অনলাইন ডেস্ক
আজ মঙ্গলবার দুপুরে নীলফামারী শহরের মশিউর রহমান কলেজ মাঠে সদর উপজেলা এবং সৈয়দপুর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি একথা বলেন।
তিনি বলেন, দেশ স্বাধীন করে আমরা যে সাম্প্রদায়িক রাজনীতি বন্ধ করেছিলাম, জিয়াউর রহমান ক্ষতায় এসে বললেন ধর্মভিত্তিক রাষ্ট্র চলবে। আবার সেই ধর্মীয় রাজনীতি শুরু করলেন। গোলাম আযমকে এনে নাগরিকত্ব ফেরত দিলেন। মুক্তিযুদ্ধের প্রত্যক্ষ বিরোধিতাকারী মশিউর রহমান যাদু মিয়াকে সিনিয়র মন্ত্রী বানালেন।
দেশ স্বাধীনের আজ ৫০ বছর উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই ৫০ বছরের ৩০ বছর যাদু মিয়ারা যাদুর খেল দেখিয়েছেন। বিএনপির নেতা জিয়াউর রহমান আগাইরা বাগাইরা টাউট বাটপার মিলিটারি নিয়ে ছিলেন ১০ বছর। খেলাদা জিয়া ছিলেন ১০ বছর। এরশাদ ছিলেন ১০ বছর। আমরা বঙ্গবন্ধুর আমলে সাড়ে তিন বছর, শেখ হাসিনার আমলে আগে ৫ বছর, এখন সাড়ে ১২ বছর, অর্থাৎ সবমিলে ২১ বছরের মতো ক্ষমতায় বঙ্গবন্ধু এবং তার রক্তের উত্তরাধিকারী, আর ৩০ বছর ওরা। আমরা একদিকে যেমন বঙ্গবন্ধুর শতবার্ষিকী পালন করছি, একইসাথে স্বাধীনতার ৫০ বছর আমরা পালন করছি। এই যে উন্নয় দেখেন এই উন্নয়ন কত বছরের হিসাবটা বুঝতে হবে।
সেই ৩০ বছরে উত্তরবঙ্গে এবং নীলফামারীতে কী কী উন্নয়ন হয়েছে প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, রেল-টেল যা ছিল সেটাও বন্ধ করে দিয়ে গেছে। আওয়ামী লীগের ২১ বছরে কী কী হয়েছে হিসাব মিলান। একসময় শুনতাম বিদ্যুৎ কখন আসবে, এখন যায় কখন সেটা বুঝতে পানি না। এখানে ইপিজেড হয়েছে। মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। স্কুল কলেজ, রাস্তা-ঘাট, বাড়ি বাড়ি বিদ্যুৎ, প্রাইমারি স্কুলের ৪ তলা বিল্ডিং হয়েছে, মানুষের আয় বেড়েছে।
৩০ বছর দেশ উল্টোদিকে গেছে উল্লেখ করে আজকের প্রজম্মের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, বাংলাদেশকে একটি ব্যর্থ এবং অকার্যকর রাষ্ট্র বানানোর জন্য বঙ্গবন্ধুর খুনিরা যারা ক্ষতায় ছিল এবং খুনের সুবিধাভোগি তারা দেশকে উল্টো পথে নিয়েছেন। সেটাকে আবার সঠিক পথে এনে উন্নয়ন করা হচ্ছে। এখন আর অস্ত্র হাতে নিয়ে যুদ্ধ করে দেশকে স্বাধীন করতে হবে না। এখন দেশকে রক্ষা করতে হবে।
বক্তৃতা শেষে নীলফামারী জেলার স্মৃতিকথা নিয়ে ‘রণাঙ্গনে বীর বাঙালি’ গ্রন্থের মোড়ক উম্মোচন করেন প্রধান অতিথি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী।
এ সময় জেলা প্রশাসক মো. হাফিজুর রহমান চৌধুরীর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা দেন নীলফামারী-২ আসনের সংসদ সদস্য আসাদুজ্জামান নূর, সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য রাবেয়া আলীম, সাবেক সংসদ সদস্য জোনাব আলী, সাবেক সংসদ সদস্য শামসুদ্দোহা, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা জয়নাল আবেদীন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এ এস এম মোক্তারুজ্জামান, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি হাফিজুর রশিদ মঞ্জু, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহিদ মাহমুদ, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জেসমিন নাহার, সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডিপুটি কমান্ডার কান্তি ভূষণ কুণ্ডু, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুজার রহমান, সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার সহিদুল ইসলাম প্রমুখ।
বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় সংসদ সদস্য আসাদুজ্জামান নূর বলেন, আমরা একটা রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতা অর্জন করেছি। যুদ্ধের নেতৃত্ব দিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি শারীরিকভাবে উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু প্রতিটি মুক্তিযোদ্ধা, এবং এদেশের প্রত্যেকটি মানুষ সব সময় তারা মনে করেছেন বঙ্গবন্ধু তাদের পাশে আছেন, তাদের সঙ্গে আছেন। তার কণ্ঠস্বর যখন স্বাধীন বাংলা বেতারে বাজতো, তার সেই বজ্রকণ্ঠ শুনে হাজার হাজার মুক্তিযোদ্ধা উদ্দিপ্ত হতো।
তিনি আরো বলেন, আজকে দেশ স্বাধীন হয়েছে কিন্তু বঙ্গবন্ধুকে আমরা হারিয়েছি। যারা এই দেশের স্বাধীনতার শত্রু ছিল তারা দেশি এবং বিদেশি চক্রের সঙ্গে চক্রান্ত করে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছে। তারা মনে করেছে বঙ্গবন্ধু এবং তার পরিবারকে হত্যা করতে পারলে এই বাংলাদেশকে আবার পাকিস্তান বানানো যাবে। কিন্তু তাদের যে ষড়যন্ত্র, তাদের যে অপকৌশল তাদের যে কুৎসিত উদ্যেশ্য সেটি সফল হয়নি। বাংলাদেশের মানুষ বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আবারো ঘুড়ে দাঁড়িয়েছেন।
অনুষ্ঠানের মাধ্যমে জেলা সদর এবং সৈয়দপুর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের উদ্বোধন করেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী। সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স নির্মানে এক কোটি ৮৩ লাখ ৩৫ হাজার এবং সৈয়দপুর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স নির্মানে এক কোটি ৭৬ লাখ ২১ হাজার টাকা ব্যয় হয়েছে।
fblsk
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা