিদের আশা-যাওয়ার মিছিলে আগ্রাসী হতে পারেননি তিনি। শেষ পর্যন্ত ১৫১ রান নিয়ে ইনিংস শেষ করে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস। ৩২ বলে ৩৮ রান করেন মঈন। দুই চার ও এক বাউন্ডারিতে সাজানো ছিল তাঁর ইনিংস।
ফরচুন বরিশালের হয়ে বল হাতে ২৭ রান খরচায় দুটি উইকেট নেন মুজিব উর রহমান। শফিকুলও নিয়েছেন দুটি উইকেট। ৩০ রান দিয়ে সাকিব আল হাসান নিয়েছেন এক উইকেট। মেহেদী হাসান রানা ও ব্রাভোর শিকারও একটি।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস : ২০ ওভারে ১৫১/৯ (নারাইন ৫৭, লিটন ৪, মাহমুদুল ৮, ডু প্লেসি ৪, ইমরুল ১২, আরিফুল ০, মঈন ৩৮, আবু হায়দার ১৯, শহিদুল ০, তানভীর ০ , মুস্তাফিজ ০ ; মুজিব ৪-০-২৭-২ , সাকিব ৪-০-৩০-১, রানা ৪-০-৩৪-১, শফিকুল ৪-০-৩১-২ ও ব্রাভো ৪-০-২৬-১)।
ফরচুন বরিশাল : ২০ ওভারে ১৫০/৮ (মুনিম ০, সৈকত ৫৮, গেইল ৩৩, সোহান ১৪, সাকিব ৭, নাজমুল ১২, ব্রাভো ১, তৌহিদ ৯, মুজিব ৪; মুস্তাফিজ ৪-০-৩০-১, নারাইন ৪-০-১৫-২, মঈন ৩-০-২৮-০, শহিদুল ৪-০-৩৬-১, আবু হায়দার ১-০-১৪-০, তানভীর ৪-০-২৫-২)।
ফল : এক রানে জয়ী কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস।
fblsk
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা