বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের বহির্বিভাগের টিকেট কাটা নিয়ে কথাকাটাটির মতো তুচ্ছ ঘটনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু সংখ্যক (২৫-৩০ জন) শিক্ষার্থীদের অতর্কিত হামলায় অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা, আনসার, ড্রাইভার-কর্মচারীসহ কমপক্ষে ২০ জন আহত হয়েছেন।
হামলাকারীরা লাঠি, সোটা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১টি এ্যাম্বুলেন্স, ১টি বাসসহ কমপক্ষে ৮টি গাড়ি ভাঙচুর করেছে। এসময় রোগী, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত চিকিৎসক, কর্মকর্তা, নার্স, কর্মচারীসহ সাধারণ মানুষের মধ্যে তীব্র আতঙ্ক বিরাজ করে।
হামলাকারীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের বি ব্লকের প্রধান ফটকের কাচের দরজা সম্পূর্ণরূপে ভেঙে ফেলে। হামলার ঘটনার সিসিটিভির ফুটেজ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে সংরক্ষিত রয়েছে। এই ন্যাক্কারজনক হামলার ঘটনায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে মামলা দায়ের করার প্রস্তুতি চলছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সেকশন অফিসার জন সংযোগ প্রশান্ত কুমার মজুমদার জানান, গত ২৭ ফেব্রুয়ারি আনুমানিক দুপুর ১টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী পিয়াস, সাব্বির, নাঈম ইসলাম, সাগর শাহরিয়ার নিয়ম বহির্ভূতভাবে টিকেট চাওয়া নিয়ে পূবালী ব্যাংকের কর্মকর্তা মোঃ খালিদ হোসেনের সাথে কথা কাটাকাটি হয়। এসময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মোঃ আলমগীর হোসেন ওই চার শিক্ষার্থীকে অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালক (হাসপাতাল) মহোদয়ের কক্ষে নিয়ে যান।
পরিচালক (হাসপাতাল) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে মাহবুবুল হক বিষয়টির সমাধান করে দেন। কিন্তু পরিচালক (হাসপাতাল) মহোদয়ের কক্ষ থেকে বের হয়ে ওই চার শিক্ষার্থী সি ব্লকের সামনে প্রশাসনিক কর্মকর্তা মোঃ আলমগীর হোসেনকে মারধর করে আহত করে। এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তব্যরত আনসার সদস্যসহ অন্যান্যরা এগিয়ে যান এবং ওই চার শিক্ষার্থীকে পুনরায় পরিচালক হাসপাতালের কক্ষে নিয়ে যান। এ ঘটনার খবর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে জানানোর পর ঢাবির ২ জন সহকারী প্রক্টর ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জসিমউদ্দিন হলের ভিপি মোঃ ফরাদ অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালক (হাসপাতাল) অফিসে আসেন এবং এই ঘটনার খবর শাহবাগ থানার পুলিশ প্রশাসনকেও অবহিত করা হয়।
পরবর্তীতে শাহবাগ থানা পুলিশ প্রশাসনের উপস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালক (হাসপাতাল) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে মাহবুবুল হক, প্রক্টর অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মোজাফফর আহমেদ, সহকারী প্রক্টর কে এম তারিকুল ইসলামসহ ঢাবি কর্তৃপক্ষ উদ্ভূত পরিস্থিতি ও বিষয়টি সমাধানের লক্ষে আলোচনায় বসেন। কিন্তু আলোচনারত অবস্থায় বিকাল ৩টা ৫০ মিনিটে কবি জসিমউদ্দিন হলসহ ঢাবির ২৫-৩০ জন শিক্ষার্থী স্বশস্ত্র অবস্থায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ ও ২নং গেট দিয়ে প্রবেশ করে গাড়ি ভাঙচুর করে এবং অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা, আনসার সদস্য, ড্রাইভার ও কর্মচারীসহ কমপক্ষে ২০ জনকে পিটিয়ে আহত করে।
পরবর্তীতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই চার শিক্ষার্থীকে শাহবাগ থানা পুলিশ তাঁদের থানা হেফাজতে নিয়ে যান। ঢাবি শিক্ষার্থীদের হমলায় আহতরা বর্তমানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
আহতদের মধ্যে রয়েছেন প্রশাসনিক কর্মকর্তা মোঃ আলমগীর হোসেন, পরিবহন সুপারভাইজার সুরুজ, আনসার সদস্য মোঃ মনজুরুল ইসলাম, মোঃ নাজমুল ইসলাম, মোহাম্মদ আলী, মোঃ জহিরুল ইসলাম, মোঃ ইউসুফ আলী, মোঃ জুবায়ের হোসেন, মোঃ টিপু সুলতান, মোঃ শামীম হোসেন, অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী ইদ্রিস, রুবেল, জামাল, ইসমাইল, আজাদ, জামাল-২, উজ্জ্বল, জনি, আল আমিন, চয়ন বিশ্বাস, মাসুদ সিকদার উল্লেখযোগ্য।
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা