বক্তব্য রাখছেন পাক্ষিক অনন্যা'র সম্পাদক তাসমিমা হোসেন। ছবি : রেহানা আক্তার
আমার সখ-ইচ্ছা-সামর্থ ছিল, দিল মনোয়ারা মনু শক্তি হিসেবে কাজ করেছেন। অনন্যা আজ এ পর্যায়ে আসার পেছনে তার অবদান সবচেয়ে বেশি।
পাক্ষিক অনন্যার সাবেক নির্বাহী সম্পাদক দিল মনোয়ারা মনুর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে অনন্যা আয়ােজিত স্মরণসভায় একথা বলেন সম্পাদক তাসমিমা হোসেন।
রবিবার (২৭ অক্টোবর) জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে এ স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
স্মরণসভায় কবি কাজী রোজী বলেন, দিল মনোয়ারা মনু আমাদের সঙ্গে অনন্যার সেতুবন্ধন হিসেবে কাজ করেছেন।
বক্তব্য রাখছেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সহ-সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম। ছবি : রেহানা আক্তার
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সহ-সভাপতি এবং নিউক্লিয়ার মেডিসিনে বিশেষজ্ঞ ফওজিয়া মোসলেম বলেন, কাজের সূত্রে আমার সঙ্গে দিল মনোয়ারা মনুর পরিচয়। তিনি পূর্বসূরি এবং উত্তরসূরি উভয়কে সমান সম্মান দেখাতেন।
লেখক দিলারা মেসবাহ বলেন, মনু আমাদের মধ্যে একটি শূন্যতা সৃষ্টি করে গেছেন। তিনি আমাদের কতখানি জায়গাজুড়ে ছিলেন, তার চলে যাওয়ার পর টের পাচ্ছি।
ব্রেকিং দ্য সাইলেন্স এর নির্বাহী পরিচালক রোকসানা সুলতানা বলেন, মনু আমার ক্লাসমেট। কিন্তু ওকে আরও ভালো করে জানতে পেরেছি অনন্যাতে একসঙ্গে কাজ করার সুবাদে। ওর মতো বন্ধু পাওয়া আমার জীবনের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি।
আফরোজা হক রীমা বলেন, দিল মনোয়ারা মনু চারপাশের ঘটনা ও পরিস্থিতি নিয়ে চমৎকার কলাম লিখতেন। আমি সেগুলো পড়ে ঋদ্ধ হয়েছি।
নাট্যকর্মী এবং পাক্ষিক অনন্যার সাবেক রিপাের্টার অলোক বসু বলেন, মনু আপার সঙ্গে ২৯ বছরের সম্পর্ক। তার সঙ্গে অনন্যায় কাজ করার সময়টা আমার কর্মজীবনের শ্রেষ্ঠ সময়।
সাংবাদিক আফরোজা পারভীন বলেন, মৃত্যুর তিন দিন আগে মনু আপা আমাকে তার বাসায় ডেকেছিলেন সম্প্রতি প্রয়াত কথাশিল্পী রিজিয়া রহমানের উপর একটি স্মারকগ্রন্থ প্রকাশের বিষয়ে কথা বলতে। এর মধ্যে তিনি নিজেই চলে গেলেন।
লেখক নারসীন নঈম জানান, মেধা, শ্রম, নিষ্ঠা, দায়িত্ববোধ সবকিছু মিলে দিল মনোয়ারা মনুর মানসজগত গঠিত।
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের মহানগর কমিটির জুয়েলা জেবুন নেসা খান বলেন, আমি তার মতো উদার মনের মানুষ খুব কম দেখেছি। কর্মক্ষেত্রে তিনি মায়ের মতো ছায়া হয়ে আমাদের সঙ্গে থেকেছেন।
পাক্ষিক আয়োজিত এই স্মরণসভায় সাংবাদিক, মানবাধিকারকর্মী, কলামিস্ট দিল মনোয়ারা মনুর কর্মময় জীবন সম্পর্কে আলোচনা এবং স্মৃতিচারণায় অংশ নেন লেখক, সাংবাদিক ও বুদ্ধিজীবীসহ অনন্যা পরিবারের সদস্যরা।
সভাপতিত্ব করেন দৈনিক ইত্তেফাক এবং পাক্ষিক অনন্যা পত্রিকার সম্পাদক তাসমিমা হোসেন।
স্মরণসভায় আরো অনুভূতি ব্যক্ত করেন হেনা সুলতানা, নূর কামরুন নাহার, শাহিদা পারভীন শিখা, নাহার ফরিদ খান, শিওলি খন্দকার, মনীষা মজুমদার, এনামুল হক ইনুসহ আরও অনেকে।
উল্লেখ্য, অনন্যার সাবেক নির্বাহী সম্পাদক দিল মনোয়ারা মনু ১৯৫০ সালের ২ সেপ্টেম্বর বাবা আলী আহমেদ খান ও মা জাকেরা আলীর ঘরে ফরিদপুরের ভাঙায় জন্মগ্রহণ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় এমএ পাস করার পর ১৯৭৪ সালে ‘বেগম’ পত্রিকার সহ-সম্পাদক হিসেবে সাংবাদিকতায় যুক্ত হন। ১৯৮৯ সালে তিনি যোগ দেন ‘পাক্ষিক অনন্যা’য়। সাংবাদিকতার পাশাপাশি নিয়মিত কলাম লিখতেন, নারী অধিকার কর্মী হিসেবে কাজ করেছেন। তিনি বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ, নারী সাংবাদিক কেন্দ্রসহ নানা সংগঠনে সক্রিয় ছিলেন। ২০১৫ সালে অনন্যা তাকে বিশেষ সম্মাননা প্রদান করে। দিল মনোয়ারা মনু গত ১৩ অক্টোবর মৃত্যুবরণ করেন।
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা