নুসরাত হত্যা মামলার রায় বৃহস্পতিবার, আসামীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি পরিবারের

এসএসসি পরীক্ষা চলাকালে কক্ষ থেকে ডেকে নিয়ে মাদ্রাসার ছাদে আগুনে পুড়িয়ে মাদরাসা ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। আদালতে টানা সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে এই হত্যা মামলার রায় আগামীকাল বৃহস্পতিবার প্রদান করা হবে। ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামুনুর রশিদ আলোচিত এ মামলার রায় ঘোষণা করবেন।

দু’পক্ষের আইনজীবীদের যুক্তিতর্ক শুনানি শেষে গত ৩০ সেপ্টেম্বর বিচারক রায়ের এই দিন ঠিক করে দেন বলে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী হাফেজ আহমেদ জানান।
নুসরাতের ভাই রোমান সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, পরিবারের পক্ষ থেকে আসামীদের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করা হচ্ছে। তিনি বলেন, যারা অত্যন্ত নির্মমভাবে আমার বোনকে হত্যা করেছে তাদের এবং তাদের সকল সহযোগীর সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসি চাই।
দীর্ঘ ৪৭ দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা শেষে গত ১১ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হয় যুক্তিতর্ক। শুরুতে রাষ্ট্রপক্ষ যুক্তি উপস্থাপন করেছেন পরে আসামি পক্ষ যুক্তি উপস্থাপন করা হয়।

নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুুনালের বিচারক মামুনুর রশীদের আদালতে গত ৩০ সেপ্টেম্বর ১৬ জন আসামির মধ্যে ১৫ জন আসামিকে হাজির করা হয়। অন্যদিকে আসামি কামরুন নাহার মনি বন্দী থাকা অবস্থায় সন্তানের মা হওয়ায় তাকে আদালতে হাজির করা হয়নি।

চলতি বছরের ২৭ মার্চ সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসার আলিম পরীক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফিকে যৌন নিপীড়নের দায়ে মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ৬ এপ্রিল ওই মাদরাসা কেন্দ্রের সাইক্লোন শেল্টারের ছাদে নিয়ে অধ্যক্ষের সহযোগীরা নুসরাতের শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয়। টানা পাঁচদিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে ১০ এপ্রিল ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান নুসরাত জাহান রাফি।

নুসরাত পরীক্ষার কক্ষে গেলে তাকে একজন জানায় যে, নুসরাতের এক বান্ধবীকে অন্যরা পেটাচ্ছে।এই কথা শুনে মাদ্রাসার ছাদে ছুটে যায় সে। সেখানে আগে থেকেই ঘাপটি মেরে থাকা দুর্বৃত্তরা তার গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। এসময় তারা তার হাত দুটো কাপড় দিয়ে বেঁধে ফেলে। ফলে, তার শরীরে আগুন লেগে যাবার পরে সে সহজে গায়ের কাপড়গুলো খুলতে পারেনি। আগুনে তার শরীরে থাকা বোরখাসহ শরীরের নিচের সমস্ত অংশ পুড়ে যায়। এসময় আগুন থেকে শুধু নুসরাতের মুখ রক্ষা পায়।

এ মামলায় ১৬ জনকে অভিযুক্ত করে গত ২৯ মে ফেনীর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে চার্জশিট দাখিল করেছেন মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা শাহ আলম।