অনলাইন ডেস্ক
স্প্যানিশ লা লিগার মহাগুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ। সাবেক দুই চ্যাম্পিয়নের মহারণ। যে লড়াইকে লিগ মীমাংসার ম্যাচ হিসেবেও ভেবেছিলেন কেউ কেউ। কিন্তু বাস্তবতা যে বড্ড কঠিন। এমনই ম্যাচে ধাক্কা খেল দুই দলই। গোলই উপহার দিতে পারল না ন্যু ক্যাম্পের বার্সেলোনা-অ্যাতলেটিকো মাদ্রিদ হাইভোল্টেজ ম্যাচটা। যাতে পয়েন্ট ভাগাভাগি করে এখন এক ও দুইয়ে অবস্থান করছে দল দুটি।
এই ম্যাচেই বলা হচ্ছিলো নির্ধারিত হবে লা লিগার ভাগ্য। কিন্তু ড্র হয়ে আরও বেশি জমে উঠেছে স্প্যানিশ লিগ। এখনো সমান সুযোগই থাকছে লা লিগার দৌড়ে থাকা চার দলের সামনে। সমীকরণটা অবশ্য সহজ রিয়াল মাদ্রিদের জন্য। বাকি ম্যাচগুলোতে জয় পেলেই তারা জিতবে লা লিগার শিরোপা।
তবে আক্ষরিক অর্থে বড় ক্ষতি হয়েছে বার্সেলোনার। ঘরের মাঠে পয়েন্ট হাতছাড়া হলো তাদের। খুব বেশি ক্ষতি না হলেও একেবারে মন্দ হয়নি অ্যাতলেটিকো মাদ্রিদেরও। বার্সার মাঠে গিয়ে পয়েন্ট পাওয়াটা ইতিবাচকই বটে।
যার ফলে ৩৫ ম্যাচে ৭৭ নিয়ে এখনও শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে মাদ্রিদ জায়ান্টরা। দুই পয়েন্ট কম নিয়ে দুইয়ে উঠে এসেছে বার্সা। এক ম্যাচ কম খেলা রিয়াল ৭৪ পয়েন্ট নিয়ে নেমেছে তিনে। আর সমান ম্যাচে সেভিয়ার পয়েন্ট ৭০।
বার্সেলোনার জন্য ম্যাচটি যেমন গুরুত্ব¡পূর্ণ ছিল, একইভাবে গুরুত্বপূর্ণ ছিল অ্যাটলেতিকোর জন্যও। ম্যাচে যারা জয়ী হবে তারা শিরোপার অনেকটা কাছে চলে যাবে এমন পরিস্থিতিতে খেলতে নেমে উভয় দলই জেতার জন্য চেষ্টা চালায়। প্রথমার্ধে বল দখলের হিসাবে বার্সেলোনা এগিয়ে থাকলেও গোলের সুযোগ সৃষ্টিতে এগিয়েছিল অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ। তবে কোনো দলই প্রাপ্ত সুযোগ কাজে লাগাতে পারেনি। বার্সেলোনার হয়ে প্রথমার্ধে একমাত্র সুযোগটি পেয়েছিলেন লিওনেল মেসি। চারজনকে কাটিয়ে তিনি দারুন একটি শট নিয়েছিলেন কিন্তু সেটি বাঁচিয়ে দেন অ্যাটলেটিকো গোলরক্ষক ইয়ান ব্ল্যাক। মেসির শটে তিনি হাত লাগিয়ে কর্নারের বিনিময় দলকে রক্ষা করেন। অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের হয় সুযোগ পেয়েছিলেন অ্যানহেল করেয়া এবং কারাসকো। কিন্তু তারা বার্সেলোনার গোলরক্ষক মার্ক-আন্দ্রে টার স্টেগেনকে পরাজিত করতে পারেননি। ফলে প্রথমার্ধের খেলা গোলশূন্য ড্র থাকে। দ্বিতীয়ার্ধের খেলায় প্রাধান্য ছিল বার্সেলোনার। সুযোগ সৃষ্টির দিক থেকেও এগিয়েছিল তারা। ৬০ মিনিটের সময় মরিবর গোল মুখে বল পেয়ে ঠিক মত পোস্টে রাখতে পারেননি। এরপর মেসির ফ্রি কিক ঝাঁপিয়ে বাঁচিয়ে দেন ওব্ল্যাক।৭০ মিনিটের সময় রোনাল্ড আরাওহো হেডে বল জালে জড়িয়েছিলেন, কিন্তু তিনি অফসাইড থাকায় গোলটি বাতিল হয়। বার্সেলোনা বেশ কয়েকবার বিপজ্জনকভাবে অ্যাতলেটিকোর রক্ষণসীমায় ঢুকে পড়ায় সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছিল। তাই অ্যাটলেটিকো কোচ দিয়েগো সিমেওনি পরিস্থিতি সামাল দেয়ার জন্য করেয়াকে তুলে কন্ডোগবিয়াকে মাঠে নামান। এর ফলে বার্সেলোনার আধিপত্য কিছুটা হলেও কমে। ৮৪ মিনিটের সময় সম্মিলিত একটি আক্রমণ থেকে বার্সেলোনার চমৎকার একটি সুযোগ নষ্ট করেন উসমান ডেম্বেলে। একেবারে গোলমুখে বল পেয়েও ডেম্বেলে যে হেডটি করেন সেটা চলে যায় ক্রসবারের উপর দিয়ে। এর পরপরই একটি সুযোগ নষ্ট করেন লুইস সুয়ারেজ। কোন গোল না হওয়ায় ম্যাচটি গোলশূন্য ড্র হয়।
তবুও এই ম্যাচের মধ্যমণি ছিলেন লুইস সুয়ারেজ। গত মৌসুমেও যিনি ছিলেন বার্সেলোনার স্ট্রাইকার। আর এই মৌসুমে তিনি অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের। এদিন ‘ঘরে’ ফিরলেও সেটা শত্রুবেশে। এই শত্রুতার মাঝেও মাঠে পুরনো সতীর্থ ও বন্ধুদের পেয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন সুয়ারেজ। যা ছাপিয়ে যায় কাঙ্ক্ষিত জয়-পরাজয়কেও।