অনলাইন ডেস্ক
সোমবার (১০ অক্টোবর) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন (ডিবিএ) আয়োজিত বিশ্ব বিনিয়োগকারী সপ্তাহ উপলক্ষে এক সেমিনারে এসব কথা বলেন তিনি। সেমিনারটি ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত হয়।
ডিএসইর চেয়ারম্যান ইউনুসূর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ডিবিএ) সভাপতি রিচার্ড ডি’রোজারিও। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করে ডিএসইর ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাইফুর রহমান মজুমদার। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ডিবিএর সহ সভাপতি মো. সাইফুদ্দিন। এ সময় ডিএসই ও ডিবিএর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তরা উপস্থিত ছিলেন।
বিএসইসি কমিশনার উদাহরণ দিয়ে বলেন, ২০১৫ সালে ডিএসইর টিম একটি ব্রোকার হাউজ পরিদর্শন করে। এতে অনেক বড় বড় ঘাটতি দেখা দেয়। প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনা পর্ষদ তাদের আত্মীয় স্বজন এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীর আত্মীয় স্বজনকে অনিয়মিত ভাবে ঋণ দিয়েছে। ‘জেড’ ক্যাটাগরির শেয়ার কেনার জন্য মার্জিন ঋণ দিয়েছে। যাদের কোডে টাকা নেই, তাকে শেয়ার কেনার সুযোগ দিয়েছে। যাদের সঙ্গে চুক্তি নেই তাদেরও ঋণ দিয়েছে। এছাড়াও ছোট ছোট অনিয়ম করেছে।
‘তারা মনে করেছিল আসলে আমরা এতো আইন কানুন জানি না। এগুলো দেখার পর তারা বলল এটা আমাদের ভুল হয়েছে। আমাদের আবার সুযোগ দেন, আমরা ভুল আর করব না। এর দুই বছর পর ২০১৭ সালে আবার পরিদর্শন করে এই চিত্র দেখা গেলে তারপর ২০১৯ সালে আবার পরিদর্শন করা হয়েছে, অবাক হলেও সত্য একই অবস্থা দেখা গেল।
তিনি বলেন, তিনবার একই অনিয়মের পর শাস্তি দেওয়া হয়েছে। তারপর ২০২১ ও ২০২২ সালে পরিদর্শন করা হয়েছে। ৫ বারের পর এখন হাউজটি নিয়মের মধ্যে এসেছে। অর্থাৎ প্রতিষ্ঠানটি ইচ্ছাকৃতভাবে অনিয়ম করেছে।
আব্দুল হালিম বলেন, এসব অনিয়মের বাহিরে ব্রোকার হাউজগুলো বিনিয়োগকারীদের চেক জমা হওয়ার পূর্ব শেয়ার কেনা বেচার করেছে। কমিশন বৃদ্ধির জন্য একই ব্যক্তির বিভিন্ন অ্যাকাউন্টে লেনদেন করা। এমনকি কাস্টমারদের টাকা ব্যাংকে বন্ধক রেখে সেটির বিপরীতে লোন নেওয়া হয়েছে। তারা যে শুধু বিনিয়োগকারীদের মিথ্যা তথ্য দিচ্ছে সেটি নয়, রেগুলেটর ডিএসই, সিএসই এমনকি বিএসইসির কাছে মিথ্যা তথ্য দেয়। এগুলো আসলেই বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষার যাতে যায় না।
তিনি বলেন, টেকনোলজির মাধ্যমে কিছু কিছু অনিয়ম দূর করবে। কিন্তু টেকনোলজির পেছনে যারা থাকবে তাকেও সৎ হতে হবে। তারাও ব্যবসা করবেন, নিয়মে মেনে লাভবান হবে তাতে আমাদের কোনো আপাত্তি নেই। কিন্তু অসৎ উদ্দেশ্যে স্বল্প সময়ে লাভবান হওয়ার জন্য যে অপচেষ্টা। এই জায়গা থেকে যেন স্ব-উদ্যোগে বিরত থাকে।
কমিশনার বলেন, আমরা শুধু বিনিয়োগকারীদের আহ্বান জানাবো, বড় বড় স্লোগান, ও পোস্টার দেবো। আর মার্কেটের ভেতরে অনিয়ম জিইয়ে থাকবে তাহলে কিন্তু প্রত্যাশার জায়গা যাওয়া থেকে পেছনে থাকবো।
বিশ্ব ব্যাংকের ২০২১ সালের প্রতিবেদন অনুযায়ী, জিডিপিতে দেশের পুঁজিবাজারে অবদান ২৭ শতাংশ, এবং আমাদের জিডিপির সাইজ ৪ শত ১৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের একটু বেশি উল্লেখ্য করে তিনি বলেন, আমাদের অর্থনীতির যে ক্রমবর্ধমান ধারা আমরা লক্ষ্য করছি তাতে আমরা আশা করছি ২০২৫ সাল নাগাদ আমাদের জিডিপির পরিমাণ ৬০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অতিক্রম করবে। আমরা যদি সেসময় আমাদের জিডিপি মার্কেট ক্যাপের ৫০ শতাংশেও নিতে চাই তাহলে তা ৩০০ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি হবে। অর্থাৎ টাকার হিসাবে এটি প্রায় ৩০ লাখ কোটি টাকা। যা বর্তমান পুঁজিবাজারের আকারের প্রায় তিনগুণ।
আজ আমরা প্রত্যাশা করছি, ২০২৫ সালে পুঁজিবাজারে ৬ থেকে ৭ শতাংশ ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী আসবে। ২০৩০ সালে জিডিপিতে পুঁজিবাজারে অবদান ৫০ শতাংশে উন্নিত করব। এজন্য আমরা প্রত্যেকের জায়গা থেকে অনিয়মগুলো চিরতরে বন্ধ করার উদ্যোগ নেই। বাজারে সুশাসন ও শৃঙ্খলার আনায়নের চেষ্টা করেন বলে জানান তিনি।
এছাড়াও তিনি বলেন, ওই অবস্থানে পৌঁছানোর জন্য আমাদের প্রস্তুতি কতটুকু সেই বিষয়েটিও খেয়াল রাখতে হবে। পুঁজিবাজারে অসংখ্য খেলোয়াড়। বিএসইসি এখানে নিয়ন্ত্রণক সংস্থা হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে। এর বাহিরে ডিএসই, সিএসই, সিডিবিএস, সিসিবিএল রয়েছে। রয়েছে বিভিন্ন ধরনের তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানও। এছাড়াও সরকার, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ ব্যাংক এবং বৈশ্বিক অর্থনীতি সবকিছুরই প্রভাব এই বাজারে রয়েছে।
fblsk
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা