অনলাইন ডেস্ক
প্রতিমন্ত্রীর দপ্তরের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, প্রতিমন্ত্রী ই–মেইলে এ পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছেন বলে তাঁদের জানিয়েছেন। এখন সেটি নিয়ে তথ্যসচিবের সঙ্গে আলাপ করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
মঙ্গলবার দুপুরে ই-মেইলের মাধ্যমে নিজ দপ্তরে স্বাক্ষরিত পদত্যাগপত্রটি পাঠান। পদত্যাগের কারণ হিসেবে তিনি ‘ব্যক্তিগত কারণ’ উল্লেখ করেছেন। নিয়ম অনুযায়ী মন্ত্রণালয় থেকে পদত্যাগপত্রটি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠানো হবে। পরে সেটি প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের পর যাবে রাষ্ট্রপতির কাছে। তিনি গ্রহণ করলেই তা কার্যকর হবে।
‘প্রতিমন্ত্রীর পদ হতে ব্যক্তিগত কারণে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ’ বিষয় উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বরাবর লেখা পদত্যাগ পত্রে মুরাদ হাসান লেখেন, ‘স্ব-শ্রদ্ধেয় সালাম নিবেন, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের গত ১৯ মে ২০২১ খ্রি: তারিখের 08.00.0000. 421.84.004.19.১৪২ নম্বর স্মারকমূলে আমাকে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব প্রদান করা হয়। আমি অদ্য ০৭.১২.২০২১ খ্রি: তারিখ হতে প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব হতে ব্যক্তিগত কারণে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করতে ইচ্ছুক।’
পত্রে আরও লেখেন, ‘এমতাবস্থায় আপনার নিকট বিনীত নিবেদন এই যে, আমাকে অদ্য ০৭.১২.২০২১ খ্রি: তারিখ হতে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব হতে অব্যহতি প্রদানের লক্ষ্যে পদত্যাগ পত্রটি গ্রহণে আপনার একান্ত মর্জি কামনা করছি।’
সম্প্রতি একজন চিত্রনায়িকার সঙ্গে তার ফোনালাপে কুরুচিপূর্ণ ও অশ্লীল আলাপের বিষয়টি ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। এনিয়ে শুরু হয় সমালোচনা। একজন প্রতিমন্ত্রীর মুখে এ ধরনের ভাষায় বিব্রত হয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। পরে বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নজরে এলে তিনি সড়ক যোগাযোগ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের মাধ্যমে মুরাদকে পদত্যাগের জন্য নির্দেশ দেন।
মন্ত্রিসভায় ঠাঁই পাওয়ার পর থেকেই বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনায় ছিলেন ডা. মুরাদ হাসান। প্রথমে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী করা হয় তাকে। মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন সূত্রে জানা যায়, তার কিছু পদক্ষেপ এবং কথাবার্তায় মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীও বিব্রত হন। পরে প্রধানমন্ত্রী তাকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে সরিয়ে ২০১৯ সালের মে মাসে তথ্য মন্ত্রণালয়ে দায়িত্ব দেন।
এখানে এসেও বক্তব্য-বিবৃতি দিয়ে নানা আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দেন ডা. মুরাদ। সর্বশেষ রাষ্ট্রধর্ম, দেশের রাজনীতি, বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার নাতনিসহ নানা বিষয়ে মন্তব্য করে সমালোচনার জন্ম দেন ডা. মুরাদ হাসান। দলীয় বিভিন্ন সভায় অংশ নিয়ে উত্তেজিত বক্তব্য দিয়েও বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলেন দলের শীর্ষ নেতাদের। বিব্রত হয় তার নির্বাচনী আসন জামালপুর-৪ আসনের আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাও।
এর বাইরেও মঞ্চে উঠে গান গেয়ে দর্শক মাতানো, টিভি অনুষ্ঠানের উপস্থাপিকাকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করার মতো ঘটনাও ঘটান ডা. মুরাদ। প্রতিমন্ত্রীর মতো গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকে মঞ্চে গান গাওয়া, বিভিন্ন অনুষ্ঠানে হালকাচালের মন্তব্য ও হাস্যরস করার ঘটনায় বিব্রত হচ্ছিলেন দল ও মন্ত্রণালয়ের কর্তা ব্যক্তিরাও। এসব নিয়ে প্রকাশ্যে কেউ কিছু বলতে না পারলেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন মহলে সমালোচনা থেমে ছিল না। সর্বশেষ তার পদত্যাগের মধ্য দিয়ে এই সমালোচনার আগুনে কিছুটা পানি পড়লেও এই পানি কতদূর গড়ায় তা দেখার অপেক্ষায় আছেন সংশ্লিষ্টরা।
fblsk
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা