বিশিষ্ট সাংবাদিক, কলামিস্ট, ‘পাক্ষিক অনন্যা’র সাবেক নির্বাহী সম্পাদক ও সাংবাদিক নেতা দিল মনোয়ারা মনুর মৃত্যুতে তার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এই সপ্তাহে তিনটি স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হবে।
২২ অক্টোবর, মঙ্গলবার সকাল ১০ টায় স্মরণ সভার আয়োজন করেছে বাংলাদেশ নারী সাংবাদিক সমিতি (বানাসাস)। ৫০ পুরানা পল্টন, (লিফট- ৮) এর মিলনায়তনে এস্মরণসভা অনুষ্ঠিত হবে।
বাংলাদেশ নারী সাংবাদিক কেন্দ্র (বিএনএসকে) নিজেদের এই সহ-সভাপতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে স্মরণ সভা করবে বৃহস্পতিবার, ২৪ অক্টোবর। ছায়ানট মিলনায়তনে ২৫ অক্টোবর শুক্রবার সন্ধ্যা ছয়টায় স্মরণসভা করবে দিল মনোয়ারা মনুর স্বজনেরা।
এর আগে গত ১৮ অক্টোবর কচিকাঁচার মেলার মিলনায়তনে সদ্য প্রয়াত গুণী এই সাংবাদিকের কুলখানি অনুষ্ঠিত হয়েছে। এদিন তার মায়ের মৃত্যুদিন উপলক্ষে বার্ষিকী মিলাদ মাহফিলের আয়োজন পূর্ব নির্ধারিত ছিল।
দিল মনোয়ারা মনু ১৯৫০ সালের ২ সেপ্টেম্বর বাবা আলী আহমেদ খান ও মা জাকেরা আলীর ঘরে ফরিদপুরের ভাঙায় জন্মগ্রহণ করেন। ইডেন কলেজ থেকে গ্রাজুয়েশন করেন। স্কুল জীবন থেকেই দিল মনোয়ারা মনুর লেখালেখি শুরু। দৈনিক বাংলার বাণী প্রকাশিত হওয়ার পর থেকে সেখানে নিয়মিত ফ্রিল্যান্সার হিসেবে কাজ করতেন তিনি। লেখালেখির এ সূত্র ধরে ১৯৭৪ সালে ‘বেগম’ পত্রিকার সহ-সম্পাদক হিসেবে তিনি দায়িত্ব গ্রহণ করেন। নারী সাংবাদিকতার পথিকৃৎ নূরজাহান বেগম ও কবি সুফিয়া কামালের ঘনিষ্ঠ সহচর ছিলেন তিনি। ১৯৮৮ সালে নির্বাহী সম্পাদক হিসেবে তিনি যোগ দেন ‘পাক্ষিক অনন্যা’য়। ২৫ বছর সেখানে কর্মরত ছিলেন। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত দেশের অধিকাংশ প্রিন্ট মিডিয়ায় তিনি ফ্রিল্যান্সার হিসেবে লেখালেখি করেছেন।
দিল মনোয়ারা মনু নারী সাংবাদিক কেন্দ্রের সহ-সভাপতি ও বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির গণমাধ্যম বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন। এছাড়া তিনি ব্রেকিং দ্য সাইলেন্স, কেন্দ্রীয় কচিকাঁচার মেলাসহ বেশকিছু সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। নারী আন্দোলনসহ বিভিন্ন প্রতিবাদ-আন্দোলনে তার সরব উপস্থিতি ছিল। শারীরিক অসুস্থতা নিয়েও তিনি নারী ও মানবাধিকার ইস্যুর আন্দোলনে শামিল হতেন।
সাংবাদিকতায় অবদান রাখায় দিল মনোয়ারা মনু বুলবুল ললিতকলা একাডেমি, ফেডারেশন অব ইউমেন, ইনার হুইল ক্লাব, পাক্ষিক অনন্যা, নন্দীনি সাহিত্য সংসদ, কেন্দ্রীয় কচিকাঁচার মেলা প্রভৃতি সংগঠন থেকে বিভিন্ন সময়ে পুরস্কৃত হয়েছেন।
গত ১৩ অক্টোবর দিবাগত রাত ১২ টার দিকে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তাকে ১৪ অক্টোবর সন্ধ্যায় রাজধানীর জুরাইন কবরস্থানে বাবা-মায়ের কবরের পাশে দাফন করা হয়েছে।
অনন্যা সম্পাদক তাসমিমা হোসেন তাকে আজীবন সম্মাননা দিয়ে এক বিরল সম্মান জানান। নিজ প্রতিষ্ঠানে দীর্ঘদিন মেধা, শ্রম ও একনিষ্ঠতার সঙ্গে কাজ করার জন্য কাউকে সম্মানিত করার এমন ঘটনা বাংলাদেশের গণমাধ্যমের ইতিহাসে প্রায় বিরল।
মৃত্যুকালে তিনি স্বামী এসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম অব বাংলাদেশ (এএলআরডি)’র নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা, ছয় ভাইবোন ( তারা মোট ১১ ভাইবোনের মধ্য ২ বোন ও এক ভাই আগেই প্রয়াত), তাদের সন্তান, পেশাজীবনের অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের নেতা প্রয়াত আকতার আহমেদ খান তার ছোট ভাই।
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা