অনলাইন ডেস্ক
প্রসঙ্গত, আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) গাইডলাইন অনুযায়ী যারা গত ৭ দিন সময়ে কমপক্ষে ১ ঘণ্টা বেতন/মজুরি বা মুনাফার বিনিময়ে অথবা খানার নিজস্ব ভোগের জন্য পণ্য উৎপাদনমূলক কাজ করেছেন তারাই মূলত কর্মে নিয়োজিত হিসেবে বিবেচিত হন। বিবিএস বলছে, যারা কাজে নিয়োজিত নন, আবার বেকার হিসেবেও বিবেচিত নন তারাই মূলত শ্রমশক্তির বাইরের জনগোষ্ঠী। এর মধ্যে রয়েছেন ছাত্র, অসুস্থ, বয়স্ক, কাজ করতে অক্ষম অবসরপ্রাপ্ত এবং কাজে নিয়োজিত নন বা নিয়োজিত হতে অনিচ্ছুক গৃহিণী। এই জনগোষ্ঠীর মধ্যে অধিকাংশই নারী। কাজের পরিবেশ সৃষ্টি ও বাধা দূর করতে পারলে কর্মে নারীদের অংশগ্রহণ বাড়বে বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদরা।
বিবিএস ১৯৮০ সাল থেকে এই জরিপ পরিচালনা করছে। এ জরিপের মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্য থেকে শ্রমশক্তি, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার সূচকসমূহের অগ্রগতি, ৮ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার অগ্রগতি নির্ণায়ক সূচক এবং জাতীয় শ্রমশক্তির সুষ্ঠু ব্যবহার ও কর্মসংস্থান এবং বেকারত্ব নিরসনে পরিকল্পনা প্রণয়ন সম্ভব হবে। এ জরিপের মাধ্যমে লিঙ্গভিত্তিক কর্মসংস্থান, বেকারত্ব, শ্রম অভিবাসন ব্যয়, খাত এবং পেশাভেদে শ্রমশক্তি, প্রাতিষ্ঠানিক এবং অ-প্রাতিষ্ঠানিক কর্মসংস্থান, কর্মঘণ্টা এবং মজুরিসংক্রান্ত পরিসংখ্যান প্রস্তুত করা হয়। এ জরিপের মাধ্যমে শ্রমবাজারের মৌসুমভিত্তিক তারতম্য সংশ্লিষ্ট তথ্যাদিও পাওয়া যায়।
শ্রমশক্তি জরিপ ২০২৪-এ রোটেটিং প্যানেল স্যাম্পলিং ব্যবহার করা হয়েছে এবং ১ম কোয়ার্টার (জানুয়ারি-মার্চ ২০২৪) এর তথ্য সংগ্রহ কার্যক্রম ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে ত্রৈমাসিক শ্রমশক্তি জরিপ ২০২৪-এর গুরুত্বপূর্ণ সূচকের (লিঙ্গভেদে শ্রমশক্তি, কর্মে নিয়োজিত, সেক্টরভিত্তিক কর্মে নিয়োজিত, বেকারত্বের হার, শ্রমশক্তির বাইরের জনগোষ্ঠী, শ্রমশক্তিতে অংশগ্রহণের হার, যুব শ্রমশক্তি) ফলাফল প্রস্তুত করা হয়েছে। এ ছাড়া এ প্রকল্পের আওতায় ২০২৪-২৫ অর্থবছরে শ্রম চাহিদা জরিপ পরিচালিত হবে।
বিবিএসের জরিপের তথ্য বলছে, ২০২৩ সালের প্রথম প্রান্তিকে ২৫ লাখ ৯০ হাজার বেকার ছিল। সে হিসেবে চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে বেকারের সংখ্যা বাড়েনি। বর্তমানে বেকারের হার ৩ দশমিক ৫১ শতাংশ, যা ২০২৩ সালের গড় বেকারের হারের চেয়ে কিছুটা বেশি। ২০২৩ সালের গড় বেকারের হার ছিল ৩ দশমিক ৩৬ শতাংশ।
এদিকে গত মার্চ মাস শেষে পুরুষ বেকারের সংখ্যা ছিল ১৭ লাখ ৪০ হাজার। ২০২৩ সালের প্রথম প্রান্তিকে (মার্চ-জানুয়ারি) এই সংখ্যা ছিল ১৭ লাখ ১০ হাজার। অন্যদিকে গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ৩০ হাজার নারী বেকার কমেছে। বর্তমানে দেশে নারী বেকারের সংখ্যা ৮ লাখ ৫০ হাজার।
এ বিষয়ে বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন আমাদের সময়কে বলেন, শ্রমশক্তির বাইরে যারা রয়েছেন এর মধ্যে নারীর সংখ্যা বেশি। আবার তাদের মধ্যেও ২৫ থেকে ৩৫ বছর বয়সীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। এর কারণ বিয়ের পর সন্তান জন্মগ্রহণ। বেশিরভাগ নারীর ক্ষেত্রে সন্তান জন্ম দেওয়ার পর তারা সন্তানের লালনপালন করেন। তারা কোনো কাজে অংশ নিতে পারেন না। এর বাইরেও রয়েছে সামাজিক বাধা ও মানসিক সমস্যা। নারীদের কাজের ক্ষেত্রে ভালো পরিবেশ ও বাধাগুলো দূর করতে পারলে শ্রমশক্তির আওতায় তাদের অংশগ্রহণ আরও বাড়বে বলে মনে করেন এই অর্থনীতিবিদ।
এদিকে যুব শ্রমশক্তির (১৫-২৯ বছর বয়সী) সংখ্যা ২ কোটি ৫৯ লাখ ২০ হাজার। এর মধ্যে পুরুষ ১ কোটি ৩০ লাখ ৫০ হাজার ও নারীর সংখ্যা ১ কোটি ২৮ লাখ ৭০ হাজার।
এদিকে মোট কর্মে নিয়োজিত জনশক্তির ৭ কোটি ১১ লাখ ৬০ হাজারের মধ্যে কৃষি খাতে নিয়োজিত আছেন ৩ কোটি ১৮ লাখ ৩০ হাজার, শিল্প খাতে ১ কোটি ২৭ লাখ ৫০ হাজার এবং সেবা খাতে ২ কোটি ৬৫ লাখ ৮০ হাজার। অর্থাৎ কৃষি খাতে ৪৫ শতাংশ, সেবা খাতে ৩৭ শতাংশ এবং শিল্প খাতে ১৮ শতাংশ মানুষ কাজে নিয়োজিত আছেন।
fblsk
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা