অনলাইন ডেস্ক
এসব আর্থিক সহায়তার মধ্যে ৮৩ দশমিক ৯৭ শতাংশই কারখানামালিকদের ব্যবসায়িক সংকট মোকাবিলায়। আর বেতন-ভাতা বাবদ শ্রমিকদের জন্য বরাদ্দ ছিল মাত্র ১৬ দশমিক ৩ শতাংশ।
বৃহস্পতিবার (১৭ ডিসেম্বর) ‘তৈরি পোশাক খাতে করোনাভাইরাস উদ্ভূত সংকট: সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও করণীয়’ শীর্ষক এক ওয়েবিনারে এই তথ্য তুলে ধরা হয়।
টিআইবি রিপোর্টে বলা হয়েছে, চার দশক ধরে বিকশিত তৈরি পোশাক খাত এখনো প্রণোদনার ওপর নির্ভরশীল। মালিকপক্ষ সরকারের ওপর প্রভাব ও চাপ প্রয়োগ করে নিজেদের সুবিধা আদায় করে। করোনার মতো সংকট মোকাবিলায় এই খাতের নিজস্ব সক্ষমতা এখনো তৈরি হয়নি। মালিকপক্ষ ব্যবসার সম্ভাব্য ক্ষতি পুষিয়ে নিতে সরকারের কাছে বিভিন্ন প্রণোদনা আদায় করলেও শ্রমিকদের অধিকার, সুরক্ষা ও নিরাপত্তায় কোনো ধরনের পরিকল্পনা ও কার্যকর কৌশল প্রণয়ন করেনি। বরং করোনা সংকটের প্রাথমিক পর্যায়ে শ্রমিকের স্বার্থ বিবেচনায় না নিয়ে শুধু ব্যবসায়িক স্বার্থে আইনের অপব্যবহারের মাধ্যমে কারখানা লে-অফ করেছে।
টিআইবি বলছে, করোনা সংকটকালে প্রণোদনার অর্থ প্রাপ্তিতে জটিলতা, কার্যাদেশ না থাকা ও ক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলো বকেয়া পরিশোধে বিলম্ব করায় এপ্রিল মাস থেকে অধিকাংশ কারখানা নিয়মিত মজুরি দিতে পারেনি। উদ্ভূত সংকট মোকাবিলায় কিছু কারখানা শ্রমিক ছাঁটাই করে। আবার কোনও কোনও ক্ষেত্রে ছাঁটাই আতঙ্ক সৃষ্টি করে কর্মরত শ্রমিকদের দিয়ে অতিরিক্ত কর্মঘণ্টা কাজ করালেও অতিরিক্ত কাজের বেতন-ভাতা পরিশোধ না করার অভিযোগ রয়েছে।
টিআইবি আরও বলছে, মালিকপক্ষ কর্তৃক লে-অফ করা কারখানার শ্রমিকদেরও এপ্রিল মাসে ৬৫ শতাংশ বেতন প্রদানের অঙ্গীকার করে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে এ অঙ্গীকার মানা হয়নি। লে-অফ ঘোষণার কারণে এক বছরের কম সময় কর্মরত অনেক শ্রমিক কোনও সুবিধা ছাড়া চাকরি হারায়। ফলে কিছু কারখানায় শ্রমিক অসন্তোষ, বিক্ষোভ ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। আবার অনেক কারখানা ঈদ পরবর্তী ছয় মাসেও ঈদ বোনাসের বাকি অর্ধেক পরিশোধ করেনি। কোনও কোনও ক্ষেত্রে কিছু কারখানা অগ্রিম নোটিশ প্রদান না করে অর্ডার বাতিল করার অজুহাতে কারখানা বন্ধ ঘোষণা করেছে এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রে এসব কারখানায় শ্রমিকদের বকেয়া পরিশোধ করা হয়নি। ফলে করোনা উদ্ভূত সংকটে শ্রমিকরাই আর্থিকভাবে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
একটি গবেষণায় দেখা যায়, বাংলাদেশে তৈরি পোশাক শ্রমিকদের মার্চ-মে পর্যন্ত বেতন এবং ঈদ বোনাসের ক্ষেত্রে প্রাক্কলিত ‘ওয়েজ গ্যাপ’ হয় যথাক্রমে ৩০% ও ৪০%। অর্থাৎ তৈরি পোশাক খাতে মোট কর্মরত শ্রমিক তাদের নিয়মিত বেতন ও ঈদ বোনাসের যথাক্রমে ৩০% ও ৪০% কম পেয়েছে।
অপর একটি গবেষণায় দেখা যায়, করোনাভাইরাস উদ্ভূত সংকটে তৈরি পোশাক খাতে কর্মরত প্রায় ৭৭% শ্রমিক তাদের পরিবারের সব সদস্যের খাদ্য চাহিদা পূরণ করতে পারছেন না।
fblsk
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা