মো. আলী আশরাফ খান
“তেলাকুচা” একপ্রকার উপকারী ভেষজ উদ্ভিদ। তেলাকুচা বাংলাদেশের প্রায় সকল অঞ্চলে বসত বাড়ির আশে পাশে, রাস্তার ধারে, বন-জঙ্গলে জন্মায় এবং বংশ বিস্তার করে। এর বৈজ্ঞানিক নাম Coccinia grandis বা Coccinia Cordifolia Cogn. এটি Cucurbitaceae পরিবারের অন্তর্ভুক্ত এবং ভেষজ নাম: Coccinia.
বাংলাদেশে স্থানীয়ভাবে একে কুচিলা, তেলা, তেলাকচু, তেলাহচি, তেলাচোরা, কেলাকচু, কেলাকুচ, তেলাকুচা বিম্বী ইত্যাদি নামে ডাকা হয়। এর ইংরেজি নাম ‘ivy gourd’, baby watermelon, little gourd বা gentleman’s toes। এটি ক্রান্তীয় অঞ্চলের লতানো প্রকৃতির উদ্ভিদ। এর অন্যান্য বৈজ্ঞানিক নামগুলো হলো Cephalandra indica এবং Coccinia indica. অনেক স্থানে এটি সবজি হিসেবে খাওয়া হয়। গাছটির ভেষজ ব্যবহারের জন্য এর পাতা, লতা, মূল ও ফল ব্যবহৃত হয়।
শিকড় সহ লতা এনে রোপন করলে অতি সহজেই তেলাকুচা গাছ জন্মে। আবার এর বীজ থেকেও চারা তৈরি করা যায়। দুই থেকে আড়াই ফুট দুরত্বে বাণিজ্যিক চাষাবাদ করা যায়। বেলে বা দোঁআশ মাটিতে ভাল চাষ হয়। বৈশাখ-জৈষ্ঠ্য মাসে বৃষ্টি হলে তেলাকুচার বীজ বপন করতে হয়। বীজ তলার মাটি আগে ঝুরঝুরে করে নিতে হয়। বীজ বপনের ১০-১৫ দিনের মধ্যে চারা গজিয়ে থাকে।
এটি গাঢ় সবুজ রঙের নরম পাতা ও কাণ্ডবিশিষ্ট একটি লতাজাতীয় বহুবর্ষজীবী উদ্ভিদ। লতার কাণ্ড থেকে আকশীর সাহায্যে অন্য গাছকে জড়িয়ে উপরে উঠে। ধারেকাছে তেমন কিছু না থাকলে মাটিতেই ছেয়ে যায়।
পঞ্চভূজ আকারের পাতা গজায়, পাতা ও লতার রং সবুজ। এর ফল ও কচি ডগা খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়। ফল দেখতে অনেকটা পটলের ন্যায়। তবে আকারে বেশ ছোট। তেলাকুচায় প্রচুর বিটা-ক্যারোটিন আছে।
সাধারণত চৈত্র- বৈশাখ মাসে তেলাকুচা রোপন করতে হয়। পুরাতন মূল শুকিয়ে যায় না বলে গ্রীষ্মকালে মৌসুমি বৃষ্টি হলে নতুন করে পাতা গজায় এবং কয়েক বছর ধরে পুরানো মূল থেকে গাছ হয়ে থাকে।
ছবি : লেখক।
# লেখক, মহাব্যবস্থাপক (অবসরপ্রাপ্ত), বিসিক।
চলবে …
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা