ভারতের নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের বিরুদ্ধে নিঃশব্দে অথচ জোরাল ভাবে নিজের অবস্থান জানালেন সানা। সৌরভ গাঙ্গুলীর অষ্টাদশী কন্য়া ইনস্টাগ্রামে স্টোরি শেয়ার করে এলেন খবরের শিরোনামে।
প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক ও বিসিসিআই সভাপতির কন্য়া নিজে কোনও মন্তব্য় করলেন না ঠিকই। বিখ্য়াত লেখক ও সাংবাদিক খুশওয়ান্ত সিংয়ের বই ‘দ্য় এন্ড অফ ইন্ডিয়া‘-র নির্বাচিত কিছু অংশ তুলে ধরলেন। যা সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে অত্য়ন্ত প্রাসঙ্গিক।
নেটিজেনদের মন জয় করে নিয়েছে সানার পরিণতি বোধ। সৌরভ সহ দেশের অধিকাংশ ক্রীড়াব্য়ক্তিত্বই এনআরসি বা ক্য়াব ইস্য়ুতে মুখ বন্ধ রাখাই শ্রেয় মনে করছেন, তখন সানা দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন।
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন নিয়ে প্রতিবাদ জানায়িছে দিল্লির জামিয়া মিলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা।
গত রবিবার বিশ্ববিদ্য়ালয় ঢুকে তাদের ওপর পুলিশ লাঠি চার্জ করে ও কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে। একাধিক পড়ুয়া গুরুতর আহত হয়েছেন এই ঘটনায়।
পুরো ঘটনার নিন্দা করে ভারতের প্রাক্তন ফাস্টবোলার ইরফান পাঠান টুইটারে লিখেছিলেন, “আজীবন রাজনৈতিক দোষারোপের পালা চলতেই থাকবে। কিন্তু আমি এবং আামার দেশ চিন্তিত জামিয়া মিলিয়ার পড়ুয়াদের নিয়ে।
সানা সেই বই থেকে তুলে ধরেছেন যে অংশ, সেখানে লেখা হয়েছে, ‘প্রতিটা ফ্যাসিস্ট সরকারের একটা দল বা গোষ্ঠীর প্রয়োজন হয়। নিজেদের বেড়ে ওঠার জন্য তারা ওই দল বা গোষ্ঠীগুলোকে ব্যবহার করতে তাদের শয়তানেও পরিণত করে। দুএকটা দল দিয়ে এটা শুরু হয়। কিন্তু সেটা কখনোই সেখানে শেষ হয় না। ঘৃণার ওপর নির্ভর করে যে আন্দোলন, সেই আন্দোলন নিজেকে ধরে রাখতে পারে অবিরাম একটা ভয় বা দ্বন্দ্বের বাতাবরণ তৈরি করে।’
খবরে বলা হয়, সানা এই উদ্ধৃতির মাধ্যমে আসলে বিজেপি এবং সঙ্ঘ পরিবারকেই নিশানা করতে চেয়েছেন বলে রাজনৈতিক মহলের মত।
এখানেই থেমে থাকেননি সানা। খুশবন্তের লেখার আরও কিছু অংশ তিনি পোস্ট করেছেন। সেই অংশে লেখা হয়েছে, ‘আজ যারা আমরা নিজেদের নিরাপদ মনে করছি, ভাবছি আমরা তো মুসলমান বা খ্রিস্টান নই, তারা মূর্খের স্বর্গে বাস করছি। সঙ্ঘ ইতিমধ্যেই বামপন্থী ইতিহাসবিদ এবং পশ্চিমি সংস্কৃতিতে বিশ্বাসী যুবসমাজকে টার্গেট করেছে। কাল তাদের ঘৃণা গিয়ে পড়বে স্কার্ট পরিহিত নারী, যারা মাংস খান, মদ্যপান করেন, বিদেশি সিনেমা দেখেন, বছর বছর তীর্থে যান না, দাঁতনের পরিবর্তে টুথপেস্ট ব্যবহার করেন, আয়ুর্বেদিকের বদলে অ্যালোপ্যাথি ওষুধ পছন্দ করেন, দেখা হলে ‘জয় শ্রী রাম’ বলার বদলে হাত মেলান বা চুম্বন করেন, তাদের ওপর। কেউ নিরাপদ নয়। ভারতকে বাঁচাতে হলে এগুলো আমাদের ভীষণ ভাবে অনুধাবন করতে হবে।’
ইতিমধ্যেই সানার এই পোস্টটি ভাইরাল হয়েছে। নেটিজেনদের একটা অংশের মতে, গোটা পোস্টটাতে যে ভাবে খুশবন্তের লেখার মাধ্যমে সানা ভারতের বর্তমান পরিস্থিতিকে তুলে ধরেছেন, তা প্রশংসনীয়।
কেউ কেউ আবার সানার বয়সকে উল্লেখ করে লিখেছেন, রাজনীতি বোঝার জন্য বড়ই অল্প বয়স। সেখানেই অপর পক্ষ মনে করিয়ে দিয়েছেন, ভারতে ভোট দেয়ার বয়স কিন্তু ১৮। সানার বয়স ১৮ পেরিয়ে গিয়েছে বলেও মন্তব্য করেছেন তাদের একাংশ।
সৌরভ নিজে সব সময়ই রাজনৈতিক মন্তব্য থেকে নিজেকে দূরে রেখেছেন। তার মুখে রাজনৈতিক বিতর্কমূলক কোনো মন্তব্য কখনোই শোনা যায়নি।
তার এই ‘রাজনৈতিক’ পোস্ট ঘিরে উত্তাল হয়ে উঠেছে স্যোশাল মিডিয়া। শেষ পর্যন্ত পরিস্থিতি সামলা দিতে মুখ খুললেন সৌরভ গাঙ্গুলী।
তিনি বললেন, ওকে (সানা) জড়াবেন না। রাজনীতি সম্পর্কে জানার ব্যাপারে তার মেয়ে সানা যে খুবই ছোট।
কলকাতার গণমাধ্যম আনন্দবাজার জানিয়েছে, ওই পোস্টটি সানার নিজস্ব কোনো মন্তব্য নয়, সবটাই খুশবন্ত সিংহের লেখা থেকে উদ্ধৃত।
Like & Share our Facebook Page: Facebook
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা