করোনায় আক্রান্ত আজকের বিশ্ব। এশিয়া, ইউরোপ আর আফ্রিকার সর্বত্রই আতঙ্ক আর উৎকণ্ঠার মধ্য দিয়ে নিত্যদিন পার করছে প্রতিটি জনপদ।
সারা জীবন মহান স্রষ্টাকে অস্বীকারকারী দাম্ভিক মানুষটিও আজ নীরবে সেই মহান স্রষ্টাকেই বিপদমুক্তির শেষ ভরসা জ্ঞান করে মিনতিভরে মুক্তি প্রার্থনা করছে।
সমগ্র দুনিয়ার চরম উৎকণ্ঠার প্রভাব পড়েছে মুসলিম বিশ্বেও। একে একে থমকে দাঁড়িয়েছে সমাজ, রাষ্ট্র ও ধর্মীয় জীবন। সংক্রমণ ছড়ানো ঠেকাতে জনসমাগম এড়ানোর লক্ষ্যে বন্ধ করা হচ্ছে শিক্ষাঙ্গন, কারখানা, বিপণিবিতান, বিনোদনকেন্দ্রের পাশাপাশি ধর্মীয় উপাসনালয় ও মসজিদগুলো।
সমগ্র দুনিয়ার মুসলমানদের আবেগ উচ্ছ্বাস আর ভালোবাসার কেন্দ্রবিন্দু সৌদি আরবের অবস্থাও একই রকম। সৌদি আরবের সর্বোচ্চ উলামা পরিষদের প্রধান আব্দুল আজিজ ইবন আবদুল্লাহ ইবনে মুহাম্মাদ আলে শাইখ আত-তামিমি বলেন, পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘তোমরা নিজেদের ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিয়ো না।’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ১৯৫)। অন্য আয়াতে এসেছে, ‘তোমরা নিজেরা নিজেদের হত্যা কোরো না, নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের ব্যাপারে পরম দয়ালু।’ (সুরা নিসা, আয়াত : ২৯)
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে মসজিদে নামাজ বন্ধের বিপক্ষে আল বাইয়্যিনাত সম্পাদক
আর হাদিস শরিফে এসেছে, মহানবী (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘তোমরা কুষ্ঠ রোগী থেকে দূরে থাকো যেভাবে তুমি বাঘ থেকে দূরে থাকো।’ (বুখারি হাদিস : ৫৭১৭)
রাসুলুল্লাহ (সা.) আরো বলেছেন, ‘কেউ যেন রোগাক্রান্ত উট সুস্থ উটের সাথে না রাখে।’ (বুখারি হাদিস : ৫৭৭১)
এসব আয়াত ও হাদিসের আলোকে এটাই প্রতীয়মান হয় যে মুসলমানদের জন্য নিজেদের প্রাণের শঙ্কা রয়েছে এমন কাজ থেকে বিরত থাকা ওয়াজিব। তাই করোনার কারণে জুমা ও অন্য ফরজ সালাতের জামাত মসজিদে আদায় স্থগিত করে উচ্চৈঃস্বরে আজান দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
কেননা হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, যখন বান্দা অসুস্থ হয়ে পড়ে কিংবা সফরে থাকে, তখন তার জন্য তা-ই লেখা হয়, যা সে আবাসে সুস্থ অবস্থায় আমল করত।’ (বুখারি, হাদিস নং ২৯৯৬)
অন্য হাদিসে এসেছে, ‘নিজের ক্ষতি করা যাবে না, অন্যের ক্ষতি করা যাবে না।’ (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ২৩৩১)
কোরআন ও হাদিসের এসব বর্ণনার দিকে তাকিয়ে সৌদি আরবে জুমা ও জামাত স্থগিত করে (হারামাইন ব্যতীত) ঘরে নামাজ পড়তে বলা হয়েছে।
অন্যদিকে সতর্কতায় অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে সমগ্র কুয়েতকে। গত ১৪ মার্চ থেকে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে মসজিদে জামাতের সহিত সালাত আদায় ও জুমা। মসজিদে আজান হচ্ছে কিন্তু জামাত হচ্ছে না। আজানের শব্দ পরির্তন করে ঘোষণা করা হচ্ছে : ‘আস সালাতু ফি রিহালিকুম—তোমরা তোমাদের অবস্থানস্থলে সালাত আদায় করো।’
আমিরাতেও যুক্ত হলো আজানের নতুন বাক্য
তবে বিভিন্ন মসজিদে পরিবর্তিত এই শব্দ উচ্চারণ করার সময় কান্নায় ভেঙে পড়তে শোনা যাচ্ছে অনেক মুয়াজ্জিনকে।
মধ্যপ্রাচ্যের আরেক দেশ কাতার। দেশটিতে ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে করোনা সংক্রমণের মাত্রা। কাতার ধর্ম মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে সেখানেও গত ১৭ মার্চ মঙ্গলবার জোহরের নামাজ থেকে সারা দেশের সকল মসজিদ বন্ধ ও জামাতের নামাজ ও জুমার নামাজ স্থগিত করা হয়েছে। মন্ত্রণালয় বলছে দেশটির শরিয়া কমিটির ফতোয়ার ভিত্তিতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে মসজিদে আজান অব্যাহত আছে।
গালফনিউজ জানিয়েছে, ওমানেও দেশটির উলামা পরিষদের ফতোয়া নিয়ে সব মসজিদ বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
এ ছাড়া মালয়েশিয়া, পাকিস্তান ও বাংলাদেশে করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগী পাওয়া যাওয়ায় জামাতে নামাজ আদায়ের ক্ষেত্রে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করতে বলা হয়েছে।
বিশেষভাবে অসুস্থ, বয়োবৃদ্ধ ও সদ্য প্রবাস থেকে আসা মানুষকে আপাতত ঘরে থাকতে ও নামাজ আদায় করতে বলা হয়েছে।
Like & Share our Facebook Page: Facebook
করোনা পরিসংখ্যান এর লাইভ আপডেট দেখুন
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা