অনলাইন ডেস্ক
এবারের নৌ নিরাপত্তা সপ্তাহের মূল প্রতিপাদ্য বিষয় হচ্ছে ‘প্রশিক্ষিত জনবল ও নিরাপদ জলযান, নৌ নিরাপত্তায় রাখবে অবদান।নৌ নিরাপত্তা সপ্তাহ উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী তার বাণীতে বলেছেন, নৌ-যোগাযোগের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের ভৌগলিক অবস্থানকে কাজে লাগিয়ে আন্তর্জাতিক পরিবহন নেটওয়ার্কে যুক্ত হওয়ার পরিকল্পনা করছে সরকার। এই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে দেশের বিকাশমান অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব পড়বে। বাংলাদেশ আজ বিশ্বে উন্নয়নের ‘রোল মডেল’। বর্তমান সরকারের শাসনামলে দেশের সামষ্টিক অর্থনীতি, কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, যোগাযোগ, তথ্যপ্রযুক্তি, অবকাঠামো, বিদ্যুৎ, গ্রামীণ অর্থনীতির উন্নয়ন, কূটনৈতিক সাফল্য ও সহযোগিতা বৃদ্ধিসহ প্রতিটি সেক্টরে আমরা নির্বাচনি প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ব্যাপক উন্নয়ন করেছি।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, বর্তমান সরকার নৌ সেক্টরের উন্নয়নের লক্ষ্যে নৌপথের সংরক্ষণ ও নৌপরিবহন ব্যবস্থা উন্নয়নে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। দেশের সকল নদীকে দখলমুক্ত করা এবং নদীর নাব্যতা ফিরিয়ে আনার জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। নতুন নদীবন্দর স্থাপনসহ সকল নদীবন্দরকে আধুনিকীকরণ, নদীবন্দরের ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনা, নৌ পথের নাব্যতা ফিরিয়ে আনা, পটুয়াখালী জেলায় তৃতীয় সমুদ্রবন্দর স্থাপন, উপকূলীয় দুর্গম পথে যাত্রী পরিবহন ব্যবস্থা চালুকরণ, কন্টেইনার টার্মিনাল স্থাপন, স্থলবন্দরের প্রয়োজনীয় অবকাঠামো উন্নয়নসহ আধুনিকীকরণ ও সম্প্রসারণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। কক্সবাজার, সেন্টমার্টিন ও কুতুবদিয়ায় অবস্থিত লাইট হাউজসমূহ আধুনিকীকরণ এবং নিঝুম দ্বীপ, ঢালচর, দুবলারচর ও কুয়াকাটায় নতুন লাইটহাউজ ও কোস্টাল রেডিও স্টেশন স্থাপনের মাধ্যমে মেরিটাইম দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার উন্নয়নসহ বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ ও উপকূলীয় এলাকায় দুর্ঘটনা কবলিত সকল ধরনের নৌযান উদ্ধার কার্যক্রমে সহায়তা প্রদান করা যাবে।
সরকার প্রধান বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সেই পঞ্চাশের দশক থেকে নদী ব্যবস্থাপনার প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে ভাবতেন। তিনি সদ্য স্বাধীন মাতৃভূমির শাসনভার হাতে নিয়েই নদীমাতৃক বাংলাদেশের নৌচলাচল ব্যবস্থার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। নৌপথের পলি অপসারণ ও নদী খননের জন্য স্বাধীন দেশে ৭টি ড্রেজার আমদানির মতো সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত নদীর প্রতি তাঁর ভালোবাসারই বহিঃপ্রকাশ। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নৌ সেক্টরের গুরুত্ব অনুধাবন করে উন্নয়নের যে ধারা শুরু করেছিলেন, তা অনুসরণ করে বর্তমান সরকার নৌ পরিবহণের অগ্রযাত্রাকে অব্যাহত রেখেছে। যাত্রীদের নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে আমরা নৌপথের উন্নয়নে পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দ করেছি। বাংলাদেশ আজ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল রাষ্ট্রে উন্নীত হতে চলেছে। সরকার বিশ্বে প্রথম শত বছরের ‘ব-দ্বীপ পরিকল্পনা-২১০০’ বাস্তবায়ন শুরু করেছে।
রাষ্ট্রপতি তার বাণীতে বলেন, নদীবেষ্টিত বাংলাদেশে নৌ নিরাপত্তা সপ্তাহ পালনের গুরুত্ব অপরিসীম। অন্যান্য পরিবহনের তুলনায় নৌপথ অধিকতর সাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব। সরকার নৌ পথের উন্নয়ন ও চলাচল উপযোগী রাখতে বিভিন্ন উন্নয়ন কার্যক্রম গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করছে। এ লক্ষ্যে নৌপথের নাব্যতা রক্ষায় খনন কাজ পরিচালনা, নৌযানের চলাচল নিরাপদ ও দুর্ঘটনামুক্ত করতে আধুনিক নৌযান এ লক্ষ্যে নৌপথের নাব্যতা রক্ষায় খনন কাজ পরিচালনা, নৌযানের চলাচল নিরাপদ ও দুর্ঘটনামুক্ত করতে আধুনিক নৌযান তৈরি ও তাতে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করা এবং গুরুত্বপূর্ণ নদী বন্দরসমূহ আধুনিকীকরণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। নৌপথের নিরাপত্তা বিধানে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের পাশাপাশি প্রযুক্তিজ্ঞানসম্পন্ন দক্ষ ও প্রশিক্ষিত জনবল তৈরিতে এগিয়ে আসার জন্য আমি সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।
রাষ্ট্রপতি আরও বলেন, নৌপরিবহন নিরাপদ ও আধুনিক করতে নদীপথে চলাচলকারী লঞ্চ মালিক, শ্রমিক ও যাত্রীসাধারণকে আরো অধিক সচেতন হতে হবে। নৌ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নৌযানে পর্যাপ্ত সংখ্যক জীবনরক্ষাকারী সরঞ্জাম সংরক্ষণ, ধারণ ক্ষমতার অধিক যাত্রী ও মালামাল পরিবহণ রোধসহ নৌপরিবহণ সংক্রান্ত আইনের যথাযথ প্রয়োগ ও আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুসরণ খুবই জরুরি। আমি আশা করি, কালবৈশাখী ও বর্ষা মৌসুমসহ বছরব্যাপী নৌপথে চলাচলকারী সকল যাত্রী ও নৌযানসমূহের সার্বিক নিরাপত্তা বিধানে নৌ নিরাপত্তা পালন ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে।
fblsk
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা