অনলাইন ডেস্ক
তিনি মন্তব্য করে বলেছেন, ‘আজকে আর সেই নাম মুছতে পারবে না। যেখানে মিথ্যা ঘোষক হওয়ার চেষ্টা হয়েছিল, আন্তর্জাতিকভাবে সেই ঘোষকের আর কোনো ঠিকানা থাকবে না। কারণ বিশ্বনেতৃবৃন্দ এটি দেখছেন, প্রচার করছেন এবং বিভিন্ন জায়গায় রেজুলেশন হচ্ছে যে, ২৬ মার্চ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানই স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন।’
রবিবার (২১ মার্চ) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনাসভায় ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে তিনি এ কথা বলেছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘দুর্ভাগ্যের বিষয় হলো যে দীর্ঘ সংগ্রামের পথ বেয়ে বঙ্গবন্ধু আমাদের যে স্বাধীনতা দিয়ে গেছেন অথচ সেই স্বাধীন দেশেই তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হলো। শুধু হত্যাই নয়, এর পর ইতিহাস থেকে তার নামটাও মুছে ফেলার আপ্রাণ চেষ্টা। এর আগে স্বাধীনতার ঘোষক দাঁড় করানো হলো। স্বাধীনতার ইতিহাস পাল্টে দেওয়া হলো। এই বাংলাদেশে এমন একটা সময় ছিলো, যে তার (বঙ্গবন্ধুর) নামটা পর্যন্ত নেওয়া যাবে না। তার নামটা নেওয়াও নিষিদ্ধ ছিলো। বঙ্গবন্ধুর সেই ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ, যে ভাষণ এদেশের মানুষকে উদ্বুদ্ধ করেছিলো সে ভাষণ নিষিদ্ধ ছিলো।’
তিনি বলেছেন, ‘‘মুক্তিযোদ্ধারা ‘মুক্তিযুদ্ধ করেছি’, বলার সাহসও পায়নি। তারা সেই সাহস হারিয়ে ফেলেছে। কারণ তখন এটা বললেই নির্যাতন করা হতো। যারা অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলদারদের চাটুকারিতা করেছে, তারাই সবকিছু বলতে পারতো। সত্যকে সত্য বলা, সত্য ইতিহাস তুলে ধরা নিষিদ্ধ ছিলো।’’
বঙ্গবন্ধুকে তারই হাতে গড়া বাংলাদেশে হত্যা করা হবে এটা কখনও চিন্তাও করেননি মন্তব্য করেন শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘১৫ আগষ্ট ১৯৭৫ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে, যে তখন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি তাকে হত্যা করল। একই সঙ্গে আমার মা, ছোট তিনভাই, কামাল জামালের নবপরিণীতা বধূ, আমার চাচাসহ আমাদের পরিবারের আরও কয়েকজন সদস্য। এ ছাড়াও বঙ্গবন্ধুর মিলিটারি সেক্রেটারিসহ সকলকে নির্মমভাবে হত্যা করা হলো। এইভাবে যে তাদের হত্যা করা হলো এটা কখনও কল্পনাও করতে পারিনি, বিশ্বাসও করতে পারিনি। কারণ ছিল, বাংলাদেশের মানুষকে তিনি গভীরভাবে ভালোবেসে ছিলেন।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা বেঁচে আছি, মাত্র দু’বোন। কিন্তু এটা আমাদের দায়িত্ব যে আমরা যতটুকু জানি, সেটা দেশের মানুষকে জানাতে হবে। তার ছেলেবেলা সম্পর্কে, তার জীবণ সম্পর্কে, তার আন্দোলন সম্পর্কে যতুটুকু আমাদের স্মৃতিতে আছে আমরা তা তুলে ধরছি। এজন্যই তুলে ধরছি যে এগুলো দেশের মানুষে জানা উচিত।’
এ সময় দল ও জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে তিনি বলেছেন, ‘আমি বাংলাদেশের মানুষের প্রতি কৃতজ্ঞ ও আমার দলের নেতাকর্মীদের কাছেও কৃতজ্ঞ। কারণ তারা ভোট দিয়েছে বলেই আমরা আজ ক্ষমতায়। যার কারণে রাষ্ট্রীয়ভাবে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালন করছি, নানা অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে উদযাপন করছি। এ উপলক্ষে বহু দেশি-বিদেশি অতিথি, রাষ্ট্রপ্রধান ও সরকার প্রধান এসেছেন, আসছেন। অনেকেই বার্তা পাঠাচ্ছেন।’
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘ইংরেজরা এদেশের মানুষের আত্মগরিমা ধ্বংস করে দরিদ্র্য করে দিয়ে গেছে। জাতির পিতা এসে এদেশের মানুষকে আত্মমর্যাদাশীল করতে, স্বনির্ভর ও স্বাবলম্বী করতে চেয়েছেন। আমরাও তার পদাঙ্ক অনুসরণ করছি। তিনি যা করেছেন, সেগুলোই করে যাচ্ছি। ৭৫ থেকে ৯৬ পর্যন্ত একটা কালো অধ্যায় ছিল, ২০০১ থেকে ২০০৬ আরেকটি কালো অধ্যায়। আমরা সেখান থেকে উত্তরণ করেছি। জাতির পিতার দেখানো পথে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি। ৪১ সালের মধ্যে উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলার কাজ করছি।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘করোনাভাইরাস আবার নতুন করে দেখা দিয়েছে। আমি সবাইকে অনুরোধ করবো স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে। এ সময় আমাদের খেয়াল রাখতে হবে যেনো মানুষ অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।’
fblsk
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা