দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা দিনদিন বাড়ছে। এই প্রাণঘাতী ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।
ইতোমধ্যে সাধারণ ছুটি বাড়িয়ে ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত করা হয়েছে। একইসঙ্গে বাড়ানো হয়েছে সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটিও।
করোনার প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় আসছে রমজান ও ঈদুল ফিতরের ছুটি সমন্বয় করে উদ্ভুত পরিস্থিতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি আগামী ৩০ মে পর্যন্ত দীর্ঘায়িত হচ্ছে।
দুই একদিনের মধ্যে এমন ঘোষণা আসতে পারে। এ অবস্থায় শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় ক্ষতি পুষিয়ে নিতে নানা ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার।
এর আগেও দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ঈদুল ফিতরের পর খোলার সিদ্ধান্ত নেয়ার বিষয়ে গণভবনে অনানুষ্ঠানিক আলোচনা হয়েছে বলেও জানা গেছে।
এদিকে ঘোষিত সাধারণ ছুটি পহেলা বৈশাখের ছুটি সঙ্গে সমন্বয় করে ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত দীর্ঘায়িত হয়েছে। আবার এর ১০ দিন পর শুরু হচ্ছে পবিত্র রমজান।
ফলে রমজান এবং ঈদুল ফিতরের ছুটি সমন্বয় করে আগামী ৩০ মে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো খোলার সিদ্ধান্ত আসতে পারে।
এছাড়া রমজানের আগে আবাসিক শিক্ষার্থীরা দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আসলে করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকি থেকে যায়।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার পাশাপাশি বন্ধ করা হয়েছে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের আবাসিক হলগুলোও। এতে করে শিক্ষার্থীরা বাড়িতে ফিরে গিয়েছেন।
এখন যদি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চালু করা হয়, তাহলে সকল শিক্ষার্থীই সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে ফিরে আসবে, এতে করে ঝুঁকি আরও বেড়ে যেতে পারে। তাই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঈদুল ফিতরের পরে খোলার সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে জানা গেছে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেছেন, এই পরিস্থিতিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান একবারে ঈদের পর খোলার ঘোষণা দেয়ার চিন্তাভাবনা চলছে। কেননা ২৪ এপ্রিল রোজার ছুটি শুরু হয়ে যাবে।
এদিকে সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ১৭ মার্চ থেকে বন্ধ। বিদ্যমান শিক্ষাপঞ্জি অনুযায়ী, ২৪ এপ্রিল রোজার ছুটি শুরু। করোনা পরিস্থিতির উন্নতি ঘটলেও ১৪ এপ্রিলের পর রোজার ছুটির আগ পর্যন্ত কর্মদিবস আছে মাত্র ৬টি।
এ ব্যাপারে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন বলেন, আমাদের এখনকার অগ্রাধিকার হচ্ছে বিদ্যমান পরিস্থিতি থেকে শিক্ষার্থীদের সুরক্ষা। এরপর পরিস্থিতির উন্নতি হলে ক্ষয়ক্ষতি পর্যালোচনা করে পরবর্তী কর্মসূচি নির্ধারণ করা হবে।
এর আগে গণভবনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি দীর্ঘায়িত করার জন্য একটি বৈঠকে অনানুষ্ঠিক আলোচনার সিদ্ধান্ত হয়েছিল। সেখানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাড়াও অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তাফা কামাল, খাদ্যমন্ত্রী, জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী, ত্রাণ ও দুর্যোগ প্রতিমন্ত্রীসহ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সচিব পর্যায়ের কর্মকর্তারা এতে উপস্থিত থাকার কথা ছিল।
আর করোনার কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি দীর্ঘায়িত হলে শিক্ষার্থীদের পড়ালেখা যাতে ব্যাহত না হয় এর জন্য ইতোমধ্যে ব্যবস্থা নিয়েছে সরকার।
প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের পাঠদানের ভিডিও ক্লাস বাংলাদেশ সংসদ টেলিভিশনে সমপ্রচার করা হচ্ছে। ছুটির পর ক্লাস খুললে টিভির ক্লাসের মূল্যায়ন নেয়া হবে জানায় মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর।
এর অংশ হিসেবে গত ২৯ মার্চ থেকে মাধ্যমিক স্তরের পাঠদান চলছে সংসদ বাংলাদেশ টেলিভিশনে। একই টিভিতে আজ দুপুর ২টায় শুরু হচ্ছে প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের পাঠদান। শিশু থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ৬টি শ্রেণির ২০ মিনিট করে আলাদা পাঠদান করা হবে।
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা