অনলাইন ডেস্ক
সোমবার (১৪ মার্চ) সচিবালয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ওটিটি প্ল্যাটফর্মের অংশীজনদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ কথা বলেন। অংশীজনরাও সরকারের এ উদ্যোগকে সাধুবাদ জানান।
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘এই নীতিমালা তৈরির মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে—আমাদের কৃষ্টি, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি এবং মূল্যবোধের সঙ্গে সাংঘর্ষিক কিছু যেন ওটিটি প্ল্যাটফর্মে না যায় এবং আমাদের সমাজ ও নতুন প্রজন্মকে বিপথগামী করতে পারে এমন কিছু যাতে আপলোড না হয়। আরেকটি উদ্দেশ্য হচ্ছে—বিদেশি ওটিটি প্ল্যাটফর্মগুলোর আগ্রাসন থেকে দেশের প্ল্যাটফর্মগুলোর সুরক্ষা। একই সঙ্গে আমাদের সরকার চায়, এ প্ল্যাটফর্ম এবং এর মাধ্যমে আমাদের বিনোদন ও সৃজনশীলতা আরও বিকশিত হোক।’
ওটিটি প্ল্যাটফর্ম কোনো রাজনৈতিক বিষয় নয়, উল্লেখ করে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘কেউ কেউ কেন যে এটিকে রাজনীতিতে টেনে আনেন! আশ্চর্যের বিষয়, মির্জা ফখরুল সাহেব ওটিটি প্ল্যাটফর্মকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং গণমাধ্যমের সঙ্গে গুলিয়ে ফেলেছেন। এত বড় দলের মহাসচিব যিনি মন্ত্রীর দায়িত্বও পালন করেছেন, তিনি এগুলো গুলিয়ে ফেললেন দেখে আমার নিজেরই লজ্জা লেগেছে। তার পরামর্শকদের উচিত ছিল ঠিক পরামর্শ দেওয়া এবং তার নিজেরও জেনে-শুনে কথা বলা প্রয়োজন ছিল বলে মনে করি। কিন্তু, তিনি এটিকে রাজনৈতিক ইস্যু বানানোর চেষ্টা করেছেন। সবকিছুর মধ্যে রাজনীতি নিয়ে আসা কখনো সমীচীন নয়।’
ওটিটি প্ল্যাটফর্মের অংশীজনদের উদ্দেশে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আপনাদের ধন্যবাদ, আমাদের এ উদ্যোগকে আপনারা সমর্থন জানিয়েছেন। আপনাদের জন্যই এই নীতিমালা। অতীতে দেখেছি ওটিটির এমন কিছু জিনিস আমাদের আপামর জনতা ও তরুণ প্রজন্মের কাছে এসেছে, যেগুলো আমাদের মূল্যবোধের ওপর আঘাত হানে এবং অনেকগুলো পর্নোগ্রাফির কাছাকাছিও ছিল, যেগুলো নিয়ে পত্রপত্রিকায় অনেক সমালোচনা হয়েছে। তখন একটি নীতিমালার দাবি উঠেছিল। ইতোমধ্যে দেশে কয়েকটি ওটিটি প্ল্যাটফর্ম কার্যক্রম শুরু করেছে এবং আস্তে আস্তে ভালো করছে। এটি বড় প্ল্যাটফর্ম, প্রতিটি কনটেন্ট দেখে সেন্সরের ব্যবস্থা করা সম্ভব নয়। সেজন্য অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা করে আমরা একটা নীতিমালা তৈরির করছি। খসড়াটি ওয়েবসাইটে দেওয়া হয়েছে, আরও মতামত নেওয়া হচ্ছে। এর পর এটি চূড়ান্ত হবে।’
নাট্যকার সংঘের সভাপতি এস এম হারুন অর রশীদ বলেন, ‘আমি কী লিখছি, সে লেখাটা আমার শিল্প-সংস্কৃতি, আমার ইতিহাস। ঐতিহাসিক উত্তরাধিকার, ঐতিহ্যবোধ এবং দায়িত্ববোধের জায়গাটা সুদৃঢ় করার জন্য নীতিমালার প্রয়োজন।’
ডিরেক্টরস গিল্ডের সভাপতি সালাহউদ্দীন লাভলু বলেন, ‘আমাদের যে ঐতিহ্য, আমাদের গৌরবোজ্জ্বল যে সংস্কৃতি, মূল্যবোধ—এই সবগুলোই আসলে আমাদের নাটকের মাধ্যমে, ওটিটি কনটেন্টের মাধ্যমে তুলে ধরতে চাই। সেজন্য সেখানে একটি জাতীয়ভাবে নীতিমালা অবশ্যই প্রয়োজন আছে।’
টেলিভিশন অ্যান্ড ডিজিটাল প্রডিউসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি সাজ্জাদ হোসেন দোদুল বলেন, ‘ওটিটির জন্য অবশ্যই নীতিমালা চাই। সেটা তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী পূরণ করছেন। কারণ, পেশাগত জায়গায় শৃঙ্খলা খুব দরকার। এটি নিয়ে অন্য কারও কিছু বলার নেই। আমরা এ খাতের পেশাজীবী। আমার পিতা, আমার ভাই, আমার স্ত্রী এবং আমি নিজেও এ পেশায় জড়িত। আমরা কাউকে কিছু বলতে বলিনি। আমাদের কোনো সমস্যা হলে আমরা সুন্দরভাবে প্রতিবাদ করতে জানি।’
ডিরেক্টরস গিল্ডের সাধারণ সম্পাদক এস এম কামরুজ্জামান সাগর বলেন, ‘ওটিটি প্ল্যাটফর্ম নিয়ে রাজনীতি করার কোনো সুযোগ নেই। এটি আধুনিক প্রযুক্তির বিনোদন মাধ্যম। আমি নিজে এবং সংগঠনের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে নীতিমালার খসড়া তৈরির কাজে অংশ নিয়েছি এবং সরকারের সাথে কাজ করে যাচ্ছি। অংশীজনদের নিয়ে খসড়া তৈরির জন্য সরকারকে ধন্যবাদ।’
‘যে চিন্তা থেকেই কেউ বলুক না কেন, নীতিমালার প্রয়োজন নেই, এটি আসলে অবান্তর। অবশ্যই সেটার প্রয়োজনীয়তা আছে,‘ বলেন চলচ্চিত্র নির্মাতা, গীতিকার এবং ডিরেক্টরস গিল্ডের সদস্য এস এ হক অলীক।
ওটিটি প্ল্যাটফর্মকে নীতিমালার আওতায় এনে আরও বিকশিত করার জন্য সরকারের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন টেলিপ্যাবের সদস্য ও চলচ্চিত্র নির্মাতা সরদার সানিয়াত হোসেন।
fblsk
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা