অনলাইন ডেস্ক
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্পের ক্ষমতায় থাকার কোনো সাংবিধানিক পথ নেই। তাহলে ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় থাকতে সত্যি কী অভ্যুত্থান ঘটাতে পারবেন? ট্রাম্প ও বেশ কয়েকজন রিপাবলিকান নেতার ক্ষমতালিপ্সা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে দুশ্চিন্তা দেখা দিয়েছে। ‘ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদের প্রশাসনও নির্ঝঞ্ঝাট হবে’- পররাষ্টমন্ত্রী মাইক পম্পেওর এমন মন্তব্যের পর শঙ্কা আরও বেড়ে গেছে। ট্রাম্প বাইডেনের জয় স্বীকার করে না নেয়ায় এমন আশঙ্কা কাজ করছে। তবে সব ধরনের কলাকৌশল ব্যবহার করেও ট্রাম্প ক্ষমতায় থাকতে কোনো অভ্যুত্থান ঘটাতে পারবেন না বলে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের অভিমত।
নির্বাচনে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে বাইডেন সুনিশ্চিত জয় পেলেও বৃহস্পতিবার এক টুইটে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, ‘রিগড ইলেকশন (নির্বাচনে প্রতারণা করা হয়েছে)।’ খুব অল্প ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হওয়ায় ট্রাম্প তা মেনে নিতে পারছেন না। কিন্তু এর আগেও অনেকবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয়েছে। খুব সামান্য ভোটের ব্যবধানে জয়-পরাজয় ঘটেছে। তবে কেউ পরাজয় স্বীকার করেননি অথবা জয়ী প্রার্থীকে অভিনন্দন জানাননি- এমন ঘটনা কখনও ঘটেনি। বিদায়ী কোনো প্রেসিডেন্ট কখনও বলেননি তার বিজয় ছিনিয়ে নেয়া হয়েছে। অথবা কেউ কখনও পরাজয় অস্বীকার করেননি। মার্কিন নির্বাচনে এমন ধরনের সমস্যা আগে কখনোই ঘটেনি। এবারের নির্বাচনের ১ সপ্তাহের বেশি সময় পার হলেও কোনো প্রতারণা বা কারচুপির সামান্যতম প্রমাণও মেলেনি। এ কারণে মার্কিন নির্বাচন নিয়ে আসলে কী ঘটতে যাচ্ছে তা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে নানা জল্পনা-কল্পনার সৃষ্টি হয়েছে। আদালতে ট্রাম্পের পরাজয় হলে কী হতে পারে? ট্রাম্প কী অভ্যুত্থান করবেন? তার মাথায় কী অভ্যুত্থানের ভূত চেপে বসেছে?
নির্বাচন নিয়ে ট্রাম্প তার চূড়ান্ত কর্তৃত্বমূলক আচরণের বহির্প্রকাশ ঘটাচ্ছেন। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ব্যক্তিকেন্দ্রিক গণতন্ত্রের পথে তিনি হাঁটছেন। তার অদ্ভুত আচরণে হোয়াইট হাউসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের রক্তচাপও বেড়ে গেছে। অস্থির ও খেপাটে স্বভাবের ট্রাম্প ইতোমধ্যে বেশ কয়েকজন কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করেছেন। ২৪ ঘণ্টায় প্রতিরক্ষামন্ত্রী মার্ক এসপারসহ কয়েকজন মন্ত্রীকে তিনি বরখাস্ত করেছেন। অপরদিকে, ট্রাম্পের সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় তার প্রশাসনের কর্মকর্তারাও তাকে ছেড়ে যাছেন। নির্বাচনে অনিয়ম ও কারচুপির অনুসন্ধানের নির্দেশনা পাওয়ার পর অ্যাটর্নি জেনারেল বিল বার পদত্যাগ করেছেন। ট্রাম্পের আচরণে ক্ষুব্ধ হয়ে নির্বাচন অপরাধ বিষয়ক বিচার বিভাগের প্রধান রিচাড পিলজারও পদত্যাগ করেছেন।
পরাজয় স্বীকার করে করোনায় মনোযোগ দিতে রিপাবলিকানদের প্রতি আহ্বান : নির্বাচনপরবর্তী অসন্তোষ করোনাভাইরাস মোকাবেলায় সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। এ কারণে, ক্রমবর্ধমান মহামারী এবং রিলিফ ডিল নিয়ে আলোচনায় ফিরে যাওয়ার জন্য রিপাবলিকানদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ডেমোক্র্যাটরা। বৃহস্পতিবার শীর্ষ ডেমোক্র্যাট নেতারা রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে এ আহ্বান জানান।
বৃহস্পতিবার সিনেটের বিরোধীদলীয় নেতা চাক শুমারের সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি বলেন, এ মুহূর্তে বাস্তবতা মানতে অস্বীকার করে রিপাবলিকানরা একটি অযৌক্তিক সার্কাস শুরু করেছেন। বাইডেনের সহযোগীরা বলেছেন, রিপাবলিকানদের উচিত বাইডেনের বিজয় স্বীকার করা এবং এখনি করোনা-ত্রাণ নিয়ে আলোচনায় ফিরে আসা। রিপাবলিকানরা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তারা জনগণের ইচ্ছাকে সম্মান করবেন না। এটি অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। পেলোসি বলেন, ‘ব্যাপারটি এমন যে, ঘর জ্বলছে কিন্তু তারা পানি দিতে অস্বীকার করছেন।’ রিপাবলিকানদের প্রতি তিনি আরও বলেন, ‘সার্কাস বন্ধ করুন এবং আমেরিকান জনগণের জন্য সত্যিকারের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করুন, যেমন তাদের স্বাস্থ্য এবং তাদের অর্থনৈতিক সুরক্ষা।’
‘সাধারণ শত্রু’ কোভিড-১৯-এর বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য একত্রে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে চাক শুমার বলেন, ‘কংগ্রেসে রিপাবলিকানরা ষড়যন্ত্রমূলক তত্ত্ব প্রচার করছে, বাস্তবতাকে অস্বীকার করছে এবং আমাদের গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎকে বিষাক্ত করছে।’
fblsk
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা