সিলেট প্রতিনিধি
মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা বলেছেন, বাংলাদেশে নারী উন্নয়ন ও ক্ষমতায়নের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত জয়িতারা। আমাদের জয়িতারা তাদের স্বপ্ন পূরণে সবার অগোচরে কাজ করে যাচ্ছে। জয়িতারা নিজেদের উদ্যোগ, ইচ্ছা ও সাহসের মাধ্যমে সকল প্রতিকূলতা অতিক্রম করে সমাজে প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে।
সরকার নারীর অর্থনৈতিক ও সামাজিক যে অগ্রযাত্রার জন্য জয়িতা কর্মসূচি শুরু করেছিল আজ তা দেশের ইউনিয়ন পর্যায় জাতীয় পর্যায়ের ছড়িয়ে পড়েছে। প্রতিমন্ত্রী ইন্দিরা আরও বলেন, জয়িতা নারীরা আত্বপ্রতয়ী। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নারীর ক্ষমতায়ন ও উন্নয়নে বাংলাদেশ আজ বিশ্বে রোল মডেল।
প্রতিমন্ত্রী ইন্দিরা আরও বলেন নারী উন্নয়নে আমরা অনেক উন্নত দেশকে পিছনে ফেলে দিয়েছি। এই ধারা অব্যাহত রাখতে হবে। সবাই মিলে এক সাথে কাজ না করলে উন্নয়নের কাংখিত স্থানে পৌঁছান যাবেনা।
প্রতিমন্ত্রী ইন্দিরা বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারী) সিলেটের কবি নজরুল অডিটোরিয়ামে মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর ও বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়, সিলেট আয়োজিত সিলেট বিভাগের নির্বাচিত শ্রেষ্ঠ জয়িতাদের সংবর্ধনা প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
সিলেট বিভাগীয় কমিশনার মো. মশিউর রহমান এনডিসি সভাপতিত্বে জয়িতা সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য করেন সংসদ সদস্য মোছা. শামীমা আক্তার খানম, সংসদ সদস্য সৈয়দা জোহরা আলাউদ্দিন, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব কাজী রওশন আক্তার ও মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক পারভীন আকতার, জেলা প্রশাসক কাজী এমদাদুল ইসলাম প্রশাসকসহ বিভিন্ন দপ্তর সংস্থার কর্মকর্তাবৃন্দ ও নারী উন্নয়ন সংগঠনের প্রতিনিধি।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব কাজী রওশন আক্তার বলেন, জয়িতা হচ্ছে সেই নারী যারা সমাজের বিভিন্ন বাধা বিপত্তি উপেক্ষা করে সমাজে মর্যাদার আসন করে নিয়েছে। নারীরা অর্থনৈতিকভাবে সাবলম্বী না হলে আমরা সমতাভিত্তিক সমাজ গড়তে পারবনা। আজকের জয়িতারা সেই সমতা ভিত্তিক সমাজ গঠনের অগ্রগামী কারিগর।
সিলেট বিভাগের নির্বাচিত জয়িতাঃ
আজ সিলেট বিভাগের চার জেলার বিশজন জয়িতার মধ্যে থেকে পাঁচজনকে শ্রেষ্ঠ জয়িতা হিসেবে সংবর্ধনা প্রদান করা হয়। শ্রেষ্ঠ জয়িতা হিসেবে অর্থনৈতিকভাবে সাফল্য অর্জনকারী জয়িতা মিনারা বেগম সিলেট অঞ্চলে প্রথম নারী উদ্যোক্তা হিসেবে মাত্র তিনশত টাকা নিয়ে পার্লার ব্যবসা শুরু করেন। বর্তমানে তার প্রতিষ্ঠানে ১৬০ জন কর্মী কাজ করছে ও মোট সম্পদের পরিমান সাত কোটি টাকা।
মৌলভীবাজার জেলার নাজমীন আক্তার পারিবারিক ও সামাজিক বিভিন্ন বাধা বিপত্তি কাটিয়ে শিক্ষা ও চাকুরীর ক্ষেত্রে শ্রেষ্ঠ জয়িতা নির্বাচিত হয়েছে ও বর্তমানে হবিগঞ্জ জজ কোর্টে আইনজীবী হিসেবে প্রাকটিস করছে। সিলেট বিভাগের এবারের সফল জননী ক্যাটাগরিতে শ্রেষ্ঠ জয়িতা হয়েছে শামসুন্নাহার চৌধুরী।
স্বামী মারা যাওয়ার পর তার ৬টি সন্তানকে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করেছে যারা চাকুরী ও ব্যবসা ক্ষেত্রে দেশে বিদেশে সাফল্যের স্বাক্ষর রেখে চলছে। নির্যাতনের বিভীষিকা মুছে ফেলে নতুন উদ্যমে জীবন শুরু করে জয়িতা হয়েছেন সিলেটের মোছা. সালেহা বেগম যিনি শশুর বাড়ি থেকে বিতাড়িত হয়ে অন্যের বাড়ি কাজ করে ও স্ব-উদ্যোগী হয়ে মেয়ে স্নাতক সম্মান পাশ করিয়েছেন।সমাজ উন্নয়নে অসামান্য অবদান রাখায় জয়িতা এবারের সিলেটের আছিয়া খানম শিকদার।
আছিয়া খানম লায়ন্স ক্লাব, রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি, জালালাবাদ এসোসিয়েশন ও উইমেন চেম্বারসহ বিভিন্ন সংগঠনের সাথে কাজ করে যাচ্ছেন ও সমাজ উন্নয়নে অসামান্য অবদান রেখে চলেছেন।
প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা সিলেটের এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থাপিত ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টার পরিদর্শন করেন ও ভিকটিমদের চিকিৎসার বিষয়ে খোজ খবর নেন।
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা