প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের দাবীতে নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের গণঅবস্থান কর্মসূচি শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এ গণ অবস্থান শুরু করেছেন শিক্ষকেরা।
গণঅবস্থান কর্মসূচিতে শিক্ষক নেতৃবৃন্দ বলেন, নীতিমালা-২০১৮ পরিশিষ্ট ‘খ’-এ নিম্ন মাধ্যমিক (৬ষ্ঠ-৮ম) শ্রেণী পর্যন্ত শিক্ষার্থী চাওয়া হয়েছে ১৫০জন। কিন্তু ‘খ’ এ নিম্ন মাধ্যমিক (৬ষ্ঠ-৮ম) শ্রেণী পর্যন্ত পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ও ফলাফল চাওয়া হয়নি। তাহলে নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলো কোন মানদন্ডে এমপিও করা হবে বিষয়টি আমাদের নিকট স্পষ্ট নয়। পরিশিষ্ট ‘ক’ এ (৬ষ্ঠ-১০ম) শ্রেণী পর্যন্ত সহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থী চাওয়া হয়েছে শহর পর্যায়ে ৩০০ জন এবং মফস্বলে ২০০ জন। আবার বালিকা বিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে শিক্ষার্থী চাওয়া হয়েছে শহরে ২০০ জন মফ্স্বলে ১০০ জন কিন্তু পরিশিষ্ট ‘খ’ এ উভয় প্রতিষ্ঠানের জন্য পরীক্ষার্থী চাওয়া হয়েছে ৪০ জন। যদি ২০০ জনে ৪০ জন পরীক্ষার্থী হয় সে অনুযায়ী আনুপাতিক হারে ১৫০ জনে ২৬ জন এবং ১০০ জনে হতে হবে ১৩ জন।
পরিশিষ্ট ‘খ’ কলেজ (উচ্চ-মাধ্যমিক) শহর সহশিক্ষায় (১১-১২) ২০০ জন শিক্ষার্থীর ক্ষেত্রে পরীক্ষার্থী চাওয়া হয়েছে ৬০ জন আবার নারীশিক্ষায় ১৫০ জন এ পরীক্ষার্থী চাওয়া হয়েছে ৬০ জন। ২০০ জন শিক্ষার্থীর বিপরীতে ৬০ জন পরীক্ষার্থী চাওয়া হলে ১৫০ জনে ৪৫ জন হবে। মফস্বলে সহশিক্ষা ১৫০ জন শিক্ষার্থীতে পরীক্ষার্থী চাওয়া হয়েছে ৪০ জন। নারী শিক্ষায় ১২০ শিক্ষার্থীর মধ্যে চাওয়া হয়েছে ৪০ জন পরীক্ষার্থী। ১৫০ জন শিক্ষার্থীর ক্ষেত্রে ৪০ জন পরীক্ষার্থী হলে ১২০ জনের ক্ষেত্রে হবে ৩২ জন। পরিশিষ্ট ‘খ’ স্নাতকে (১১-১৫) তে সহশিক্ষায় শহরে ২৫০ জন শিক্ষার্থীতে পরীক্ষার্থী ৬০ জন পরীক্ষার্থী কিন্তু এখানে স্নাতক শিক্ষার্থী চাওয়া হয়েছে ৫০ জন কিন্তু পরীক্ষার্থী ৬০ জন, যা সম্পূর্ণ অসংগতিপূর্ণ।
আবার নারীশিক্ষার জন্য শিক্ষার্থী ১৫০ জনের ডিগ্রী স্তরে শিক্ষার্থী ৩০জন এর বিপরীতে ৪০জন পরীক্ষার্থী চাওয়া হয়েছে এবং এইচএসসি বিএম স্তরে প্রতি ট্রেডে শিক্ষার্থী ৩০ জনের বিপরীতে ৪০জন পরীক্ষার্থী চাওয়া হয়েছে। যাহা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক। অনুরূপভাবে মাদরাসা, কারিগরি ও বিএম কলেজে উল্লেখিত সমস্যাগুলো ২০১৮ এমপিও নীতিমালায় বিদ্যমান। আমাদের জানামতে আবেদন চাওয়ার সময় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাবলিক পরীক্ষার ফলাফলের জাতীয় হার ৭০% এর নিচে ছিল।
এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানের শুধুমাত্র স্তর এমপিও’র নামে শিক্ষক এমপিও’র পরিবর্তে প্রতিষ্ঠান এমপিও বলে চালিয়ে দেওয়ার অপকৌশল আমরা দেখতে পাচ্ছি।
বক্তারা বলেন, এই ভুলে ভরা নানা অসংগতিপূর্ণ নীতিমালা অনুসরণ করে এমপিও তালিকা প্রকাশ হলে, বাংলাদেশের বেসরকারি শিক্ষা ব্যবস্থা অত্যন্ত ক্ষতিগ্রস্থ হবে এবং সরকার ব্যাপক জনসমালোচনার মুখে পড়বে এবং জন অসন্তোষ তৈরী হবে। সংগত কারণে এই অসংগতি পূর্ণ ও ভুলেভরা নীতিমালা অনুসরণ করে এমপিও তালিকা প্রকাশ না করার জন্য সবিনয় অনুরোধ জানাচ্ছি।
দীর্ঘ অপেক্ষার পর প্রকাশিত এমপিও প্রাপ্তি থেকে স্বীকৃতি প্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানগুলি বাদ পড়বে। আমরা বিশ্বাস করি একমাত্র মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাতের মাধ্যমেই এই জটিলতা নিরসন সম্ভব। এই প্রতিষ্ঠানগুলো এমপিও নীতিমালা ২০১৮ প্রকাশের প্রায় ৫-১৮ বছর পূর্বে প্রতিষ্ঠিত হয়ে স্বীকৃতি প্রাপ্ত হয়েছে। সেই মুহুর্তে স্বীকৃতিই মানদন্ড অনুসরণ করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত হয়েছে। সরকারের আর্থিক সংকটের কারণে তখন যে সকল প্রতিষ্ঠানগুলো এমপিওভুক্ত হতে পারে নাই, বর্তমানে যেহেতু দেশে অর্থের সংকট নাই তাই আমরা এই নীতিমালা ২০১৮ প্রকাশের পূর্বে অতীতে যে মানদন্ড অনুসরণ করে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিও ভূক্ত হয়েছে, সে মানদন্ড অনুসরণ করে স্বীকৃতিপ্রাপ্ত শুধুমাত্র নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো একযোগে এমপিওভুক্ত করার জোর দাবী জানাচ্ছি।
আগামীকাল ১৬ অক্টোবর ২০১৯ বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে গণঅবস্থান কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। যদি আগামীকাল সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে প্রধানমন্ত্রীর সাথে স্বাক্ষাতের কোন নির্দেশনা না পাওয়া যায় তাহলে আগামী ১৭ অক্টোবর’১৯ বৃহস্পতিবার সকাল ১১ টায় গণঅবস্থান কর্মসূচি থেকে প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাতের উদ্দেশ্যে পদযাত্রা করা হবে। পদযাত্রায় বাঁধা আসলে তাৎক্ষণিক ভাবে আমরণ অনশনে যাওয়া হবে।
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা