বাংলাদেশে প্রতি ১১০ জনে ১ জন শিশু অটিজমে ভুগছে। যা মোট জনসংখ্যার ১ দশমিক ৫ মিলিয়ন বা ১৫ লাখ। একইভাবে (১ এপ্রিল ২০১৯) সমাজ সেবা অধিদপ্তরের ডিজএ্যাবেলিটি ডিটেকশন সার্ভে (ডিডিএস জরিপ) অনুযায়ী দেশে ১৬ লাখ ৪৪ হাজার ৬০৮ জন কর্মঅক্ষম ব্যক্তি রয়েছে। যারমধ্যে অটিজম স্পেক্ট্রাম ডিজঅর্ডার (এএসডি) অর্থাৎ মস্তিষ্কের স্বাভাবিক বিকাশজনিত সমস্যায় ভোগা মানুষের সংখ্যা ৪৭ হাজার ৪০০ জন। আর ১৮ থেকে ৩৬ বছর বয়সীদের ক্ষেত্রে প্রতি ১০ হাজারে ১৭ ও ১ থেকে ৯ বছর বয়সী শিশুদের মধ্যে ১৫ জন এই সমস্যায় ভুগছেন।
শনিবার (১ মার্চ) সকালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) ই ব্লকের ইনস্টিটিউট অফ পেডিয়াট্রিক নিউরো-ডিজঅর্ডার অ্যান্ড অটিজম (ইপনা) এর সেমিনার কক্ষে আয়োজিত নিউরো ডেভোলপমেন্ট ডিজঅর্ডার বিষয়ক এক সভায় বিশেষজ্ঞরা এমন তথ্য জানান।
সভায় অটিজম বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন ইপনার পরিচালক অধ্যাপক ডা. শাহীন আকতার। আরও উপস্থিত ছিলেন ইপনার উপ-পরিচালক (একাডেমি) সহযোগী অধ্যাপক ডা. কানিজ ফাতেমা, উপ-প্রকল্প পরিচালক (প্রশাসন) সহযোগী অধ্যাপক ডা. গোপেন কুমার কুন্ডু, ট্রেনিং কো-অর্ডিনেটর ডা. মাজহারুল মান্নান পার্থ, মিডিয়া এ্যান্ড পাবলিকেশন কর্মকর্তা মোহাম্মদ ইমদাদুল হক হাওলাদার সহ প্রমুখ।
সভায় চিকিৎসা বিশেষজ্ঞরা বলেন, অটিজম কোন রোগ নয় বরং মস্তিষ্কের একটি বিকাশজনিত সমস্যা। এতে আক্রান্ত শিশু অন্যের সঙ্গে যোগাযোগ ও সামাজিক সম্পর্ক তৈরি করতে পারেনা। কম বা বেশি মাত্রায় একই কাজ বা আচরণ বারবার করতে থাকে। তবে দ্রুত সনাক্তকরণে ও যথোপযোগী ব্যবস্থা নিলে এই শিশুরাও অন্যান্যদর মত উন্নতি করতে পারে। তাই শিশু যদি ৬ মাসের মধ্যে স্বতঃস্ফ‚র্তভাবে না হাসে। ৯ মাসের মধ্যে তার চারপাশে যত্নকারীদের কথা, শব্দ, হাসি ও তাদের মুখের ভাবভঙ্গির সঙ্গে ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ামূলক আচরণ না করে। পাশাপাশি ১ বছরের মধ্যে মুখে কোন শব্দ না করে বা আঙ্গুল দিয়ে কোন কিছু না দেখায়, হাত শক্ত করে না ধরে। এছাড়া এক বছরের মধ্যে কোন ধরনের অঙ্গভঙ্গি ও দেড় বছরের মধ্যে একটি শব্দ না বলা ও অর্জিত যোগাযোগ দক্ষতা বা সামাজিক দক্ষতা হারিয়ে ফেলে। সেক্ষেত্রে দ্রুত স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে যোগাযোগ করতে হবে।
এ জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অফ পেডিয়াট্রিক নিউরো-ডিজঅর্ডার অ্যান্ড অটিজম (ইপনা) তে অটিজম বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টির পাশাপাশি অটিজমকে চিহ্নিত করা, চিকিৎসা, পুনবার্সন, প্রশিক্ষণ ও শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। এতে অটিস্টিক শিশুর পিতামাতাদের পাশে রাষ্ট্র, সরকার, সমাজের বিভিন্ন শক্তি ও পেশাজীবীরা থাকায় তাঁদের অসহায়ত্ববোধ কিছুটা হলেও দূর হয়েছে। অটিস্টিক শিশুদের প্রতি সবারই মানবিক দায়িত্ব রয়েছে। এই বিশেষ আবেগ ও অনুভূতি দিয়ে তাদের সেবায় সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা