ছোঁয়ামনি
ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়ার মর্মান্তিক ট্রেন দুর্ঘটনায় প্রাণ হারানো ছোট্ট ছোঁয়ামনি (৩) এর নিথর মরদেহ নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন মামা মো. জামাল উদ্দিন। এর আগে তার মরদেহর সকল আইনী প্রক্রিয়া শেষে প্রশাসনের পক্ষ থেকে মামার কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এসময় তার মরদেহ দাফনের জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ২৫ হাজার টাকা দেয়া হয়।
বাংলাদেশ ফেসবুক পেজের সদস্য সোহেল রানা ভূঁইয়া লাল সবুজের কথা’কে এতথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, সকালে ছোঁয়ামনি র মরদেহ দুর্ঘটনা স্থলে দেখার পর থেকেই তিনি তার স্বজন খুঁজে পাওয়া এবং মরদেহ হস্তান্তর প্রক্রিয়ায় পুরোপুরি জড়িত ছিলেন।
সোহেল রানা ভুঁইয়া জানান, ছোঁয়ামনির মা-বাবাকে প্রথমে হবিগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। এরপর সেখান থেকে ঢাকায় রেফার করা হয়েছে। ছোঁয়ামনিদের গ্রামের বাড়ি হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচং উপজেলায়।
আরও পড়ুন : আহতদের চিকিৎসায় ১০ হাজার এবং নিহতদের পরিবারকে ১ লাখ টাকা দেবার ঘোষণা রেলমন্ত্রীর
উল্লেখ্য, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা উপজেলার মন্দবাগ নামক স্থানে দুটি ট্রেনে সংঘর্ষে অন্তত ১৫ জন নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবার ভোর ৩ টা ৫৫ মিনিটের দিকে উপজেলার ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথের মন্দবাগ রেলওয়ে স্টেশনের ক্রসিংয়ে আন্তঃনগর উদয়ন এক্সপ্রেস ও তূর্ণা নিশীথা ট্রেনের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।এখন ও পর্যন্ত এ ঘটনায় নিহতের সংখ্যা ১৬ জন বলে জানা গেছে। তবে, এ সংখ্যা বাড়বে বলে আশংকা করা হচ্ছে।আহত হয়েছে অর্ধ শতাধিক।
নিহতরা হলেন−চাঁদপুরের হাজীগঞ্জের পশ্চিম রাজারগাঁওয়ের মুজিবুল রহমান (৫৫), হবিগঞ্জের ভোল্লার ইয়াছিন আরাফাত (১২), চুনারুরঘাটের তিরেরগাঁওয়ের সুজন আহমেদ (২৪), মৌলভীবাজারের জাহেদা খাতুন (৩০), চাঁদপুরের কুলসুম বেগম (৩০), হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ের আল-আমিন (৩০), হবিগঞ্জের আনোয়ারপুরের আলী মোহাম্মদ ইউসুফ (৩২), হবিগঞ্জের বানিচংয়ের আদিবা (২), ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদরের ছোঁয়ামনি (৩), চাঁদপুরের উত্তর বালিয়ার ফারজানা (১৫), চাঁদপুরের হাইমচরের কাকলী (২০), হবিগঞ্জের রিপন মিয়া (২৫), চাঁদপুরের হাইমচরের মরিয়ম (৪), নোয়াখালীর মাইজদির রবি হরিজন (২৩), চাঁদপুর সদরের ফারজানা (১৫), হবিগঞ্জের চুনারুঘাটের পিয়ারা বেগম (৩২)।
আহতদের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। এদের মধ্যে একজন মুন্না (২৫) কে ঢাকা মেডিকেলের জরুরি বিভাগে ভর্তি করা হয়েছে।
লাশ হস্তান্তরের সময় প্রত্যেকের পরিবারকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ২৫ হাজার করে টাকা দিচ্ছেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক শামসুজ্জামান।
ট্রেন দুর্ঘটনায় আহতদের চিকিৎসায় ১০ হাজার টাকা এবং নিহতদের পরিবারকে ১ লাখ টাকা দেবার ঘোষণা দিয়েছেন রেলপথ মন্ত্রী মোঃ নূরুল ইসলাম সুজন।
ট্রেনের সংঘর্ষের ঘটনায় এখন পর্যন্ত পাঁচটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। সকালে পৃথকভাবে এসব তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।রেল সূত্র জানায়, গঠিত পাঁচটি তদন্ত কমিটির মধ্যে বাংলাদেশ রেলওয়ের দু’টি, রেলপথ মন্ত্রণালয়ের একটি, সরকারি রেলপরিদর্শকের একটি ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসনের একটি।
রেল সচিব মোহাম্মদ মোফাজ্জল হোসেন জানান, ঘটনার তদন্তে রেলওয়ের পক্ষ থেকে দুটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। পাশপাশি জেলা প্রশাসন করেছে একটি তদন্ত কমিটি। রেলের পক্ষ থেকে গঠিত দুই কমিটির একটিতে প্রধান যান্ত্রিক প্রকৌশলী (পূর্বাঞ্চল) মিজানুর রহমানকে প্রধান করে চার সদস্যের কমিটি করা হয়েছে।
অপরটিতে চট্টগ্রামের বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা নাসির উদ্দিনকে প্রধান করে চার সদস্যের কমিটি করা হয়েছে।
ফেসবুক পেজ :
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা