ঢাকার কাঁচাবাজার অকার্যকর করতে পারে সামাজিক দূরত্ব
অনলাইন ডেস্কঃ
ঢাকার অধিকাংশ কাঁচাবাজারে গাদাগাদি করেই মানুষকে কেনাকাটা করতে দেখা যাচ্ছে যা হতে পারে করোনা ভাইরাসসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রনের বড় বাধা। কাঁচাবাজারে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার কথা বলা হলেও বাস্তবে তা মানা বা নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হচ্ছে না, যা রোগ বিস্তারের ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলছে।
দেশে কোভিড-১৯ রোগের মহামারী ঠেকাতে গত ২৬ মার্চ থেকে অবরুদ্ধ অবস্থার মধ্যে ওষুধের দোকান বাদে শুধু কাঁচাবাজারই খোলা রয়েছে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত।
এই সময়ে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া মানুষকে না বের হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হলেও তা বাস্তবায়নে যেমন হিমশিম খাচ্ছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা, তেমনি নানা নিয়ম করেও কাঁচাবাজারে ভিড় কমানো যাচ্ছে না। অনেক ভাবে সরকার অনলাইন কেনাকাটার ব্যাপারে আগ্রাহী করার চেস্টা করলেও মানুষকে খুব একটা সেইদিকে নির্ভরশীল করা যাচ্ছে না।
একমুখী প্রবেশপথ, দোকান-পাটের সামনে গোলাকার চিহ্ন এঁকে দিয়ে দূরত্ব বজায় রেখে ক্রেতাদের স্থান নির্ধারণ করে দেওয়া হলেও তা মানার প্রবণতা খুব কম দেখা যাচ্ছে। নিয়মের চেয়ে ব্যবস্থাপনা অনেক কঠিন হয়ে যাচ্ছে।
শনি ও রোববার শান্তিনগর বাজার, মালিবাগ রেলগেইট বাজার, সেগুন বাগিচা কাঁচা বাজার, এলিফ্যান্ট রোড কাঁচা বাজারে গিয়ে দেখা গেছে ব্যাপক মানুষের সমাগম।
শান্তিনগর ও সেগুনবাগিচা কাঁচা বাজারে ‘একমুখী পথ’ চালু করা হয়েছে। অর্থাৎ এক পথ দিয়ে ঢুকতে হবে, বের হতে হবে আরেক পথ দিয়ে । শান্তিনগর বাজার ব্যবস্থাপনা কমিটির কর্মকর্তা আফসার আহমেদ বলেন, “আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরামর্শক্রমেই আমরা এই বাজারে ‘একমুখী রাস্তা’ চালু করেছি। ‘প্রবেশ’ ও ‘বাহির’ হওয়ার গেইটে নিরাপত্তাকর্মীও বসানো হয়েছে।“এর মাধ্যমে করোনাভাইরাসের সংক্রামণ প্রতিরোধে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করা যাবে এবং যারা বাজারে আসবেন তারা নিজেরা সুরক্ষা পাবেন। এজন্যই আমাদের এই উদ্যোগ।”
কাঁচাবাজারের লোকসমাগম ঠেকাতে মালিবাগ রেল গেইটের বাজারের বাইরে সড়কের এক পাশেই বসানো হয়েছে মাছ ও সবজির অস্থায়ী দোকান।
বাজার ব্যবস্থাপনা কমিটির কর্মকর্তা আনিসুর রহমান সুরক্ষা পোশাক পড়ে হ্যান্ডমাইক হাতে বলছিলেন, “কেউ বাজারে ভিড় করবেন না। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখুন। বাজারের ভেতরে না ঢুকের রাস্তায় পাশেও তরি-তরকারি-মাছের দোকান বসেছে। এখান থেকে কিনুন। দ্রুত বাজার করে বাসায় চলে যান।”
মালিবাগ এলাকাটি খুবই ঘনবসতিপূর্ণ। এখানে মালিবাগ বাজার ছাড়াও রেলগেইট থেকে শুরু করে রেললাইন জুড়ে কাঁচাবাজার রয়েছে। সকাল সাড়ে ১১টা থেকে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেল মাছ বাজার, মুরগির বাজার, তরকারির বাজারে গাদাগাদি অবস্থা।
অথচ এই মালিবাগের কাছে গুলবাগে কয়েকজন করোনাভাইরাসের রোগী শনাক্ত হওয়ার কয়েকটি বাসা লকডাউন রয়েছে।
স্থানীয় লোকজন বলেন, “আগের মতোই গায়ে গা ঘেঁষে কাঁচাবাজারে কেনা-কাটা করতে হয়। কারণ রেললাইন ঘেঁষা এই অস্থায়ী বাজারের পথও সরু। কিছু করার নেই। মানুষ জন আতঙ্ক নিয়ে বাজার করতে আসছেন।
“এই রকম অবস্থা হলে সামাজিক দূরত্ব আপনি কীভাবে বজায় রাখবেন?
বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে সকাল ৮টা থেকে ১১টা পর্যন্ত সড়কের একপাশে বাজার বসানোর প্রস্তাব করেন তারা। এলিফ্যান্ট রোড়ের কাঁচাবাজারে গিয়েও দেখা গেছে লোকসমাগমের চিত্র। ভিড় কমাতে সেখানে কাঁচা বাজারের একটি অংশ রাস্তার ওপর বসানো হয়েছে। ফলে গাদাগাদি কম ছিল।
বাজার করতে একজন বলেন, “বাচ্চাদের জন্য ভালো মাছ ও গুরুর মাংস কিনতে এসেছি। কিন্তু যেভাবে মানুষজনের ভিড় তাতে ভয়ে ভয়ে আছি। এভাবে বাজার করাটা আসলেই রিস্কি।
“কিন্তু বিকল্পও তো কিছু দেখছি না। কাঁচাবাজার বন্ধ করে দিয়ে অন্য কোনো ব্যবস্থা চিন্তা করা উচিত।”
করোনা পরিসংখ্যান এর লাইভ আপডেট দেখুন
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা