অনলাইন ডেস্ক
ডিআরআইসিএম এর মতে, তাদের এই আবিস্কারের ফলে সঠিকভাবে সংরক্ষণের অভাবে নমুনা বাতিল হওয়া বা বাতিল হওয়ার কারণে একই নমুনা একাধিকবার সংগ্রহ ও টেস্ট করার দীর্ঘ প্রক্রিয়াটি এড়ানো সম্ভব হবে।
দেশে ভাইরাল ট্রান্সপোর্ট মিডিয়া (ভিটিএম) কিট তৈরি করেছেন ডিআরআইসিএম ল্যাবের বিজ্ঞানীরা।
বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদের ডেজিগনেটেডে রেফারেন্স ইনস্টিটিউট ফর কেমিকেল মেজারমেন্টস –ডিআরআইসিএম ল্যাবটি রাসায়নিক পরিমাপ বিজ্ঞান বা কেমিকেল মেট্রোলজি বিষয়ক গবেষণা প্রতিষ্ঠান।
মঙ্গলবার স্বাস্থ্য বুলেটিনে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক নাসিমা সুলতানা জানান, ডিআরআইসিএম ল্যাব ৫ হাজার নমুনা সংগ্রহ কিট তাদের দিয়েছে।
পরে এ কিট নিয়ে সাংবাদিকদের জানান ডিআরআইসিএম ল্যাবের পরিচালক মালা খান।
তিনি বলেন, ভিটিএম হচ্ছে লবণ, প্রোটিন ও অ্যান্টিবায়োটিকের সমন্বয়ে তৈরি এক ধরনের সলিউশন বা দ্রবণ, যার মাধ্যমে ভাইরাস সংগ্রহ, পরিবহন এবং দীর্ঘ সময় সংরক্ষণ করা যায়।
করোনভাইরাসের (সার্স সিওভি-২) নমুনা সংগ্রহের জন্য বিশেষ ধরনের ভিটিএম তৈরির গাইডলাইন দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সেন্ট্রাল ফর ডিজিজ কন্ট্রোল ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
মালা খান বলেন, “কমিউনিট পর্যায়ে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার কারণে ব্যাপক ভিত্তিতে টেস্টের কোনো বিকল্প নাই। শুরুতে স্বল্প সংখ্যক এই করোনা পরীক্ষার সঙ্গে যুক্ত থাকলেও সময়ের সাথে সাথে সরকারি ও বেসরকারি অনেক প্রতিষ্ঠান ও বিশ্ববিদ্যালয় কোভিড-১৯ পরীক্ষা করার সক্ষমতা অর্জন করেছে।
“কিন্তু মাঠ পর্যায়ে পর্যাপ্ত ও সঠিক উপায়ে নমুনা সংগ্রহের সীমাবদ্ধতার কারণে টেস্টের ধীরগতি রয়েছে এখনও। বিশেষ করে প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে জেলা বা বিভাগীয় পর্যায়ে প্রতিষ্ঠিত টেস্টিং ল্যাবরেটরিতে ট্রান্সপোর্টেশনের দীর্ঘ সময় নমুনা সংরক্ষণ করা অত্যন্ত জরুরি।”
তিনি জানান, ডিআরআইসিএমের ভিটিএম কিটে সংগৃহীত নমুনা ৪ ডিগ্রি তাপমাত্রায় তিন দিন পর্যন্ত সংরক্ষণ করা যায়।
ডিআরআইসিএম গবেষক দল ল্যাবরেটরিতে নিয়ন্ত্রিত পদ্ধতিতে সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল গাইডলাইন অনুযায়ী ভিটিএম কিট তৈরি করেছে।
মালা খান বলেন, কিটটিতে সলিউশন রাখার জন্য টিউব নির্বাচন করা হয় বিভিন্ন দিক বিবেচনা করে। দায়িত্বরত টেকনিশিয়ান বা ল্যাবে কার্যরত গবেষকদের হ্যান্ডলিং করার সময় কোনোভাবেই যেন ক্রস-কন্টামিনেশন না হয়, সে বিষয় বিবেচনা করেই সলিউশন রাখার টিউব নির্বাচন করা হয়েছে।
“টিউবটি হালকা, সহজে এক হাতে ধরা যায়, এতে রবার স্টপার্স সংবলিত মুখ থাকায় চুইয়ে পড়ার কোনো সম্ভাবনা নাই।”
সিডিসি বা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গাইডলাইন অনুযায়ী, কোভিড-১৯ রোগীর নমুনা সংগ্রহ করতে হয় মূলত তিনটি স্থান থেকে। নাকের দুটি ছিদ্র ও গলা।
নাকের মধ্যে একটি নমুনা হচ্ছে ন্যাজাল সোয়াব, অন্যটি হচ্ছে নাকের শেষ প্রান্তে গিয়ে গলার পেছনের দেয়াল থেকে ন্যাজোফেরেঞ্জিয়াল সোয়াব। এর মধ্যে সবচেয়ে কার্যকর হচ্ছে ন্যাজোফেরেঞ্জিয়াল নমুনা সংগ্রহ পদ্ধতি। ন্যাজোফেরেঞ্জেল নমুনা সংগ্রহ পদ্ধতি একটু জটিল।
মালা খান বলেন, “এ ন্যাজোফেরেঞ্জিয়াল পদ্ধতিটিকে সহজ করার জন্য ভিটিএম কিটে নমুনা সংগ্রহের উপযুক্ত সোয়াব স্টিক দেওয়া হয়েছে। এছাড়া গলার অরোফেরেঞ্জিয়াল নমুনা সংগ্রহ করার ক্ষেত্রে রোগীকে যেন দীর্ঘক্ষণ মুখ খোলা রাখতে না হয়, সেজন্য কিটটিতে রয়েছে একটি টাং হোল্ডার যা ব্যবহার করে সহজে ডিপ থ্রোট থেকে নমুনা সংগ্রহ করা সম্ভব।
“এছাড়া কিটটিতে সিডিসির গাইডলাইন অনুযায়ী ছবিযুক্ত একটি নির্দেশনালিপি দেওয়া হয়েছে যাতে খুব সহজেই ফলো করতে পারবেন মাঠ পর্যায়ের কর্মীরা।”
দেশে তৈরি এই ভিটিএম কিট করোনার টেস্টের ক্ষেত্রে আমদানি নির্ভরতা কমাবে, তেমনি বৈদেশিক মুদ্রাও সাশ্রয় হবে, বলছেন ডিআরআইসিএম ল্যাবের গবেষকরা।
fblsk
করোনা পরিসংখ্যান এর লাইভ আপডেট দেখুন
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা