নারী নির্যাতন প্রতিরোধে আইনগত সহায়তা গ্রহণকারীদের অভিজ্ঞতার আলোকে কার্যক্রম আরও সমন্বিতভাবে করার লক্ষ্যে কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
রবিবার (৮ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের কেন্দ্রীয় লিগ্যাল এইড উপ-পরিষদের উদ্যোগে সংগঠনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সুফিয়া কামাল ভবন মিলনায়তনে ধর্ষণ ও যৌন নিপীড়ন মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ- আসুন এ অপরাধের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াই – এই শ্লোগানকে সামনে রেখে নারী নির্যাতন প্রতিরোধে আইনগত সহায়তা গ্রহণকারীদের অভিজ্ঞতার আলোকে কার্যক্রম আরও সমন্বিতভাবে করার লক্ষ্যে কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।
কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের অন্যতম সহ-সভাপতি রেখা চৌধুরী। কর্মশালায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু এবং লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বিষয়ে বক্তব্য রাখেন সহ-সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. মাসুদা রেহানা বেগম। কর্মশালা সঞ্চালনায় ছিলেন ডিরেক্টর লিগ্যাল অ্যাডভোকেসি এন্ড লবি অ্যাড. মাকছুদা আখতার।
সভার সভাপতি রেখা চৌধুরী বলেন, নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধের জন্য বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের কেন্দ্রীয় লিগ্যাল এইড উপ-পরিষদ কাজ করে যাচ্ছে। পরিবার, সমাজসহ সবর্ত্র নারী নির্যাতনের ঘটনা বেড়ে চলেছে। পরিবার, সমাজ, আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী,নাগরিক সমাজ,রাষ্ট্র সম্মিলিতভাবে নারী নির্যাতন প্রতিরোধ ও নিমূর্লে কাজ করতে হবে।অবৈধ রাজনৈতিক প্রভাব,রাজনীতির দূবৃত্তায়ন বন্ধ করতে হবে। নির্যাতনমুক্ত সমতাপূর্ন পরিবার, রাষ্ট্র ও সমাজ গড়ে তুলতে হবে।
তিনি নারী নির্যাতন প্রতিরোধে সকলকে এগিয়ে আসার আহবান জানান।
তিনি নারীবান্ধব প্রশাসন ও বিচারব্যবস্থার উপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে বিদ্যমান আইনের যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করার দাবি জানান।
সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু বলেন, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ দীর্ঘদিন ধরে নারীর মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে নারী নির্যাতনের কাজ করে যাচ্ছে। উপ-পরিষদ সদস্য, আইনজীবীবৃন্দ সকলে নিবিচ্ছন্ন পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। কিন্তু বিদ্যমান সমাজ কাঠামোর জন্য নানা চ্যালেঞ্জ রয়েছে। বিদ্যামান কাঠামোর মধ্যে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ নির্যাতনের শিকার নারীকে ন্যায়বিচার পাইয়ে দেওার চেষ্টা করে যাচ্ছে। নারী নির্যাতন মুক্ত পরিবার,সমাজ ও রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে।
সহ-সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. মাসুদা রেহানা বেগম বলেন, বিচারহীনতার সংস্কৃতি ও বিচার ব্যবস্থার দীর্ঘসূত্রিতার কারনে নির্যাতনের শিকার নারীকে যথাযথ প্রতিকার দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। নারী ও শিশু নির্যাতনের ঘটনায় মাত্র ৩ ভাগ মামলায় রায় হচ্ছে। অপরাধের সাথে জড়িতদের রাজনৈতিক আশ্রয় প্রশ্রয় দেওয়া বন্ধ করতে হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ সালিশী মিমাংসার মাধ্যমে পরিবারিক সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধান এবং নারী নির্যাতনের ঘটনার মামলা পরিচালনায় সহায়তা প্রদানসহ নারী নির্যাতন প্রতিরোধে বহুমূখী কার্যক্রম পরিচালনা করছে। নারী নির্যাতন প্রতিরোধের কাজ করতে গিয়ে প্রতিনিয়ত নতুন নতুন অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হতে হয়। যেসব প্রতিবন্ধকতা আপনারা মোকাবেলা করছেন তা আপনারা বলবেন।
তিনি বলেন, সরকারও মামলায় আইনগত সহায়তা প্রদান করছে। সকলে মিলে আপনাদের পাশে থেকে নারী নির্যাতন নির্মূলের জন্য সমন্বিতভাবে কাজ করবো।
আইনগত সহায়তা গ্রহণকারীগণ তাদের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন। আইনগত সহায়তা গ্রহণকারীদের মধ্যে অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেন আহলাদী ধর, সালমা ইসলাম,ফারহানা নীলা,মনিকা দাশ, সঞ্চিতা,ইলমা বেগম,নাহিদা আক্তার, শিল্পিী আক্তার প্রমূখ। তারা তাদের সমস্যাগুলোর কথা তুলে ধরেন এবং এক্ষেত্রে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ হতে তারা যে আইনগত সহায়তা পাচ্ছে এবং সংগঠন যে সবসময় তাদের পাশে দাঁড়াচ্ছে তার জন্য তারা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। এছাড়া হিন্দু আইনে বিবাহ বিচ্ছেদ বিষয়টি সংযুক্ত করার সুপারিশ করেন।
কর্মশালায় সংগঠনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সীমা মোসলেম, অর্থ সম্পাদক দিল আফরোজ বেগম, রোকেয় সদন সম্পাদক নাসরিন মনসুর, লিগ্যল এইড উপ-পরিষদ সদস্য জয়ন্তী রায়, সংগঠনের প্যানেল আইনজীবী অ্যাড. এস. এম. এ. সবুর, অ্যাড. মো: আমিনুল ইসলাম, অ্যাড. আহাম্মদ হাশেম রাজা, আইনগত সহায়তা গ্রহণকারীবৃন্দ, কেন্দ্রীয় লিগ্যাল এইড উপ-পরিষদের আইনজীবীবৃন্দসহ মোট ৭৫ জন উপস্থিত ছিলেন।
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা